ঘি খাবেন নাকি মাখন? কোনটা খাব, কোনটা খাব না, কোনটাই বা বেশি উপকারী? এ নিয়ে সংশয় নতুন নয়। এমনিতেই আধুনিক জীবনযাত্রা, কর্মব্যস্ততা ইত্যাদি আমাদের খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব ফেলে। সকালে পাউরুটির সঙ্গে মাখন কিংবা গরম ভাতে ঘি— আমাদের রোজনামচায় এই দুই খাবারই গুরুত্বপূর্ণ।
মেদবৃদ্ধির কারণে অনেকেই এড়িয়ে চলতে চান ঘি-মাখনযুক্ত খাবার। কেউ বা আবার বুঝে উঠতে পারেন না কোনটাকে বেছে নেওয়া উচিত, কোনটায় বেশি ফ্যাট? মাখন নাকি ঘি— এই তরজায় পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের ভোট কিন্তু ঘি-এর দিকেই। কেন জানেন?
ব্যাখ্যা দিলেন পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী। ‘‘নানা রকম কম ফ্যাটযুক্ত মাখন বাজারজাত হলেও সব সময়ই মাখনের চেয়ে ভাল ঘি।’’ কিন্তু কেন? অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিলেন সুমেধা। প্রতি ১০০ গ্রাম ঘিয়ে ৯০০ ক্যালোরি শক্তি থাকে। সেখানে প্রতি ১০০ গ্রাম মাখনে রয়েছে ৭১৭ ক্যালোরি শক্তি।
কিন্তু ঘি ও মাখন, এই দুই খাবারেই তো ফ্যাট আছে, তা হলে? পুষ্টিবিদদের মতে, কেবল ফ্যাট থাকলেই সে খাবার খারাপ বা ক্ষতিকর এটা ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। ঘিয়ে যে ফ্যাট রয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই উপকারী ফ্যাট। শারীরবৃত্তীয় নানা কাজে এ সব উপকারী ফ্যাটের প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া ঘি ত্বকের পক্ষেও ভাল। ঘিয়ের দানা ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ই’ও ‘কে’ সরবরাহ করে। ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল।
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, ‘‘আজকাল বেশির ভাগ মাখনই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি। তাতে দুধের মধ্যে থাকা ফ্যাটের নির্যাস মেশে জলের সঙ্গে। তার সঙ্গে আওবার যুক্ত হয় নুন। এই অতিরিক্ত নুন যোগ হওয়া প্রসেসড মাখন তুলনায় ঘিয়ের চেয়ে উপকারী নয়।’’ শুধু তাই-ই নয়, বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘিয়ে যেখান ৬০ শতাংশ দ্রবণীয় ফ্যাট রয়েছে, সে খানে মাখনে এর পরিমাণ মাত্র ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ শরীরে দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া ফ্যাটের পরিমাণ মাখনে কম। তাই চর্বি জমার ক্ষেত্রে মাখনের ভূমিকাই বেশি।