class="post-template-default single single-post postid-1789 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

তালাক কার্যকরের আগে

কোনো কারণে স্বামী বা স্ত্রী তালাক দিতে চাইলে এর আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়। এর মধ্যে কিছু আইনগত বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ বা তালাক হতে পারে নানা কারণে, নানা বাস্তবতায়। যে কারণেই হোক না কেন তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এবং তালাক কার্যকরের আগে কিছু নিয়ম মানতে হয়। বিশেষ করে তালাকের নোটিশ পাঠানোর বেলায় কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব নিয়ম যথাযথ না মানলে তালাক কার্যকরে জটিলতা সৃষ্টি হবে।

স্ত্রীর ক্ষমতা আছে তো?
কোনো মুসলিম স্ত্রী যদি স্বামীকে তালাক দিতে চান তাহলে প্রথমেই দেখতে হবে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে কি না। কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে যদি তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া থাকে, সে ক্ষেত্রে সরাসরি তালাক প্রদান করতে পারবেন। যদি এ ক্ষমতা স্ত্রীকে দেওয়া না থাকে, তাহলে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে তালাকের ডিক্রি নিতে হবে।

নোটিশ দেওয়ার পদ্ধতি
আইন অনুযায়ী, যেভাবেই তালাক ঘটুক না কেন, যে পক্ষ তালাক দিতে চাইবে, সে পক্ষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপর পক্ষের ঠিকানা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে নোটিশ লিখিতভাবে পাঠাবে। ওই নোটিশের কপি অপর পক্ষের কাছেও পাঠাতে হবে। তবে আদালতের মাধ্যমে কোনো তালাকের ডিক্রি হলে সে ডিক্রির কপি চেয়ারম্যানকে প্রদান করলেই নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।

অনেকেই মনে করেন তালাকের নোটিশ কাজির মাধ্যমে না পাঠালে তা কার্যকর হয় না। এটি ঠিক নয়। তালাকের নোটিশ স্বামী বা স্ত্রী নিজে লিখিত আকারে পাঠিয়ে দিলেও হবে। তবে নোটিশ দেওয়ার নিয়মকানুন ঠিক রাখতে হবে। তালাকের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম পালন না করলে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড কিংবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। যে পক্ষ থেকেই তালাকের নোটিশ দেওয়া হোক না কেন, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা মেয়র নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে উভয় পক্ষের মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে সালিসি পরিষদ গঠন করবেন। সালিসি পরিষদ উভয় পক্ষকে পরপর সাধারণত তিনটি লিখিত নোটিশ পাঠিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করবে। নোটিশ পৌঁছানোর তারিখ থেকে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। তবে স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর তালাক কার্যকর হবে।

একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে তালাকের নোটিশ পাঠানো মানে হচ্ছে তালাকের ঘোষণা। নোটিশ পাঠালেই তালাক কার্যকর হয়ে যায় না। নোটিশ পাঠানোর পরে ইদ্দতকাল সময়ে তালাক প্রত্যাহার করা যায়।

তালাক নিবন্ধন
যে পক্ষই তালাক প্রদান করুক না কেন, তালাক কার্যকরের পর তালাকটি নিবন্ধন করাতে হবে। তালাক নিবন্ধন করাতে হবে কাজি অফিসে। কোনো কারণে তালাক নিবন্ধন অস্বীকার করলে ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রারের কাছে আপিল করা যায়। তবে তালাক নিবন্ধন নিয়ে কোনো জালিয়াতি করলে তা অপরাধ হবে। কোনো পেছনের তারিখ দিয়ে নিবন্ধন করালে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আর তালাক নোটিশ পাঠানোর দিনই কাজির মাধ্যমে নিবন্ধন করলেও তালাক প্রক্রিয়াটি যথাযথ হবে না।

তালাকের আগে আলোচনা
স্বামী বা স্ত্রী যদি সম্মতিতে তালাক দিতে চান তাহলে দুজনে মিলে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। বিশেষ করে স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে যদি কোনো দেনা-পাওনা থাকে (যেমন দেনমোহর, ভরণপোষণ প্রভৃতি), সেসব মিটমাট করে তালাকের ঘোষণা দেওয়া উচিত। আর একতরফা তালাক দিতে হলে দাবিদাওয়া তালাক কার্যকর হওয়ার সময়ের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা উচিত। কোনো মামলা-মোকদ্দমায় অযথাই জড়ানো উচিত নয়। আর মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দিলে এর জন্য কঠিন শাস্তিও পেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!