আজ তোমাদের শোনাবো এক জাদুর কাগজের গল্প। এ কাগজে যেটার ছবি আঁকা হয়, সেটাই চলে আসে। আর সেই জাদুর কাগজ পেয়ে গেলো মিতু। তারপর কী হলো? চলো তো আমরা গল্পটা শুনি।
একদিন মিতু যাচ্ছিল স্কুলে। । আজ সে দেরি করে ফেলেছে। সবাই আগে আগে হাঁটছে সে পেছনে পড়ে গেছে। কেন পেছনে পড়ে গেলো? কারণ মিতুর একটা পা নেই। সে ক্রাচে ভর করে হাঁটে। এ জন্যই তার স্কুলে যেতে একটু দেরি হয়।
মিতুর কাঁধে একটা স্কুল ব্যাগ আছে। ব্যাগের গায়ে কী দারুণ একটা পাখির ছবি! ছবিটা মিতু নিজেই এঁকেছে। সে অনেক সুন্দর ছবি আঁকতে জানে।
কিছুদূর যেতেই একটা ছায়া ঘেরা রাস্তা। আশপাশে আর কেউ নেই। মিতু গুন গুন করে ছড়া বলতে বলতে হেঁটে যায়।
মিতু: টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার, হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর।
এটা কী? ওমা কত্ত বড় একটা পাখি! মিতু খুব অবাক হয়।
মিতু: আরে! এটা তো আমার আঁকা পাখি!
ব্যাগের গায়ে মিতু এই পাখিটাকেই এঁকেছিল। কিন্তু এত বড় লাল নীল রঙের পাখিটার নাম তো সে জানে না। কিন্তু পাখিটা এমন করছে কেন? মিতু এগিয়ে গেলো।
মিতুকে দেখে পাখিটা খুব খুশি হলো। বলল, ওহ তুমিই তো আমার ছবিটা এঁকেছো। আমি তোমাকেই খুঁজছিলাম। আমি অনেক দূরের পাখিরাজ্য থেকে এসেছি।
মিতু: বাহ কী মজা। পাখির রাজ্যে পাখিরা থাকে বুঝি?
এ কথা শুনে পাখিটা বলল, তোমার আঁকা ছবিটা আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই তোমার জন্য একটা উপহার এনেছি। এই নাও।
এই বলে পাখিটা মিতুকে একটা কাগজ দিল।
মিতু: কিন্তু একটা কাগজ দিয়ে আমি কী করবো?
পাখিটা বলল, এটা জাদুর কাগজ। এখানে তুমি যা আঁকবে সেটাই চলে আসবে। এই বলেই উড়ে গেলো পাখিটা।
এদিকে মিতু এগিয়ে গেলো সামনে। কী দেখলো? দেখলো তার বন্ধুরা সবাই খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
গতরাতে অনেক ঝড় হয়েছিল। এর পাশে যে সাঁকোটা ছিল ওটা ভেঙে গেছে।
সবাই চিন্তায় পড়ে গেলো। এখন স্কুলে যাবে কী করে?
এমন সময় মিতুর মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সে বের করলো তার জাদুর খাতা। কিন্তু একটা মাত্র কাগজ। মিতু ঠিক করলো.. এতেই একটা কিছু আঁকবে!
মিতু ছবি আঁকতে শুরু করলো। সবাই গোল হয়ে দেখছে, কী আঁকছে মিতু।
একটা লাঠি, দুটো লাঠি। তারপর অনেকগুলো দড়ি, খুঁটি কত কী আঁকছে মিতু। আঁকতে আঁকতে হয়ে গেলো একটা সাঁকো। মানি, অনেক মজবুত আর শক্ত সাঁকো। তারপর কী ঘটলো?
তারপর, সবাই সামনে তাকিয়ে দেখে খালের ওপর একটা। মিতু যেমনটা এঁকেছে ঠিক সেরকম।
দেখলে তো মিতু শুধু নিজের জন্য কিছু আঁকেনি। সে সবার কথা ভেবে জাদুর কাগজে একটা সাঁকো এঁকেছে। তোমরাও মিতুর মতো সবার কথা ভেবে কাজ করবে।
এরপর.. সবাই সাঁকো পার হলো। এবার আর মিতুকে ফেলে যায়নি ওরা। ওকে সঙ্গে নিয়েই গেছে।