লিপ-কিসে হতেপারে ‘কিসিং-ডিজিজ’
ভালোবাসার অন্তরঙ্গ মুহূর্তে যখন ঠোঁটে ঠোঁট ঠেকিয়ে চুম্বন করা হয় জানেন কি অন্তরঙ্গতার সুযোগে আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক অসুখ।এমন গুরুতর অসুখ রয়েছে, যার কোনও চিকিত্সা আজ অবধি নেই।গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাত্র ১০ সেকেন্ডের চুম্বনে শরীরে ঢোকে ৮০ মিলিয়ন অর্থাত্ ৮ কোটি ব্যাক্টেরিয়া। ঘনিষ্ঠ চুম্বনের সময় মুখ থেকে নিঃসৃত লালা থেকেই শরীরে অনুপ্রবেশ ঘটে এইসব ব্যাক্টেরিয়ার।চুম্বনের ফলে ঘটিত কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া জনিত অসুখ হল — মাম্পস, শ্লেষ্মাজনিত ঘা, স্ট্রেপ থ্রোট, ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’, মনোনিউক্লিওসিস, পেরিওডন্টাইটিস,মেনিনজাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা।
১. ঠান্ডা লেগে বা মরশুম পরিবর্তনের সময় মুখের অভ্যন্তরে ঘা হয়ে থাকলে, সঙ্গীকে লিপ কিস না-করাই বাঞ্ছনীয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপরের ঠোঁটে বা উপরের ঠোঁট ঘিরেই এই ঘা হতে দেখা যায়। এমতবস্থায় ঠোঁটে-ঠোঁটে মাখো চুম্বন সঙ্গীর শ্লেষ্মাজনিত ঘা হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।এটি হারপিস ভাইরাসের ফলে হয়ে থাকে।
২.’স্ট্রেপ’ নামে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার কারনে এটি হয়। মূলত বাতাস বাহিত হলেও চুম্বন থেকেও ছড়াতে দেখা যায়। আক্রান্তের হাঁচি থেকেও নিস্তার নেই। স্ট্রেপ থ্রোটের প্রধান লক্ষণ হল গলা ব্যথা, সঙ্গে ১০০.৪° ফারেনহাইটের বেশি জ্বর।
৩. ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ হল একধরনের ভাইরাল সংক্রমণ। এ-ও মূলত মুখের ঘা থেকেই ছড়ায়। ঘনিষ্ঠ চুমু থেকেও সংক্রামিত হওয়ায় প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তবে, বাচ্চাদেরই বেশি আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছে।
৪.লালার মাধ্যমে সংক্রামিত মনোনিউক্লিওসিসকে ‘কিসিং ডিজিজ’ও বলে। যার জন্য দায়ী Epstein-Barr ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত এর কোনও চিকিত্সা নেই।
৫. পেরিওডন্টাইটিস নামক দাঁতের এই অসুখ লালা থেকে ছড়াতে পারে। শুধু যে চুমু থেকেই ছড়ায় তা নয়, একই খাবারের টুকরোয় কামড় বসিয়ে বা দাঁত মাজার ব্রাশ থেকেও ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়।
৬. মেনিনজাইটিস হল মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের আচ্ছাদনকারী পর্দা মেনিনজেসের তীব্র প্রদাহ। মূলত জীবাণুর সংক্রমণের কারণেই এ প্রদাহ। মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকিও অনেক বেশি। মনে রাখবেন, চুম্বন থেকেও ভাইরাল মেনিনজাইটিস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। যদিও ব্যাক্টেরিয়াল মেনিনজাইটিসের থেকে ভাইরালের তীব্রতা কম।
৭. মাম্পস সরাসরি লালাগ্রন্থিতে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। গ্রন্থি ফুলে ওঠে। ফলে, মাম্পস হলে, চুম্বনের ঝুঁকি নয়।
৮. ইনফ্লুয়েঞ্জা সাধারণত বাতাস বাহিত রোগ। তবে, সহজেই ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে লালার মাধ্যমে সঞ্চারিত হতে পারে। হাঁচি থেকেও ছড়ায়।
সুতরাং, চুম্বনেও সাবধান বিপদ সেখানও।