Tuesday, April 30
Shadow

সিনেমায় জীবনটা ব্যয় করেছি, অথচ আজ আমাকে দেখার মানুষ নেই’

সিনেমায় জীবনটা ব্যয় করেছি, অথচ আজ আমাকে দেখার মানুষ নেই’

প্রায় ১ হাজার সিনেমায় অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রানী সরকার। জীবন সায়াহ্নে এসে প্রবীণ এই অভিনেত্রী জানালেন তার জীবনে আর্থিক অসচ্ছলতার কথা।

অভিনেত্রী রানী সরকার বলেন, চারদিন ধরে ঘরে চাউল ছাড়া খাবার নেই। লবণ-পানি দিয়ে চটকিয়ে ভাত খেতে আর ভালো লাগেনা। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো মারা যাবো। না খেয়ে মারা যাচ্ছি, আমাকে বাঁচান।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বনভোজনে এসেছেন রানী সরকার। সেখানে এসে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ২০ লাখ টাকা দেন। সেখান থেকে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা পাই।

মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটির ছয় নম্বর রোডের একটি ভাড়া বাসায় থাকি। প্রতিমাসে বাসা ভাড়া দিতে হয় ১৩ হাজার টাকা। বাকি ৭ হাজার টাকা দিয়ে ছয় জনের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। এখন বাসায় চাউল ছাড়া কিছু নেই।

দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে ছিলেন রানী সরকার

তিনি বলেন, ম্যাডাম শেখ হাসিনা যদি আমাকে সাহায্য না করতেন এতদিন কোন সাগরে হারিয়ে যেতাম তার ঠিক নেই। আল্লাহর ইচ্ছে আর প্রধানমন্ত্রীর ওছিলায় আমি আজ বেঁচে আছি।

রানী সরকার বলেন, এর আগে আমি মানুষের দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা করেছি। সেই খবর প্রধানমন্ত্রী পেয়ে আমাকে সাহায্য করেছিলেন। ম্যাডাম শেখ হাসিনা বোধহয় জানেন না আমার ঘর ভাড়া দিতেই ১৩ হাজার টাকা চলে যায়। ছয় জনের সংসারে বাকি ৭ হাজার টাকায় কীভাবে চলে?

আমার ছোটভাই আবু হানিফ ভীষণ অসুস্থ। তার দুই পা ফুলে গেছে। হাঁটতে পারেনা। বিছানায় পড়ে থাকে। তার চিকিৎসার খরচও চালাতে হয়। এভাবে আমি আর পারছিনা। শেষ যে ক’টা দিন বেঁচে থাকি, আমি দুমুঠো ভালো খেয়েপরে বাঁচতে চাই। আর কিছু চাইনা।

অশ্রুসিক্ত নয়নে রানী সরকার বলেন, মাসের ২০ থেকে ২৫ দিন পেয়াজ, মরিচ দিয়ে ভাত খেতে হয়। গলা দিয়ে খাবার নামে না। তিনি বলেন, আমি যেসময় সিনেমায় কাজ করতাম তখন কি টাকার মূল্য ছিল? সিনেমায় কাজ করে একটাকা করে পেতাম। ১৯৫৮ সালে প্রথম উর্দু ছবিতে কাজ করি। সেসময় থেকে প্রায় ১০০০ সিনেমায় কাজ করেছি।

রানী সরকার অভিনীত ‘গ্রাস’ নামের একটি ছবির দৃশ্য

কান্নায় ভেঙে পড়ে রানী সরকার বলেন, সিনেমায় জন্য জীবনটা ব্যয় করেছি। বিয়েও করিনি। আজ আমার দেখার মানুষ নেই। আমি মরার পর আমার পরিবার কে দেখবে জানিনা, তবে মরার আগে ওদের ঠিকমত চালাতে চাই, তাও পারছিনা।

রানী সরকারের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামে। সেখানে ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু নেই। সেটা দেখাশোনা করেন তার ভাতিজা। রানী সরকারের তিন ভাইবোন। বড়ভাই মারা গেছেন। রানী সরকার বলেন, মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাই। শীত চলে গেলে আবার যাবো।

সূত্র : চ্যানেল আই

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!