Monday, December 23
Shadow

ভালোবাসার মানুষকে স্পর্শ করুন, দুজনই ভালো থাকবেন

ভালোবাসার মানুষ

ভালোবাসার মানুষকে স্পর্শ করুন, দুজনই ভালো থাকবেন

জন্মের পর শিশুর ইন্দ্রিয় প্রথম সাড়া দেয় অন্যের স্পর্শে। এই ভালোবাসার স্পর্শই মা ও শিশুর মধ্যকার সম্পর্ককে উন্নত করে, শিশুর মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। যখন আমরা বৃদ্ধ হই তখনও স্পর্শ আমাদের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি বিদ্যমান রাখে। এই অনুভূতির ভিত্তিতে আমরা রোমান্টিক হই, সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে অবস্থান করি।

 

গবেষণা বলছে, স্পর্শের ফলে শরীরের পিটুইটারি গ্রন্থি হতে অক্সিটোসিন নামের হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি ‘লাভ’ বা ‘কাডল’ হরমোন নামে পরিচিত। প্রতিদিনের স্পর্শ, অর্গাজমের সময় কিংবা শিশু জন্মদানের সময় এই হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি মানুষের মধ্যে আকর্ষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, মনস্তাত্ত্বিক স্থায়ীত্ব, বিশ্বাস এবং বিনোদনের মাত্রা উন্নয়নে ভূমিকা রাখে অক্সিটোসিন। এই হরমোন উদ্বেগ ও চাপ কমাতেও ভূমিকা রাখে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জার্নাল অব সাইকোসোম মেডিসিন-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শরীরে কর্টিসোল নামের হরমোন মাত্রা হ্রাস পেলে তা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে আবেগঘন স্পর্শ। কর্টিসোলকে বলা হয় শরীরের অ্যালার্ম সিস্টেম যা মানুষের মেজাজ, প্রেরণা এবং ভয়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কেননা, অতিরিক্ত চাপ মাথাব্যথা থেকে বিষণ্নতা পর্যন্ত ক্ষতিকর সবকিছুই হতে পারে।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, নিয়মিত স্পর্শের মাধ্যমে দম্পতিরা তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান করতে পারে। অক্সিটোসিনের অভাব আমাদের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে, স্পর্শের অভাব কারণ হতে পারে একাকীত্ব, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার।

তাই আরো বেশি স্পর্শের অভিজ্ঞতা পেতে চারটি উপায় দেওয়া হলো যা থেকে পাওয়া যাবে নানাবিধ স্বাস্থ্য সুবিধা :

সঙ্গীকে আলিঙ্গন করুন :
যদি আপনি বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন তবে দিনে অন্তত ১০ মিনিটের জন্য সঙ্গীকে আলিঙ্গন করুন। এতে প্রতিদিন যেমন আপনার শরীরে অক্সিটোসিন উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ককে করবে আরো গভীর।

দৈনন্দিন জীবনের এই স্পর্শ কেবল অক্সিটোসিন উৎপাদন বাড়াবে না বরং পরস্পরের সম্পর্ককে করবে আরো গভীর। কারণ এতে সঙ্গীর প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার মুহূর্ত সৃষ্টি হয়।

এ ছাড়া স্পর্শ ডোপামাইন নামের হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে। এই হরমোন জৈবিক আবেগকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে দাম্পত্য জীবন হয় সুখের।

তাকে আলিঙ্গন করুন যে আপনাকে বিশ্বাস করে :
জৈবিক ক্রিয়া চলতে পারে এমন কারো সঙ্গে বন্ধুত্বের বাইরেও অন্য যেসব বন্ধু রয়েছে, কিংবা যারা পরিবারের সদস্য, তাদেরকেও স্পর্শ করুন। তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিন যে আপনাকে বিশ্বাস করে। এভাবেও বাড়তে পারে শরীরে অক্সিটোসিনের মাত্রা।

যদি আপনি এই বিষয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করেন তবে আলিঙ্গন করতে পারেন নিজেকে। একটি চমৎকার গোসল কিংবা ম্যাসেজও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

ভালোবাসার আলিঙ্গন যখন থেরাপি :
যখন একই পেশায় যুক্ত অন্যের সঙ্গে আলিঙ্গন করছেন তখন সেটি একটি বিশেষ থেরাপি হিসেবে কাজ করে। তাই আলিঙ্গন করতে না পারলে অন্তত হ্যান্ডশেক করুন।

পোষা প্রাণির সঙ্গে আলিঙ্গন :
পোষা প্রাণির সঙ্গে আলিঙ্গনও শরীরে একই হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি অনুরূপভাবে আপনাকে সুস্থ রাখবে।

বিএমসি সাইকোথ্রিটি-তে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পোষা প্রাণির সঙ্গে আলিঙ্গন করলে মানসিক চাপ উপশম হয়। এটি ইতিবাচক আবেগকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রাণিদের শরীর স্পর্শেও অক্সিটোসিন এবং লোয়ার কর্টিসোল মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

সূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&fbclid=IwAR3D09gVax0zVCyVasWM08NdNr4Ni0zhjCsmpsfMW_VIqzUwT4mKlI5MexU

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!