‘রবীন্দ্রনাথ তার মেয়ের জামাই ও বন্ধুর ছেলে নিজের খরচে আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন কৃষি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য। নিজেও ছিলেন কৃষি বলতে অজ্ঞান। জাপানি যুবরাজ থেকে শুরু করে থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল পর্যন্ত কৃষির জন্য নিবেদিত ছিলেন। আমাদের দেশে একশ বছর আগেও কৃষি নিয়ে একটা মাতামাতি ছিল। এখন সেটা নেই। কৃষির উন্নয়ন অনেক। তবে এটাকে আমাদের ভাবমূর্তির পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। কৃষি নিয়েও তাই একটা গণজাগরণ দরকার।’ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কৃষিভিত্তিক সংস্থাগুলোর যোগাযোগ নিয়ে কৃষি তথ্য সার্ভিসের আয়োজিত কর্মশালার মূল প্রবন্ধে এ কথা বলেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম রেজা। ৭ জুন সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের কনফারেন্স কে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) সৈয়দ আহম্মদ। অনুষ্ঠানে কৃষিভিত্তিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের দূরত্ব ও যোগাযোগ ঘাটতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন সাংবাদিকরা। এর পরিপ্রেেিত সৈয়দ আহম্মদ কৃষি তথ্য সার্ভিসকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে নিয়মিত কর্মশালা আয়োজনের পরামর্শ দেন। সাংবাদিকদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষির অবস্থা পরিদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়ার পাইলট প্রকল্প শুরুর পরামর্শ দেন তিনি। এ ছাড়া গণমাধ্যমে আলাদা কৃষি বিট ও গণযোগাযোগ বিষয়ক পড়াশোনায় কৃষি-সাংবাদিকতার আলাদা কোর্স চালুর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধে ড. শামীম রেজা আরো বলেন, ‘কৃষিতেও বিনোদন আছে, রাজনীতি আছে। রাজনীতিতে যেমন মাঠ পর্যায়ে নন-মিডিয়া ক্যাম্পেইন বেশি কাজ করে, তেমনি কৃষিতে প্রাথমিক তথ্য প্রচারে মিডিয়া কাজ করলেও সেটাকে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে গণমাধ্যমের বাইরে গিয়ে কিছু করতে হবে।’ কৃষিকে বিনোদনের মতো আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করার পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষির বিভিন্ন পরিভাষা নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জানার পরিধি বাড়াতে কৃষিবিদদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের গণযোগাযোগ বিষয়ক উপপরিচালক মো. রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন। আরো উপস্থিত ছিলেন পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মনজুরুল আলম, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।