ভরা বর্ষা মানেই জল-কাদার বিড়ম্বনার সঙ্গে কিছু অসুখ-বিসুখের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়া। তার মধ্যে অন্যতম কনজাঙ্কটিভাইটিস। চোখের কনজাঙ্কটিভা আক্রান্ত হলেই এই অসুখ হয়। সাধারণত, ভাইরাস, ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাসের আক্রমণে চোখের এই সংক্রমণ হয়।
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ চোখ লাল হওয়া। কিন্তু এর বাইরেও এর বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায় । কনজাঙ্কটিভাইটিস নিয়ে ঠিক কী কী সতর্কতা অবলম্বন করলে এই অসুখেও সমস্যায় পড়বেন না, জেনে নিন। অবহেলা না করে প্রথম থেকে সাবধান হয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে কিন্তু বর্ষার এই রোগ থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে।
কেন হয় এই রোগ?
চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিমাদ্রি দত্ত-র কথায়, এই অসুখ কোনও ভাবেই সারাসরি ছোঁয়া ছাড়া হয় না। বর্ষাকালে বাতাসে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস। তার মধ্যে শক্তিশালী অ্যাডেনো ভাইরাস অন্যতম। তার প্রভাবেই কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়। অ্যাডেনো জাতীয় ভাইরাসের আক্রমণে কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়৷ যার ফলে দেখার ক্ষমতা কমে যায়। এমন সময় চোখে আলো পড়লেও সমস্যা হয়।
কী কী সতর্কতা প্রয়োজন
আক্রান্ত ও সুস্থ দুই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা সতর্কতা প্রয়োজন। সুস্থ মানুষকে নজর রাখতে হবে যাতে এই অসুখে আক্রান্ত না হন, আর আক্রান্তকে আরোগ্য লাভের পাশাপাশি তার থেকে এই অসুখ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে দিকেও নজর দিতে হবে।
- দুই ধরনের মানুষকেই হাত সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷ অপরিষ্কার হাত চোখে দেওয়া যাবে না৷ চোখ চুলকানো যাবেই না৷
- যদি খুব অসুবিধা হয়, রুমাল দিয়ে চোখ মোচার সময় লক্ষ রাখতে হবে, সে রুমাল যেন পরিষ্কার হয়৷ দরকারে একাধিক রুমাল ব্যবহার করা যেতে পারে।
- বারবার সাবান বা জেল দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
- আক্রান্ত মানুষের ব্যবহৃত তোয়ালে, বিছানা, বালিশ আলাদা করে দিতে হবে।
- আক্রান্ত হলে না সেরে ওঠা অবধি কম্পিউটার, টেলিভিশন ও মোবাইল স্ক্রিন থেকে সরে থাকতে হবে।
এর চিকিৎসা
আক্রান্ত হলে বাজারচলতি ড্রপ না লাগিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়ম মেনে ড্রপ দিলে দিন পাঁচ-সাতেই সুস্থ হওয়া যায়। চোখে কালো চশমা পরে থাকলে বাইরের আলো ও বীজাণু দুই-ই আটকাবে। বার বার চোখে হাত দেওয়ার প্রবণতা কমবে।
মিথ
কারও কনজাঙ্কটিভাইটিস হলে তার দিকে তাকালেই আক্রান্ত হবেন, এমন ভুল ধারণা থেকে সরুন। তিনি চোখে হাত দিয়ে তার পর আপনারই ব্যবহৃত কোনও জিনিসে হাত দিলে তা থেকে ছড়ায় এই অসুখ। কাজেই তাকানোর ভয় বর্জন করুন।