দুর্ঘটনাকবলিত বালুভর্তি একটি ট্রাক উদ্ধার করে থানায় নেওয়ার সময় আবারও ঘটে দুর্ঘটনা। ব্রিজে ওঠার সময় রেলিং ভেঙে সেখানে চাপা পড়ে মো. ইসরাফিল (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্র। সে সাহেবাবাদ পূর্বপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
ইসরাফিলের পা ও শরীর রেলিংয়ের সঙ্গে আটকে থাকায় তাকে উদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কবিরসহ পুলিশ সদস্যরা। ওসি প্রায় ৪০ মিনিট ব্রিজের রেলিংয়ে ঝুলে থেকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন আটকেপড়া ওই স্কুলছাত্রকে।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার সামনে। এরইমধ্যে ব্রিজের রেলিং ধরে সেখানে ওসির ঝুলে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরের দক্ষিণ বাজারে মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের একটি বালুভর্তি ট্রাকের চাপায় আহত হয় স্থানীয় সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ও নগরপাড় গ্রামের জয়দল হোসেনের ছেলে মো. হৃদয় (১৪)। এতে তার শরীরের নিচের অংশের বাম দিকের হাড় ভেঙে গিয়ে সে মারাত্মকভাবে আহত হয়।
তাঁকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এলাকাবাসী ট্রাকটি আটক করলেও ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় কয়েকশ শিক্ষার্থী উপজেলা সদরে বিক্ষোভ করে থানার সামনে উপস্থিত হয়ে ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ঘটনাস্থল থেকে বালুভর্তি ট্রাকটি থানায় প্রবেশ করার সময় থানার সামনের ব্রিজের উপরে ওঠার সময় অ্যাপ্রোচ সড়কের মাটি সড়ে গিয়ে ব্রিজের রেলিংয়ের সাথে ট্রাকটি হেলে পড়ে।
এসময় প্রতিবাদ জানাতে আসা ওই স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ইসরাফিল ট্রাক এবং ব্রিজের রেলিংয়ের মাঝখানে চাপা পড়ে। সহপাঠীরা তাকে বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কবির জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট ব্রিজের রেলিংয়ে ঝুলে থেকে এলাকাবাসী ও পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় ব্রিজের রেলিং ভেঙে আটকে পড়া ইসরাফিলকে উদ্ধার করেন।
ইসরাফিলকে উদ্ধার করে স্থানীয় ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং অবস্থার অবনিত হওয়ায় সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ডাক্তাররা জানান, ইসরাফিলের ডান পায়ের উপরের অংশ ভেঙে গেছে এবং শরীরের নিচের অংশ থেতলিয়ে গিয়ে সে মারাত্মভাবে আহত হয়েছে। জানা গেছে ওসি শাহজাহান ইসরাফিলের পরিবারের সদস্যদের হাতে তার চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক নগদ পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেন।