অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আজ বুধবার সারা দিনের তুমুল ঝড় ও বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আরও দুজন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া সিডনির গণপরিবহনগুলোও সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। ঝড় ও বৃষ্টির বেগ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
১৯৮৪ সালের পর এটিই সিডনির সবচেয়ে ভারী বৃষ্টির দিন বলে দাবি করছে সিডনিবাসী। বুধবার সকাল থেকেই সিডনি ও এর আশপাশের শহরে মুষলধারে বৃষ্টি নামতে শুরু করে। অতিবৃষ্টির ফলে মুহূর্তেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা সিডনি। মাত্র দুই ঘণ্টায় সিডনির অবজারভেটরি হিল স্টেশনে বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ১০০ মিলিমিটার। সিডনির প্রাণকেন্দ্র সিবিডিতে ২৩ মিলিমিটারের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় মোসম্যানে, ১৪০ মিলিমিটার। সাধারণত সিডনিতে নভেম্বর মাসে বৃষ্টির গড় অনুপাত থাকে ৮৩.৮ মিলিমিটার।
এদিকে ঝড়ের কবলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটা দুর্ঘটনায় সিডনির ওয়েস্টলেঘে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে এসে একজন পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে ওলংগংয়ে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত একজন স্বেচ্ছাসেবী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান।
সিডনির পিটওয়াটার রোডে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা উদ্ধারকাজ পরিচালনার সময় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সিডনিজুড়ে সারা দিনে প্রায় ৫০টি সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাতে কারও আহত হওয়ার কথা জানা যায়নি। রাজ্যের জরুরি সেবা বিভাগ এ পর্যন্ত আট শতাধিক সহায়তা ও উদ্ধার কাজের জন্য ১২টি ফোনকল পেয়েছে।
দুর্ঘটনা এড়াতে সিডনির সব হালকা ট্রেন ও গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সিডনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল ও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকের ঝড়-বৃষ্টিতে প্রায় ৭ হাজার ঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সিডনিবাসীকে নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য সরকার।