আর্কটিক ও অ্যাটলান্টিকের মাঝে নিঃসঙ্গ এক বিশাল দ্বীপদেশ গ্রিনল্যান্ড। সেখানে বরফের প্রাচুর্যের মাঝে বসতি গড়েছে মানুষ। গ্রিনল্যান্ডের ৮০ ভাগ অঞ্চলই বরফে ঢাকা। এই ভূখন্ডের পরিবেশের প্রভাব আছে সারাবিশ্বে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বরফ যে গলছে, তা সবারই জানা। এখন প্রতিবছর প্রায় আধ ইঞ্চি করে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে। গবেষকরা এই বিষয়টির ওপর কয়েক বছর ধরে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছেন। ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলা নিয়ে পরিবেশ গবেষণা বিষয়ক জার্নাল নেচারে নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেখানে গত ৩৫০ বছর ধরে বরফ কী মাত্রায় গলছে, তা দেখানো হয়েছে। দেখা গেছে, গত কয়েক দশকে বরফ গলার মাত্রা বেড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ গতিতে। প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে বর্তমানে বরফ গলার হার ৫০ ভাগ বেশি। গ্রিনল্যান্ডে ড্রিল ব্যবহার করে আইসকোরের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। এসব নমুনা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা ১৬৫০ সালের বরফ গলার হারও নির্ণয় করতে পেরেছেন। দীর্ঘমেয়াদী হিসেবে দেখা গেছে, গত সাড়ে তিনশ’ বছরে বরফ গলার হার আগের ৮ হাজার বছরের চেয়েও বেশি।
গবেষকরা এই বরফ গলার হারকে ননলিনিয়ার বলছেন। অর্থাৎ আগে যেখানে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যতটা বরফ গলত, এখন ততটা উষ্ণতার কারণে দ্বিগুণ বা তার বেশি বরফ গলছে। গ্রিনল্যান্ডের যে আইসশিট তা যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা রাজ্যের সমান। এত বড় বরফের চাক যদি গলে যায়, তাহলে সমুদ্রের উচ্চতা ৭ মিটার বা ২৩ ফুট বেড়ে যেতে পারে। কোনো কোনো গবেষকের মতে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা তিন ফুট বাড়লেই বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ২০ ভাগ তলিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় প্রথম দিকে রাখা হয়। সেক্ষেত্রে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলার নতুন এ খবর বাংলাদেশের জন্য যে সুখকর নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।