class="post-template-default single single-post postid-20397 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

দিদির মাথায় হাত, গেরুয়া ঝড় পশ্চিমবঙ্গে

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হিসাবে বুথফেরত সমীক্ষায় বিজেপির উত্থানের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল। তবে তৃণমূল সে সমীক্ষাকে উড়িয়ে দিয়েছিল। এবার ভোট গণনার শুরুতেই স্পষ্ট হচ্ছে বিজেপির বিরাট উত্থানের বিষয়টি। সেই সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইও জমে উঠেছে বিজেপির।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ২৩টি আসনে। অন্যদিকে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ১৮টি আসনে। কংগ্রেস এখন পর্যন্ত একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

এখনও পর্যন্ত যা ভোটপ্রাপ্তির হার, তাতে বিজেপির ভোট ৩৯ শতাংশের আশেপাশে। তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির হার অবশ্য বেশি, ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি।

অন্যদিকে তৃণমূল গতবারের থেকে এখনো ১১টি আসনে পিছিয়ে রয়েছে। বিজেপি গতবারের তুলনায় এখন পর্যন্ত ১৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

সবচেয়ে সঙ্কটে রয়েছেন বাম প্রার্থীরা। এ রাজ্যের দুই বিদায়ী বাম সাংসদ মহম্মদ সেলিম (রায়গঞ্জ) এবং বদরুদ্দোজা খান (মুর্শিদাবাদ) এখনও পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকতে পারার ইঙ্গিত দিতে ব্যর্থ। যাদবপুরে যে বাম প্রার্থী লড়াই দিতে পারেন বলে মনে করা হয়েছিল, সেই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন আপাতত।

বেশ কয়েক রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির কড়া টক্করের ছবি উঠে আসছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রায় সব প্রান্ত থেকে। নিজেদের দীর্ঘ দিনের গড় মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় লড়াইয়ে রয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের থেকে ভোট শতাংশে সামান্য এগিয়ে থেকেও বামেরা আসনশূন্য হওয়ার পথে পশ্চিমবঙ্গে।

২০০৯ সালের নির্বাচনে বামেদের বিপর্যস্ত করে তৃণমূল ইঙ্গিত দিয়েছিল, বাংলার ক্ষমতার অলিন্দে পরিবর্তন আসন্ন। তৃণমূলের ভোটপ্রপ্তির হার ছিল ৩১.১৮ শতাংশ। তবে সে বার রাজ্যের ২৮টি আসনে তৃণমূল লড়েছিল। বাকি ১৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তৃণমূলের তৎকালীন জোটসঙ্গী কংগ্রেস এবং কংগ্রেস সে বার পেয়েছিল ১৩.৪৫ শতাংশ ভোট। আর বাংলার তদানীন্তন শাসক দল বামফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোটের হার সে বার ছিল ৪৩.৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, এ বার তৃণমূল যে রকম ভোট পেতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে, তার কাছাকাছিই।

উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার ও উত্তর মালদহে সকাল থেকেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। যে আসনে তৃণমূলের জয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছিলেন অনেকে, সেই জলপাইগুড়িতেও মাঝেমধ্যেই পিছিয়ে পড়ছেন তৃণমূল প্রার্থী। তবে উত্তরের যে আসনে বিজেপির জয় সবচেয়ে সহজ হবে বলে আভাস মিলেছিল, সেই বালুরঘাটে আবার উল্টো প্রবণতা। বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষই সেখানে এগিয়ে রয়েছেন প্রথম দিককার গণনায়। কোচবিহারে তৃণমূলের পরেশ অধিকারী এগিয়ে রয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ব্যবধান একশোর আশেপাশে। আর দক্ষিণ মালদহে চমক দিয়ে বেশ কয়েক বার কংগ্রেসের আবু হাসেম খান চৌধুরীকে পিছনে ফেলেছেন বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।

দক্ষিণবঙ্গে তৃণমূল অপেক্ষাকৃত স্বস্তিতে আছে। জঙ্গিপুরে ক্রমশ ব্যবধান বাড়াচ্ছেন তৃণমূলের প্রার্থী খলিলুর রহমান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আপাতত বিজেপির মাফুজা খাতুন, কংগ্রেসের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ অভিজিত মুখোপাধ্যায় নন। মুর্শিদাবাদ আসনে কংগ্রেসের আবু হেনা এবং তৃণমূলের আবু তাহেরের মধ্যে জোরদার লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলছে। বহরমপুরে অবশ্য সকাল থেকেই এগিয়ে রয়েছেন কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী। ধীরে হলেও তাঁর ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে।

নদিয়া জেলার দুই আসনের মধ্যে একটিতে এগিয়ে বিজেপি, একটিতে তৃণমূল।

বীরভূমের দুই আসনেই তৃণমূল এগিয়ে, কিন্তু ব্যবধান খুব বেশি নয়। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে বিজেপির বাবুল সুপ্রিয় ক্রমশ ব্যবধান বাড়িয়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের মুনমুন সেনের সঙ্গে। বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনেও বিজেপির এস এস অহলুওয়ালিয়া এগিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের মমতাজ সংঘমিতাকে পিছনে ফেলে।

বর্ধমান পূর্ব, শ্রীরামপুর, উলুবেড়িয়া, কাঁথি, তমলুক, ঘাটাল, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুরের মতো আসনগুলোয় তৃণমূল ক্রমাগত পিছনে ফেলছে বিরোধীদের।

মমতার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতায় প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের মালা রায়। কিন্তু পাশের কেন্দ্র তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী ক্ষেত্র ডায়মন্ড হারবারে সকালের দিকে লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। গণনায় বেশ কয়েক বার পিছিয়েও পড়তে দেখা গিয়েছে অভিষেককে। উত্তর কলকাতায় সকাল থেকেই এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় একনাগাড়েই এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির শান্তনু ঠাকুরকে। ব্যারাকপুরে অর্জুন সিংহের সঙ্গে কড়া টক্কর দীনেশ ত্রিবেদীর। বসিরহাট এবং দমদমে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে থাকছেন তৃণমূলের নুসরত জাহান এবং সৌগত রায়।

রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে গেরুয়া ঝড়ের ইঙ্গিত মিলছে। বাঁকুড়ায় পিছিয়ে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এগিয়ে বিজেপির সুভাষ সরকার। বিষ্ণুপুরে এগিয়ে বিজেপির সৌমিত্র খান। পুরুলিয়ায় এগিয়ে বিজেপির জ্যোতির্ময় মাহাত, ঝাড়গ্রামে এগিয়ে বিজেপির কুনার হেমব্রম এবং মেদিনীপুরে এগিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

সূত্র : আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!