দুমদাম কাজ করে বসেন৷ যা মনে আসে বলে দেন। রাগ হলে মেরে আধমরা করে ফেলেন। খরচের সীমা নেই। যা দেখেন তাই কেনেন। প্রেমে পাগল হয়ে সব ছেড়েছুড়ে তাঁর জন্য অসাধ্যসাধন করেন।
অনেক হয়েছে৷ আর নয়। নিজেও জানেন, এমন নাছোড় আগেবের বশে পড়ে ক্ষতি যা হয়েছে তা বলার নয়৷ তাই মুক্তি চাইছেন এমন অতিরিক্ত আবেগের হাত থেকে৷ কিন্তু জানেন কীভাবে মুক্তি মেলে এ থেকে?
আসুন দেখে নেওয়া যাক, কী বলেন মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন
এই ভাবে বসেন নাকি? তা হলে এখনই সাবধান হয়ে যান
এমন যদি আপনারও হয়, তবে হতাশ হবেন না, আবেগে করা কাজ যে সবসময় খারাপ হয়, তা নয়৷ বহু ভাল কাজই আবেগের বশে করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু মুশকিল হল ভাল আবেগের সঙ্গে অনেক সময় খারাপ আবেগও আসে৷ তাকে সামলাতে না পারলে কিছু ভুল হয়৷ ভুল আবেগ সামলাতে না পারার একটা বড় কারণ স্পর্শকাতরতা৷ আপনি হয়তো অল্পেই আঘাত পান৷ এবং ভাবনা–চিন্তা কম করেন বলে আঘাত পাওয়ামাত্র প্রত্যাঘাত করে ফেলেন৷
আবেগকে যুক্তির লাগাম পরাতে না পারলে মুক্তি নেই৷ রাতারাতি পারবেন না৷ কিন্তু একটু ভাবনা–চিন্তা করে কয়েকটি পদক্ষেপ নিলে দেখবেন কাজটা যত কঠিন ভেবেছিলেন, তত কঠিন নয়৷
আরও পড়ুন
বেশির ভাগ সময় এসি-তে থাকেন? এ সব অসুখের শিকার হচ্ছেন না তো?
- এ কাজের প্রথম ধাপ হল কিছু করে ফেলার আগে একটু সময় নেওয়া৷ কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করে ফেলার তীব্র আবেগ জাগামাত্র থেমে যান৷ ঠিক করুন, এই মুহূর্তে কিছু বলবেন না বা করবেন না৷ ঘটনার মধ্যে থাকুন৷ দেখুন কী ঘটছে, কে কী বলছেন৷ কিন্তু নিজের মুখে কুলুপ লাগিয়ে দিন৷ হাবভাব ও মুখের চেহারাও যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখুন৷
- ভাল করে ভেবে দেখুন, যে কোনও আবেগই কিন্তু সময়ের সঙ্গে কেটে যায়৷ নতুন আবেগ পুরনোর জায়গা নেয়৷ যা কাটে না তা হল ঝোঁকের মাথায় বলে ফেলা কথা বা ভুল কাজ৷ নিজেকে একটু সময় দিলে এই সব ভুলের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন৷
- ধৈর্য কম হলে এ রকম পরিস্থিতিতে কিছু না করে চুপ করে বসে থাকা খুব কঠিন৷ কাজেই কী করে ধৈর্য বাড়াবেন তা নিয়েও ভাবনা–চিন্তা করুন৷ ধৈর্যশীল মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা করলে কিছুটা কাজ হতে পারে৷
- মনে রাখবেন, রাগ–দুঃখ–অভিমানের ধাক্কা সহ্য করা এক ধরনের মানসিক ব্যায়াম৷ প্রথমে কষ্ট হয়৷ কিন্তু চালিয়ে গেলে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যায়৷ কাজেই পরিস্থিতি যত বিরূপই হোক, আপনি চুপ করে থাকুন, কিংবা দু’–চার কথায় বিষয়টা বুঝে নিন৷ কিন্তু অস্থিরতা কাটার আগে পর্যন্ত মতামত দেবেন না৷ সিদ্ধান্ত নেবেন না৷
- অস্থিরতা অসহ্য হলে মন ঘোরাতে হবে৷ ভিজ্যুয়াল ইমেজারি এবং সুইচ অফ–সুইচ অন অভ্যাস করুন৷ অর্থাৎ অশান্তির বিষয়টা নিয়ে ভাবা বন্ধ করে অন্য কোনও বিষয় নিয়ে ভাবা শুরু করুন৷
- মন ঘোরাতে ব্যায়াম করা বা আড্ডা মারা চলতে পারে৷ বই পড়তেও পারেন৷ গান শুনতে পারেন৷ অর্থাৎ মন ঘোরাতে যা ইচ্ছে তাই করুন৷ শুধু সেই মুহূর্তে রিঅ্যাক্ট করবেন না৷