শেনচেনে নতুন জ্বালানির গাড়ি চালাতে উৎসাহ দিচ্ছে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুত - Mati News
Friday, December 5

শেনচেনে নতুন জ্বালানির গাড়ি চালাতে উৎসাহ দিচ্ছে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুত

চীনের দক্ষিণাঞ্চলের শেনচেনের নতুন উদ্যোগ ‘সবুজ গাড়ি, সবুজ বিদ্যুৎ’। নতুন শক্তির গাড়ি বা এনইভি মালিকরা যেন নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ দিয়ে গাড়ি চার্জ করে, তাতেই উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এ উদ্যোগ।

এই উদ্যোগের আওতায় শহরের ১১টি সবুজ বিদ্যুৎ চার্জিং স্টেশনে এনইভি মালিকরা তাদের গাড়ি চার্জ করলে প্রতি ১,০০০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা চার্জের জন্য জাতীয় জ্বালানি প্রশাসনের দেওয়া সবুজ সার্টিফিকেট পাবেন।

শুক্রবার শেনচেনের লিয়ানহুয়াশান সুপারচার্জিং স্টেশনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত এনইভি মালিকরা ‘সবুজ গাড়ি, সবুজ বিদ্যুৎ’ ব্যাজ এবং ৫০ ইয়ুয়ানের চার্জিং কার্ড (প্রায় ৭ মার্কিন ডলার) হাতে পেয়েছেন, যা তাদের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ড্রাইভিং-এর প্রতি প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি।

সবুজ বিদ্যুৎ বলতে বোঝানো হচ্ছে বাতাস, সোলার ও বায়োমাসের মতো নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ। সবুজ সার্টিফিকেট হলো জাতীয় জ্বালানি প্রশাসনের দেওয়া একটি ট্রেডিং সার্টিফিকেট।

চীন ২০১৭ সালে সবুজ সার্টিফিকেট সিস্টেম চালু করে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জ্বালানি প্রশাসন প্রথম ব্যাচের সবুজ সনদ জারি করে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রশাসন ১৩৭ কোটি সবুজ সার্টিফিকেট জারি করেছে, আর ৩ কোটি ৪৮ লাখ সার্টিফিকেট চীনের মধ্যে লেনদেন হয়েছে।

শেনচেনের ১১টি চার্জিং স্টেশন বর্তমানে ১০০ শতাংশ সবুজ বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। শেনচেন পাওয়ার সাপ্লাই ব্যুরোর এক্সিকিউটিভ ছেং খুন বলেন, ‘এটি মালিকদের সবুজ ও কম কার্বন নিঃসরণের প্রতি সমর্থন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে তাদের অবদানের প্রমাণ।’

সর্বশেষ, চীনের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশন, জ্বালানি প্রশাসন এবং তিনটি অন্যান্য বিভাগ মার্চে সবুজ সার্টিফিকেট বাজারের উচ্চমানের উন্নয়নের জন্য নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। এতে নতুন শক্তির গাড়ি এবং সবুজ চার্জিং পাইলের ব্যবহার বাড়ানোর গুরুত্ব জোর দিয়ে বলা হয়েছে।

শেনচেন ছাড়াও চীনের অন্যান্য শহরগুলোও নতুন শক্তির গাড়ি সবুজ বিদ্যুৎ দিয়ে চালানোর ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক ভূমিকা পালন করছে। উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের চিংচিয়াং সিটির একটি চার্জিং স্টেশনের স্ক্রিনে দেখা যায়, ‘চার্জ করা বিদ্যুৎ ১০০ শতাংশ সবুজ’, যা জনসচেতনতা বাড়ায়।

এনইভি মালিক ওয়াং সিয়াওতোং বলেন, ‘আগে আমি শুধু গাড়ি কত দ্রুত চার্জ হয় তা দেখতাম, এখন আমার পরিবেশবান্ধব অবদানটাও দেখতে পারি।’ তিনি তার মোবাইল ফোনে সবুজ বিদ্যুৎ ট্রেসেবিলিটি সার্টিফিকেট দেখিয়ে যোগ করেন, ‘দেখুন! আমার গাড়ি যে বিদ্যুৎ দিয়ে চলছে তা ইয়ানচেং-এর উপকূলীয় বায়ুকল থেকে এসেছে।’

হাইওয়েতে সবুজ বিদ্যুৎ ব্যবহার কেবল পরিবেশের জন্য উপকার নয়, এটি স্থানীয় ভোক্তাদের মধ্যে নতুন শক্তির ব্যবহারও বাড়ায়। চিয়াংসু ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির এক্সিকিউটিভ জানান, ২০০টিরও বেশি হাইওয়ে সার্ভিস এরিয়ার চার্জিং স্টেশন ১০০ শতাংশ সবুজ বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।

২০৩০ সালের আগে কার্বন নির্গমন শীর্ষে পৌঁছানো এবং ২০৬০ সালের আগে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের অঙ্গীকার করেছে চীন। গত মে’র শেষের দিকে চীনে ইনস্টলড নবায়নযোগ্য শক্তি ২০৯ কোটি কিলোওয়াটে পৌঁছায়, যা ১৩তম পাঁচ বছরের পরিকল্পনার শেষের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

একই সময়ে, চীনের এনইভি বাজারও দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালে নতুন জ্বালানির গাড়ির সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ কোটি ১৪ লাখে।

সূত্র: সিএমজি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *