ভূত থাকে কতখানে! এমনকি জনশ্রুতির ভূতেরা দল বেঁধে ভুতুড়ে জাহাজ এ চড়ে ঘুরে বেড়ায় সমুদ্রেও। এমন সব সত্যিকারের ভূতুড়ে জাহাজের কথা জানা যাক এবার
ভুতুড়ে জাহাজ ইয়াং টিজার
![young teaser ghost ship](http://matinews.com/wp-content/uploads/2023/09/young-teaser-ghost-ship.jpg)
১৮১৩ সালে ব্রিটেনের সঙ্গে রপ্তানির ওপর নজর রাখতে আমেরিকানরা ইয়াং টিজার নামের একটি জাহাজ নিয়োগ করে। ওই বছরের ২৭ জুন দুটি শক্তিশালী জাহাজ মিলে যখন ইয়াং টিজারকে ধাওয়া করে তখন ৩০ জন যাত্রীসহ জাহাজটি পুড়ে যায়। এর পর থেকে প্রতিবছর ওই তারিখে আগের ঘটনাস্থলে জাহাজটির দেখা পেতে শুরু করে অনেকে। কেউ কাছে গেলেই নাকি হাওয়ায় মিলিয়ে যায় ইয়াং টিজার নামের জাহাজটি।
ফ্লায়িং ডাচম্যান
![flying dutchman ghost ship](http://matinews.com/wp-content/uploads/2023/09/flying-dutchman-ghost-ship.jpg)
হেনরিক ফন ডার ড্যাকেন ছিলেন কিংবদন্তিতুল্য এ জাহাজের ক্যাপ্টেন। ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরে তিনি কেপ অব গুড হোপ ঘুরবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু চালক যেতে নারাজ হলে তাকে মেরে পানিতে ভাসিয়ে দেন হেনরিক। এ জন্য স্বর্গ থেকে তাকে অভিশপ্ত করা হয়। এর পর দীর্ঘদিন নানা কল্পকাহিনিতে ঘুরে বেড়িয়েছে এ জাহাজ। এমনকি এ জাহাজের কথা উঠে এসেছে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি সিনেমা পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ানেও। শোনা যায়, অনেক খ্যাতনামা নাবিকও নাকি ফ্লায়িং ডাচম্যানের ভূত দেখেছেন।
এমভি জোয়িতা
![mv joyita ghost ship](http://matinews.com/wp-content/uploads/2023/09/mv-joyita-ghost-ship.jpg)
বিলাসবহুল মোটরচালিত নৌযান এমভি জোয়িতা ১৯৩১ সালে রোনাল্ড ওয়েস্ট নামের এক চলচ্চিত্র পরিচালকের জন্য তৈরি করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নৌযানটি কাজে লাগানো হয়। ১৯৫৫ সালে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে টোকিলাও দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয় জাহাজটি। দুদিনের মধ্যে পৌঁছানোর কথা থাকলেও জোয়িতার আর খবর পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর নৌযানটিকে অক্ষত পাওয়া যায়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি কোনো যাত্রীর।
এলিজা ব্যাটেল
![eliza battle ghost ship](http://matinews.com/wp-content/uploads/2023/09/eliza-battle-ghost-ship-1024x515.jpg)
১৮৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাতে প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রমোদ অভিযানের জন্য এলিজা ব্যাটেল তৈরি করা হয়। ১৮৫৮ সালে জাহাজটি একটি বড় দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে আগুন লেগে যায় ও জাহাজে থাকা অনেক যাত্রী মারা যান। পরে জাহাজটি সমুদ্রের নিচে ডুবেও যায়। লোকমুখে শোনা যায়, পূর্ণিমার রাতে জাহাজটিকে পানির নিচেই জ্বলতে দেখেছেন অনেকে। আবার আগুন জ্বলতে থাকা জাহাজটি থেকে নাকি গানের আওয়াজ পাওয়া গেছে।
অকটাভিয়াস
![octavius ghost ship](http://matinews.com/wp-content/uploads/2023/09/octavius-ghost-ship.jpg)
১৭৬১ সালে লন্ডন থেকে এশিয়ায় যাত্রা শুরু করেছিল অক্টাভিয়াস নামের ভুতুড়ে জাহাজ । পরের বছর ফেরার পথে অভিযানের লোভ সামলাতে পারেননি ক্যাপ্টেন। বেছে নেন নর্থওয়েস্ট প্যাসেজ। কানাডার উত্তরের যে অংশে আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর সংযুক্ত হয়েছে। আর এ সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাঁড়ায় জাহাজের সবার জন্য। ১৭৭৫ সালে গ্রিনল্যান্ডের কাছে একদল জেলে খুঁজে পান ভুতুড়ে জাহাজ টিকে। তারা জাহাজটিতে উঠে দেখেন ভেতরে সবাই মৃত। তবে মরদেহগুলো ছিল তাজা ও বরফের মূর্তির মতো। শীত পড়তে পড়তে এমনই দশা হয় যে, ক্যাপ্টেন যে অবস্থায় কলম হাতে চেয়ারে বসেছিলেন সেই অবস্থাতেই জমে বরফ হয়ে যান। ক্যাপ্টেনের পাশে ছিল তার স্ত্রী ও চাদরে মোড়া সন্তানের নিথর দেহ। এমনকি ওই মরদেহগুলো ১৩ বছর ওই অবস্থাতেই ছিল। তবে ক্যাপ্টেনের লগবুকে সর্বশেষ যে অবস্থানের কথা লেখা ছিল, সেখান থেকে জাহাজটি সরে এসেছিল আড়াইশ মাইল। জেলেরা ওই জাহাজটিকে অভিশপ্ত মনে করে দ্রুত চলে যায়। পরে আর জাহাজটির সন্ধান মেলেনি।