সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছে। অবৈধভাবে সৌদি যাওয়া এসব রোহিঙ্গা বর্তমানে দেশটির আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
আটককৃত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা হিসেবে প্রমাণের জন্য তাদের কাছে মিয়ানমারের পরিচয়পত্র আছে। গত বছরের আগস্টে মিয়ানমার সরকার রাখাইনে নিধন অভিযান শুরুর পর তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। তারা বাংলাদেশি নাগরিক নন।
গত মধ্য অক্টোবর থেকে আটককৃত এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান থেকে জাল পাসপোর্টের মাধ্যমে অনেক রোহিঙ্গা সৌদি আরব গিয়েছে। মূলত উমরাহ করার ভিসা নিয়ে এসব রোহিঙ্গা সেখানে গিয়েছে। চলতি বছর সৌদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ অবৈধ অভিবাসী ও শ্রমিকদের ধরতে অভিযান শুরু করে। এসব অভিযানে আটক রোহিঙ্গাদের জেদ্দাহর শুমাইসি আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জাল পাসপোর্টে সৌদি প্রবেশের কথা স্বীকার করেছে।
এসব রোহিঙ্গা জানিয়েছেন তাদের কাছ থেকে জোর করে ‘মানসিক সুস্থতার ঘোষণাপত্রে’ স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।
আটককৃতদের কয়েকজন মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছেন, সৌদি ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের বুকে ঘুষি মেরেছে এবং বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার সম্মতি ও ‘মানসিক সুস্থতার ঘোষণাপত্রে’ স্বাক্ষর নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন্দী বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সৌদি ইমিগ্রেশন পুলিশ ফর্ম পূরণ শেষ করেছে। তাদের কেবল আমাদের আঙ্গুলের ছাপ প্রয়োজন, এই ছাপ নিতে (সৌদি পুলিশ) আমার বুকে ঘুষি মেরেছে। আমরা বাংলাদেশ ফেরত যেতে ও শরণার্থী শিবিরে থাকতে চাই না। সেখানে আমাদের কী ভবিষ্যত আছে?’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক অ্যাডাম কুগল সৌদি কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘জোর করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ ফেরত পাঠানো সৌদি আরবকে অবশ্যই বন্ধ করা উচিৎ এবং তাদের সেখানে আশ্রয় দেওয়া উচিৎ।