Wednesday, May 15
Shadow

যুক্তরাষ্ট্রে এসাইলামের বিধিতে পরিবর্তন আসছে

সেন্ট্রাল আমেরিকানদের ঠেকানোর অভিপ্রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসাইলাম পাবার বিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। যুক্ত বিচার বিভাগের মুখ্য কর্মকর্তা ম্যাথিউ হুইটকার নয়া এ বিধি প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের দুদিন পরই এটি জারি করা হয়েছে। যদিও এটি তৈরি করা হয় ৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার)। এতে ম্যাথিউ হুইটকার ছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টিন নিলসন।

উল্লেখ্য, হাজার হাজার কারাবান মিছিল করে মেক্সিকোতে ঢুকে পড়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের দিকে আসছে। তারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে আসছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েক হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে সীমান্তে। এমনি একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই নয়া এ বিধি প্রকাশ করা হলো। এটি কার্যকর করতে প্রেসিডেন্টকে একটি ঘোষণাপত্র (প্রক্লেমেশন) ইস্যু করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে শিগগিরই তিনি তা করবেন।

নয়া এ বিধি অনুযায়ী, মেক্সিকো অথবা কানাডা হয়ে যারা বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবে, তারা এসাইলাম পাবে না। তবে যারা বিমান কিংবা নৌপথে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণের পর এসাইলাম প্রার্থনা করবে তাদের আবেদন বিবেচনা করা হবে।

এই বিধি জারির পর যৌথ স্বাক্ষরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান অভিবাসন আইন অনুযায়ী বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশাধিকার স্থগিত কিংবা নিষিদ্ধ করার সর্বময় ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রেসিডেন্টকে এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট সে আহ্বান রেখেছেন এবং বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীদের বাধা দিতে সীমান্ত রক্ষীর পাশাপাশি সৈন্য মোতায়েন করাও হয়েছে।

এতকিছুর পরও কেউ যদি চোরাইপথে কিংবা জোর করে প্রবেশ করে এসাইলাম প্রার্থনা করে, তাহলে সেটি নাকচের কঠিন বিধির বিকল্প নেই।

উল্লেখ্য যে, যুক্তরাষ্ট্রে বহুদিনের পুরনো রীতি অনুযায়ী নিজ দেশে নিরাপত্তাহীন নাগরিকেরা যে কোনো উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার ভেতরে ঢুকেই এসাইলাম তথা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি প্রার্থনা করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য অনুযায়ী, সীমানা অতিক্রমকারীদের মধ্যে অনেক ক্রিমিনাল, সন্ত্রাসীও থাকতে পারে।

এদিকে, অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত সংগঠন ছাড়াও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো বিধি জারি হলেই আদালতে যাবার হুমকি দেয়া হয়েছে।

এ ধরনের বিধি কার্যকর হলে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই সময়েও শতশত বাংলাদেশি যুবক টেক্সাস, মিসিসিপি, আলাবামা, লুইজয়ানা, মিনেসোটা, ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা, পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি, নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ডিটেনশন সেন্টারে এসাইলামের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা দালালকে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে প্রবেশের সময় ধরা পড়েন। সকলেই বিএনপি অথবা এলডিপির কর্মী হিসেবে দাবি করে এসাইলাম চেয়েছেন বলে তাদের পক্ষে কর্মরত এটর্নিরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, দালালকে বিপুল অর্থ দিয়ে একইভাবে মেক্সিকো থেকে দুর্গম পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টেক্সাসে প্রবেশকালে রায়ো গ্র্যান্দে নদীতে ডুবে মারা গেছে কাজী আব্দুল আজিজ ওরফে তারেক (২০)। তার বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রাম নারায়নপুরে।

নিউইয়র্কে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ড্রাম’র সংগঠক কাজী ফৌজিয়া জানান, এর আগে নোয়াখালীর আরও দুই যুবকের লাশ উদ্ধারের পর আমরা বাংলাদেশে স্বজনের কাছে পাঠিয়েছি। তারেকের লাশ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে নিউইয়র্কস্থ নোয়াখালী সোসাইটির মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!