দূষণ ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পানি শোধন খাতকে আরও টেকসই ও সবুজমুখী করার লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার শুরু করেছে চীন।
আনহুই প্রদেশের হফেই শহরে অবস্থিত সিয়াওছাংফাং অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বর্জ্য পানি শোধনাগারে ইতোমধ্যেই এআই-ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা চালু হয়েছে। এই ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত পানির মান পর্যবেক্ষণ করে এবং রিয়েল-টাইমে শোধন প্রক্রিয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ কমে গেছে, বেড়েছে কার্যকারিতা ও স্থিতিশীলতা।
প্রযুক্তিটি পানির প্রবাহ, অ্যামোনিয়া নাইট্রোজেন ঘনত্ব ও রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা আগেভাগেই নির্ভুলভাবে পূর্বাভাস দিতে পারে। দিনে গড়ে ৪ লাখ টন বর্জ্য পানি শোধনের সক্ষমতা রয়েছে এর। এআই-এর নির্ভুল পূর্বাভাসে এসব পরিবর্তন মোকাবিলা এখন অনেক সহজ হয়েছে। শুরুতে পূর্বাভাসের সঠিকতা ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ, তবে ধারাবাহিক ডেটা প্রশিক্ষণ ও অ্যালগরিদম উন্নয়নের ফলে এখন সেটি ৯৬ থেকে ৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
শাংহাই শহরের ফেংসিয়ান জেলার শোধনাগারও এআই-ভিত্তিক রাসায়নিক ডোজিং সিস্টেম ব্যবহার করছে। এতে রিয়েল-টাইম পানির মান অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে, কমেছে অপচয়, বেড়েছে শোধিত পানির মান।
অন্যদিকে, ইনার মঙ্গোলিয়ার অরদোস শহরে গত অক্টোবরে চালু হয়েছে দেশের প্রথম সৌরশক্তি-চালিত ও শূন্য বর্জ্য নির্গমণভিত্তিক পানি শোধনাগার। প্রতিদিন ১ লাখ টন বর্জ্য পানি শোধনক্ষম এই প্লান্ট পুনঃব্যবহার করছে প্রায় ৯৫ শতাংশ পানি।
এটি প্রতিবছর ৬ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা ১,৯৮৬ টন মানক কয়লা সাশ্রয় এবং ৫,৯৮৩ টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের সমান। শোধনের পর অবশিষ্ট লবণাক্ত পানি থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও সোডিয়াম সালফেটের মতো শিল্প লবণ উৎপাদন করে বিক্রিও করা হচ্ছে, যা পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক লাভও বয়ে আনছে।
সফল অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অরদোসে শিগগিরই দ্বিতীয় শোধনাগার নির্মিত হচ্ছে, যা স্থানীয় হাই-টেক শিল্পাঞ্চলের পানি সরবরাহ ও বর্জ্য পানি শোধনের চাহিদা মেটাবে। এটি এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: সিএমজি বাংলা



















