২৫ আগস্ট পালিত হলো চীনের নবম জাতীয় প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ দিবস। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রযুক্তির বিপ্লব যেমন মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে পাল্টে দিয়েছে, তেমনি প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

চীন প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো সিএমজি বসন্ত উৎসব গালা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী দর্শকদের জন্য সহজলভ্য সম্প্রচার চালু করে, যাতে সবাই সাংস্কৃতিক উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে। শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য এআর ভার্চুয়াল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, আর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য অডিও ক্রিয়েশন, বড় আকারের ব্রেইল ও ট্যাকটাইল গ্রাফিক্স ডিসপ্লে প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়।
চীনে প্রতিবন্ধী পুনর্বাসনে ইতোমধ্যে ব্যবহার হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যেমন বায়োনিক হাত, ছয় পা-ওয়ালা গাইড রোবট এবং এআই-সহায়ক চলাচলযন্ত্র।
মে মাসে অনুষ্ঠিত ৩৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী সহায়তা দিবসে চীনা প্রতিবন্ধী ফেডারেশন নানা উদ্ভাবনী প্রযুক্তির কথা তুলে ধরে, যা ইতোমধ্যেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে এআই-চালিত এক্সোস্কেলেটন রোবট, যা বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উদ্ভাবন করেছেন। রোবটগুলো ব্যবহারকারীর নড়াচড়ার ইচ্ছা শনাক্ত করে হাঁটার ভঙ্গি তাৎক্ষণিকভাবে ঠিক করে দেয়, ফলে হাঁটা সহজ হয়। ইতোমধ্যেই শত শত হাসপাতাল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
ছাংপিং ল্যাবরেটরির একটি দল স্বতন্ত্রভাবে তৈরি করেছে ‘ব্রেইন সার্কিট পেসমেকার’, যা রিয়েল-টাইম ভিজ্যুয়াল ন্যাভিগেশন ও ৩ডি ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে কাজ করে। এটি অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, পারকিনসনস ডিজিজ, স্ট্রোক-জনিত পক্ষাঘাত এবং বাক প্রতিবন্ধকতার মতো অবস্থার উন্নতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে।
চীনের প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ গঠনে গৃহীত আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে দ্রুত এগোচ্ছে অ্যাক্সেসিবিলিটি উদ্যোগ। তিন হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপে যুক্ত হয়েছে ভয়েস রিকগনিশন ও টেক্সট কনভার্শনের মতো ফিচার। টিভি প্রোগ্রামে এখন নিয়মিত সাবটাইটেল ও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ দেখা যায়।
৬৯টি শহরে অ্যাক্সেসিবল ন্যাভিগেশন সেবা চালু হয়েছে, বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য জরুরি কলিং প্ল্যাটফর্ম চালু হয়েছে এবং স্মার্ট পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমও কার্যকর হচ্ছে।
চীনা প্রতিবন্ধী ফেডারেশনের এক কর্মকর্তা গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ১৫তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২৬-২০৩০) সময়ে প্রতিবন্ধীদের সহায়ক প্রযুক্তিতে আরও উদ্ভাবন প্রয়োগ করা হবে। এআই-সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে, এবং ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেসের মতো নতুন শিল্পখাতও এগিয়ে নেওয়া হবে।
সূত্র: সিএমজি




















