Sunday, April 13

১৭ বছরের অ্যালিসার হাত ধরেই হয়ত ফুল ফুটবে মঙ্গলে

মঙ্গলের মাটিতে পা দেবে মানুষ। গড়ে উঠবে বসতি। ফুটবে ফুল। স্বপ্ন নয়, এমন বাস্তবের অপেক্ষাতেই রয়েছে পৃথিবী। খুব বেশি দেরি নেই। অদূর ভবিষ্যতেই সেই অচিনগ্রহে ঘুরে-বেড়াবে অ্যালিসা, বর্তমানে যার বয়স ১৭। আর সেই স্বপ্ন চোখে নিয়েই প্রত্যেকদিন একটু একটু করে নিজেকে প্রস্তুত করছে ওই স্কুলছাত্রী।

ছেলেবেলা থেকেই মহাশূন্যে যাত্রার স্বপ্ন দেখত আমেরিকার লুজিয়ানার বাসিন্দা অ্যালিসা কারসন। মাত্র তিন বছর বয়সেই বাবাকে বলছিল, ”বাবা আমি বড় হয়ে মহাকাশচারী হব, মঙ্গল অভিযানে যাব।”তার সেই স্বপ্নই এবার পূরণ হচ্ছে। ২০৩৩ সালে মঙ্গল গ্রহে পাঠানো মানববাহী মহাকাশযানের প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে মঙ্গলে পা দেবেন অ্যালিসা।

পৃথিবীর এই প্রতিবেশীর প্রতি এক অমোঘ আকর্ষণ ছিল তার। মঙ্গলের মহাকাশযানের ভিডিও ইউটিউবে দেখা ছিল তার নেশা। ঘরের দেওয়াল জুড়ে ছিল মঙ্গলের এক বিশাল ম্যাপ।

সেই অভিযানের জন্য চেষ্টার কোনও খামতি রাখছে না অ্যালিসা। আমেরিকার অ্যাডভান্সড স্পেস অ্যাকাডেমি থেকে সবচেয়ে কম বয়সে ডিগ্রি নিয়েছে সে। নাসার সব স্পেস ক্যাম্প সম্পন্ন করে রেকর্ড করেছে অ্যালিসা। এছাড়া অ্যালিসাই একমাত্র যে নাসার পাসপোর্ট প্রোগ্রাম শেষ করেছে। অর্থাৎ, নাসার সব ভিজিটর সেন্টার পরিদর্শন করেছে। সারা আমেরিকার ন’টি অঙ্গরাজ্যে নাসার ১৪ টি ভিজিটর সেন্টার রয়েছে। চারটি ভাষায় অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে সে। এছাড়া বায়োলজি, মাইক্রো বায়োলজি নিয়ে করতে হচ্ছে পড়াশোনা। মঙ্গলের মাটি আর পৃথিবীর মাটির তফাৎটা বুঝতে হচ্ছে। সেখানে কি গাছ ফলানো সম্ভব? সেই গবেষণাতেও মন দিয়েছে অ্যালিসা।

এত কিছুর পরও অ্যালিসা নিয়মিত স্কুলের পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলের সব বিষয়গুলোই এখন সে ৪ টি ভাষায় শিখছে (ইংলিশ, চাইনিজ, ফ্রেঞ্চ, এবং স্প্যানিশ)। অ্যালিসার তার অবসর সময়ে পাবলিক স্পিকিং করে। সবাইকে স্বপ্ন দেখাতে চায় সে। তার মতে, ”সবসময় নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করো এবং কখনোই কাউকে তোমার কাছ থেকে তোমার স্বপ্ন ছিনিয়ে নিতে দিও না।”

নাসা তাকে বেছে নিয়েছিল অনেক দিন আগেই। তবে ১৮ বছরের আগে নাসা কাউকে অফিশিয়ালি আবেদন জানাতে দেয় না। কিন্তু অ্যালিসার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তার মধ্যে এক বিশেষ সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০৩৩ -এ য।ন প্রযুক্তি তৈরি হয়ে যাবে তখন অ্যালিসার বয়স হবে ৩২, মহাকাশচারী হিসেবে সেটাই আদর্শ বয়স। যখন সে ফিরে আসবে তখন তার বয়স হবে ৩৬। ততদিন পর্যন্ত প্রেমে পড়াও মানা। তার কথায়, এটা একটা বিপজ্জনক মিশন, তাই কারও প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকলে, অভিযান থেকে মনোযোগ সরে যেতে পারে। তাই আপাতত লক্ষ্য একটাই- মঙ্গলে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *