প্রকৃত ভ্যাটের ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায় না দেশের বেশিরভাগ দোকানির কাছ থেকে। গ্রামের দোকানির কথা তো বাদই রাখা যায়, শহরের বড় দোকানগুলোও দেদার ফাঁকি দিচ্ছে ভ্যাট। এমন জেনারেল স্টোরও আছে যাদের দিনে বেচাকেনা লাখ টাকার বেশি হলেও দেখা যাচ্ছে ভ্যাট নিবন্ধনই নেই। এ অবস্থায় কয়েক লাখ দোকানিকে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস তথা ইফএফডি বিতরণের পরিকল্পনা নিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। কিন্তু দোকানের সংখ্যা যেখানে ৬০ লাখেরও বেশি, সেখানে এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে মাত্র চার হাজার ইএফডি। অর্থবছর পার হলে এ যন্ত্র পেতে পারে বড়জোর আরও ছয় হাজার ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মনে করেন, ‘দোকানিরা ভ্যাট নিবন্ধন নিতে চায়। হিসাব-নিকাশ রাখার জন্য ইএফডি দেওয়া হলে সবাই ভ্যাট দেবো। তখন ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না।’
ব্যবসায়ীরা এনবিআর’র নির্দেশনা মানেননি
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ক্রেতা ভ্যাট দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সরকার পাচ্ছে না। দোকান মালিকদের শুধু এক বছরের ভ্যাটের টাকা দিয়েই প্রত্যেকের জন্য ইএফডি বা ইসিআর মেশিন কেনা সম্ভব। আর একবার যদি দেশের সব দোকান অটোমেশনে আসে তবে বাজেট বাস্তবায়ন করা বেশ সহজ হবে।’
দেশের সব দোকানে ইএফডি বসাতে কত দিন লাগবে তা জানে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, ‘এ পর্যন্ত চার হাজার ইএফডি বসানো সম্ভব হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব দোকানে বসানো হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও ছয় হাজার ইএফডি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। সব দোকানে বসাতে কতদিন লাগবে তা বলা সম্ভব নয়।’
আইন অনুযায়ী, বড়, মাঝারি ও ছোট সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই ইসিআর মেশিন থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এ যন্ত্রের বালাই নেই অধিকাংশ জেনারেল স্টোরে। এতে জানা যাচ্ছে না দোকানগুলোতে প্রতিদিন কত টাকার লেনদেন হচ্ছে।
ড. আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের নিজখরচে ইসিআর স্থাপন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানেনি। তাই এনবিআর থেকেই ইএফডি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভ্যাট আইনের আওতায়ই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইএফডি দেওয়া হচ্ছে। আইনের কারণেই তারা মেশিন রাখতে বাধ্য।’