অনেক দেশই এখন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর স্কলারশিপ দিচ্ছে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি নিয়ে বিনে পয়সায় এখন জাপানে পড়াশোনা করার সুযোগ পান। কোনো কোনো দেশ বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির পাশাপাশি থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তও করে দিচ্ছে। আবার বিমান ভাড়ার খরচাও দিচ্ছে কোনো কোনো দেশ বা সংস্থা। মাধ্যমিক বা ও-লেভেল এবং উচ্চমাধ্যমিক বা এ-লেভেল পরীক্ষায় ভালো জিপিএ থাকলেই আবেদন করা যাবে বৃত্তির জন্য। বৃত্তির সুযোগ থাকায় অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নিচ্ছেন জাপানকে।
জাপানের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিচ্ছে। জাপানে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা বিনা খরচেই পড়াশোনা চালাতে পারছেন। বৃত্তি না পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ নিয়মে ভর্তি আবেদন করা যাবে।
কোন কোন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আনুমানিক কত জন বিদেশি পড়াশোনা করছে, এর একটা ধারণা আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিষয়ক সাইটগুলোতে প্রতি বছরই প্রকাশ করা হয়। এসব তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, একেক বছর গড়ে দেড় মিলিয়ন থেকেও বেশি শিক্ষার্থী নিজ দেশের বাইরে ভিন্ন কেনো দেশে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে। বিদেশে পড়তে যাওয়াদের মধ্যে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হয় জাপানে।
দেশটির বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ভাষা জাপানি। তবে এর পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ার সুযোগ আছে। জাপানি ভাষা শিখেই দেশটিতে ভর্তির আবেদন করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন অভিজ্ঞরা।
বৃত্তি ছাড়াও খরচ কম :
বৃত্তি ছাড়াও যদি কোনা শিক্ষার্থী জাপানি ভাষায় পড়াশোনা করে, তাহলেও খরচ কম পড়বে। বৃত্তি ছাড়া কেউ পড়াশোনা করতে গেলে টিউশন ফি ও আনুষঙ্গিক খরচ গুণতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাচেলর পর্যায়ে নিবন্ধন ফি ও টিউশন ফি বাবদ বছরে চার থেকে ছয় লাখ টাকার সমপরিমান ইয়েন (জাপানি মূদ্রা) খরচ হবে। এ ছাড়া থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি মাসে গুনতে হবে আরও ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বাড়তি আয়ের সুযোগ হিসেবে আছে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ। বিদেশি শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। তবে এর জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।
ভিসা যেভাবে…
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি আবেদনই কেবল গ্রহণ করে। তবে দেশটির ক্ষেত্রে ভর্তি নিশ্চিত হলেই ভিসা প্রক্রিয়ায় আর জটিলতা থাকে না। ভর্তি আবেদন করতে হয় সেশন শুরুর কয়েক মাস আগে। তবে ভর্তির আগে পড়াশোনার মাধ্যম বা ভাষা এবং খরচের ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন। জাপানে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনার অনেক সুযোগ আছে। অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়মিত স্কলারশিপ দিচ্ছে। এ বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে পারেন। ভর্তি আবেদনের পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা অনুমতিপত্র হাতে পেলেই শুরু করতে হবে ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া। তাই প্রয়োজনীয় সব কাগজ আগেই প্রস্তুত রাখুন। ভিসা-সংক্রান্ত তথ্য ও আবেদনের জন্য যোগাযোগ করতে হবে জাপান দূতাবাসে। ঠিকানা : জাপান দূতাবাস, দূতাবাস সড়ক, বারিধারা, ঢাকা।
জাপান দূতাবাসের ওয়েবসাইটেও (www.bd.emb-japan.go.jp/en/education/index.html) পাওয়া যাবে স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত দরকারি সব তথ্য।
উল্লেখযোগ্য জাপানি ইউনিভার্সিটিতে জাপানে পড়াশোনা :
অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোর্স, তথ্য ও ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনলাইনে জানা যাবে। সেদেশর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাইট, শিক্ষা ও বৃত্তি সংক্রান্ত সাইট থেকে তথ্য দেখে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোর্স বাছাই করতে হবে ভেবে-চিন্তে। খরচ ও দরকারি তথ্য জেনে নিলে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ হবে। জাপানি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট : এশিয়া ইউনিভার্সিটি (www.asia-u.ac.jp), ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জাপান (www.iuj.ac.jp), ফুকুই ইউনিভার্সিটি (www.u-fukui.ac.jp), হিরোশিমা শুডো ইউনিভার্সিটি (www.shudo-u.ac.jp), চিবা ইউনিভার্সিটি (www chiba-u.ac.jp), আইচি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (www.aitech.ac.jp)।