Monday, December 23
Shadow

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষাকে ঘিরে তৎপর প্রশ্নফাঁস চক্র

প্রশ্নফাঁসশুরু হচ্ছে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা-২০১৮। প্রতিবারের মতো এবারও পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে অনলাইনে সক্রিয় হয়েছে একাধিক চক্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে এসব গ্রুপ থেকে অল্প টাকায় জেএসসি ও জেডিসির প্রশ্ন দেওয়ার কথা বলে প্রলুব্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনও সুযোগ নেই।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ঘেঁটে দেখা গেছে, ‘Psc/Jsc/Ssc/Hsc Question Out And Result Change’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রতি মুহুর্তে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন পোস্ট করা হচ্ছে। নীলা সরকার নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে বলা হয়েছে, ‘কষ্ট করে পরীক্ষা দেওয়ার দিন শেষ। এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমার বড় ভাই বোর্ডে জব করে। প্রতি প্রশ্নের মূল্য ১০০ টাকা। আগে কোনও টাকা নিবো না। ১০০% কমনের পর টাকা নিবো।’

একই গ্রুপে আশিকুর রহমান আশিক, আহমেদ লাল, ডিকে ভাই, হৃদয় গাজী, বিডি অল বোর্ড, খান আহমেদ, সজিব সজিব, সাব্বির হোসেন মাইকেলসহ প্রায় অর্ধশত ফেসবুক আইডি থেকে জেএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, ‘PSC JSC SSC HSC All Exam 100% Suggestion And Out Question 2’ নামের গ্রুপে মো. সায়েম খান, মোশাররফ হোসেন, মো. সজিব মিয়া, লাস্ট আনোয়ার, এসকে নীরব, রাফীন আহমেদসহ প্রায় অর্ধশত ফেসবুক আইডি থেকে একই গ্রুপে প্রশ্নপত্র দেওয়ার পোস্ট দেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে, প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেওয়াতে পিছিয়ে নেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও। ‘জেএসসি ঢাকা বোর্ড ২০১৮’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ‘০১৭৭১-৭৭৩৭২০’ নম্বর থেকে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ‘জেএসসি প্রশ্ন ২০১৮’, ‘জেএসসি, এসএসসি, এবং এইচএসসি প্রশ্ন গ্রুপ’ সহ প্রায় অর্ধশত গ্রুপ এমন প্রলোভন দিচ্ছে বলে নজরে এসেছে। এগুলোতেও বিভিন্ন নম্বর থেকে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গত সোমবার ২৯ (অক্টোবর) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের তৎপরতা অনেক ক্ষেত্রেই শুরু হয় কোচিং সেন্টার থেকে। তাই পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।’

 

তিনি আরও বলেন, প্রশ্নফাঁস রোধে এবারও সব পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে আগেই একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে,তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করে প্রশ্নপত্রের খাম খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত বছরের মতো এবারও পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে শিক্ষক,ছাত্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।’

ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসের গুজবে কারও কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনও শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রশ্নফাঁসের গুজবের সঙ্গে জড়িয়ে যাবেন না। প্রশ্নপত্র ফাঁস অসম্ভব।’

উল্লেখ্য, গত বছর বেশ কয়েকটি পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটলে সরকার প্রশ্নফাঁস রোধে নানারকম কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানোর ঘটনায় আটক করা হয় কয়েকজনকে। চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে। এরপর পরীক্ষাটি নতুন করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!