মানুষের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বৃক্ক। বাংলা শব্দটি বলতে গেলে একেবারে অচনা। তবে কিডনি বললে কারোরই বুঝতে অসুবিধা হবে না। নানা কারণে কিডনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এর কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে, এমনকি অকেজোও হয়ে যেতে পারে। কিডনির সমস্যার লক্ষণ যদি আগেই জানা থাকে, তাহলে পরবর্তিতে বড় ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কিডনির সমস্যার লক্ষণগুলো জেনে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। চিকিৎসা নিন।
দুর্বলতা: কিডনিতে সমস্যার অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো শারিরীক দুর্বলতা। রক্তশূণ্যতা থেকে এমনটি হয়। কিডনি ঠিকমত কাজ না করলে রক্ত ক্রমাগত দূষিত হতে থাকে। ফলে একসময় রক্তে নতুন করে রক্তকোষ তৈরি হয় না। দেখা দেয় রক্তশূণ্যতা।
শ্বাসকষ্ট: কিডনি কাজ করা বন্ধ করলে রক্তে বাড়তে শুরু করে। এই বর্জ্য পদার্থের বেশিরভাগই অম্লীয় পদার্থ। এগুলো যখন রক্তের সঙ্গে ফুসফুসে পৌঁছায় তখন ফুসফুস সেই বর্জ্য বের করার জন্য কার্বনডাই অক্সাইড ব্যবহার শুরু করে। ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ফুসফুসে ঢুকতে পারে না। এতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে।
ঝাপসা দেখা/মানসিক অস্থিরতা: কিডনির সমস্যা চোখে ঝাপসা দেখা কিংবা মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে। কারণ শরীরের বর্জ্য পদার্থের একটি বড় অংশ হচ্ছে ইউরিয়া। কিডনির সমস্যার কারণে ইউরিয়া শরীর থেকে বের না হয়ে বরং রক্তে মিশে যায়। এই দূষিত রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছে মানসিক অস্থিরতা, ঝাপসা দেখা এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
চুলকানি: কিডনির অক্ষমতার কারণে দেহে প্রিউরিটাস দেখা দেয়। প্রিউরিটাস আসলে চুলকানির চিকিৎসা বিজ্ঞানীয় নাম। রক্তে যখন বর্জ্য পদার্থ মিশতে শুরু করে তখন চুলকানির উপসর্গ দেখা দেয়, কারণ বর্জ্যের মধ্যে ফসফরাস থাকে। যেসব খাবারে ফসফরাস থাকে যেমন দুধজাতীয় খাবার, সেগুলো থেকে ফসফরাস বর্জ্য হিসেবে মূত্রের সাথে বের হতে পারে না। ফলে রক্তে মিশে চামড়ায় চুলকানি সৃষ্টি করে।
মূত্রের রং পরিবর্তন, রক্তক্ষরণ: কিডনির সমস্যা হলে মূত্রের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। কিডনির অক্ষমতা যত বাড়বে, মূত্রের পরিমাণ ততই কমবে। মূত্রের রং গাঢ় হলুদ কিংবা কমলা রং হয়ে যাবে। সেই সাথে মূত্রের সাথে রক্তক্ষরণ ও অত্যধিক ফেনা হতে পারে।
অরুচি: কিডনির অক্ষমতায় শরীর বর্জ্য হিসেবে অ্যামোনিয়া ফিল্টার করতে পারে না। রক্তে অত্যধিক পরিমাণের অ্যামোনিয়া মুখে অরুচি, ওজন হারানোর মত সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিডনিতে সমস্যা হলেও তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তাই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা উচিত।