Sunday, December 22
Shadow

ভারতে ফণীর প্রাথমিক তাণ্ডব চলছে

ভারতে ‘ফণী’র প্রাথমিক তাণ্ডব চলছে

ভারতে ফণীর প্রাথমিক তাণ্ডব চলছে

ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে অগ্রসর হতে থাকায় ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। তবে আগামীকাল দুপুরের দিকে ওড়িশার ওপর সরাসরি আছড়ে পড়বে ফণী। তখনই দেখা যাবে এর আসল তাণ্ডব। এখন শুধু এর প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া বইছে ও বৃষ্টি হচ্ছে।

বর্তমানে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার পুরী উপকূলের দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমের ৩২০ কিলোমিটার ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমবঙ্গের দীঘার ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণে পশ্চিমে অবস্থান করছে।

বঙ্গোপসাগরের প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান মধ্য ইউরোপের দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের আবহাওয়ার পূর্বাভাসবিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডি তাদের ওয়েবসাইটে সরাসরি সম্প্রচার করছে।

উইন্ডির ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ঘূর্ণিঝড় ফণী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

 

 

ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডে এক প্রতিবেদনে বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

দেশটির অপর সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে তীব্র হাওয়া এবং বৃষ্টির জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক পোল ও গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন ।

ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানের সন্ধানে বাড়ি-ঘর ছাড়ছেন তারা। অন্ধ্রপ্রদেশের কাকদ্বীপের উপকূলীয় থানা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় কাঁচা বাড়ির বাসিন্দাদের ইতোমধ্যে আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

 

ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, উপকূলীয় রাজ্য ওড়িশায় অত্যন্ত ভারী ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাত এলাকায় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে বইছে।

এদিকে, ভারতে ফণীর সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবেলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জরুরি বৈঠকে বসেছেন। ভারতের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে ফণীর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় নেয়া প্রস্তুতির ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদিকে অবগত করেন।

ঝুঁকিপ্রবণ রাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করতে মোদি তার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি ও কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

 

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার পুরী উপকূল থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। বিকেলের দিকে পুরী শহরের দক্ষিণ উপকূলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ওড়িশা সরকার ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৪ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এই রাজ্য থেকে মোট ১১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৫ জনকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৮৫২টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

এদিকে, ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতোমধ্যে আজকের মধ্যে সব পর্যটককে হোটেল ছেড়ে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ওড়িশা সরকার। বাঙালি পর্যটকদের জন্য পুরী-কলকাতা বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। ১০৩টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

পুরী, কেন্দ্রাপড়া, বালেশ্বর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, কটক, জাজপুরের আট লাখেরও বেশি মানুষকে ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮৭৯-য়েরও বেশি সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষদের এই সাইক্লোন সেন্টারেই আপাতত রাখা হয়েছে।

নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষা বাহিনী এবং বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনীর ৭৮টি দল ইতিমধ্যে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

 

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের ঘূর্ণিঝড় ফণী শুক্রবার ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে সন্ধ্যার দিকে খুলনাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারে। তবে ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে শুক্রবার সকাল থেকেই।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তরর বলছে, শুক্রবার সকালের দিকে বঙ্গোপসাগর থেকে ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ফণী। এসময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০-১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বয়ে যেতে পারে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বাতাসের এই তাণ্ডব চালাতে পারে ফণী। ভারতে ফণীর ভারতে ফণীর

 

যে রক্তে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!