সন্তান হারানো সব সময়ই চরম কষ্টের একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । সমস্ত পরিবার, বিশেষ করে পিতা মাতার জন্য বিষয়টি অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়ে উঠে। অনেক সময় অনেক পরিস্থিতিতেই ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার ফলেও গর্ভপাত হতে পারে। দুর্ঘটনা হয়ত এড়ানো সম্ভব না কিন্তু অন্য সবকিছুর জন্য আছে নানা ধরনের প্রতিকার যা ঠিকভাবে পালন করলে গর্ভপাত অনেকটাই এড়িয়ে চলা সম্ভব।
ডাক্তারের পরামর্শ মতন চিকিৎসা গ্রহণ: অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে সেবন করতে পারেন ওষুধ বা নিতে পারেন ইনজেকশন, তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না। যদি গর্ভধারণের প্রথম পর্যায়ে মাসিকের মত পানি বা রক্ত যায় তবে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। সঠিক সময়ে পরামর্শ করলে গর্ভপাত এড়ানো সম্ভব। এছাড়া শারীরিক কোনও হরমোনাল ক্রুটি থাকলে নিতে পারেন হরমোনের জন্য ওষুধ। এই ওষুধ সেবন করলে গর্ভপাত এড়ানো সম্ভব। দরকার পড়লে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিয়ে নিন দরকার কোন ইনজেকশন। তবে নিজে নিজে কোন ওষুধ সেবন বা ইনজেকশন নিতে যাবেন না। এমনটা করলে বরং গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
থাকুন বিশ্রামে: গর্ভসঞ্চারের পর দরকার শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম। ঠিকভাবে বিশ্রাম নিলে শরীরের ওপরে যে অত্যধিক চাপের সৃষ্টি হয় তা কমানো সম্ভব। আর ঠিক মত বিস্রাম ও খাবার দাবার ঠিক মত গ্রহন করলে গর্ভপাতের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
খাওয়া দাওয়া: যাদের গর্ভধারণের বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ কেবল তাঁরা নয়, সকল গর্ভবতী নারীই খাওয়া দাওয়া করুন শতভাগ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। এটা খেলে বাচ্চা দেখতে সুন্দর হবে, ওটা খেলে গায়ের রঙ ফর্সা হবে, সেটা খেলে দ্রুত প্রসব হবে ইত্যাদি নানান রকম পরামর্শ আপনাকে অনেকেই দিতে আসবেন। কিন্তু অযথা ঝুঁকি না নিয়ে কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শমাফিক বিজ্ঞান বর্ণিত নিয়মে খাওয়া দাওয়া করুন।
থাকুন মানসিকভাবে সুস্থ: অনেক সময়ে গর্ভধারণের আগেই বা একবার গর্ভধারণ করার পরে গর্ভপাত হয়ে গেলে পরবর্তীতে বাচ্চা না হবার ভয় মনে ভর করে। ফলে অনেকেরই মনোবল হারিয়ে যায় এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে যান। আর এই মানসিক অবস্থা তার ওপরে চাপ ফেলে যার ফলে গর্ভধারণ করলেও এই চাপ সহ্য করতে না পেরে গর্ভপাত হয়ে যায়। এমন অবস্থায় যদি তার মধ্যে মনোবল জাগানো যায় তবে তার মধ্যে মানসিক শান্তি আসবে এবং স্ট্রেস কমে আসবে। ফলে তার গর্ভপাতের সম্ভাবনাও কমে আসবে। মানসিকভাবে শান্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে তার পরিবার ও আপনজন, এদের সহায়তায় বিষাদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও গর্ভবতী মা নিয়মিত প্রার্থনা করতে পারেন। প্রার্থনা করলে মন শান্ত থাকবে এবং নানাবিধ চিন্তা থেকেও মুক্ত থাকতে সাহায্য করবে। ফলে গর্ভপাতের আশঙ্কা কমে যাবে।