class="post-template-default single single-post postid-16026 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ডায়াবেটিস ঠেকাবে যেসব খাবার জেনে নিন

ডায়াবেটিস খাবার
ডায়াবেটিস খাবার

ডায়াবেটিস নামটির সাথে এখন সবাই কম-বেশী পরিচিত। কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন শুনলেই ভয়ে অনেকেই আঁতকে ওঠেন। ভাবতে থাকেন, মৃত্যুর জন্য প্রহর গুনতে হবে। ব্যপারটা আসলেই কি তাই? না, মোটেই তা নয়। আসুন জেনে নিই, কীভাবে ডায়াবেটিসকে ঠেকানো যায়?

ডায়াবেটিস কী?

ডায়াবেটিস বলতে শারীরিক এমন এক অস্বাভাবিক অবস্থাকে বোঝায় যার লক্ষণগুলো শরীরে গ্লুকোজ অর্থাৎ শর্করা/চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রকাশিত হয়। একে মেটাবলিক ডিজঅর্ডার বলা হয়। শরীরে অগ্ন্যাশয় যদি যথার্থ ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীরে ইনসুলিনের সঠিক কাজ ব্যাহত হয় তাহলে রক্তে গ্লুকোজ-এর মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়; অধিক তৃষ্ণার্ত অনুভব করে এবং বার বার মুখ শুকিয়ে যায়। আক্রান্তরা অতিশয় দুর্বলতা, সার্বক্ষণিক ক্ষুধা, স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস, চোখে ঝাপসা দেখাসহ নানান সমস্যায় ভোগে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে এখন প্রতি ১১ জনে একজন ব্যক্তি ডায়াবেটিস আক্রান্ত। ২০১৪ সালে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি, যা ১৯৮০-তে আক্রান্তের তুলনায় ৪ গুণ বেশি।  বলা যায়, বিশ্ব এখন ডায়াবেটিসের ”ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের” ঝুঁকিতে।

কী কারণে ডায়াবেটিস হয়?

এটি বিভিন্ন কারণে হয়, যেমন- জিনগত অবস্থা, শল্যচিকিৎসা, ওষুধ, পুষ্টিহীনতা, ইনফেক্সন ও অন্যান্য অসুস্থতা।  কাদের ডায়াবেটিস হতে পারে? যে কেউ যে কোন বয়সে যে কোন সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে-
  • যাদের বংশে, যেমন-বাবা-মা বা রক্ত সর্ম্পকিত নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে
  • যাদের ওজন অনেক বেশী
  • যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোন কাজ করেন না
  • বহুদিন ধরে কর্টিনোল জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে

ডায়াবেটিস কি অনিয়ন্ত্রিত? না, একে নিয়ন্ত্রিণ করা যায়।

কিভাবে বুঝব ডায়াবেটিস আছে?

একজন রোগীর ডায়াবেটিস রোগ আছে কি না, সেটি দেখতে হলে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। একটি হলো খালি পেটে, আরেকটি হলো ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পরে। এ দুটো স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করে বলতে পারা যায় ডায়াবেটিস আছে কি না। এ ছাড়া, আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন থেকে নতুন আরেকটি পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। এটি হলো, হিমোগ্লোবিন এওয়ানসি; এটি একটি নতুন টেস্ট। এতে গত চার মাসের রক্তের শর্করার গড় পরীক্ষা করা হয়। এই গড় যদি ছয় দশমিক পাঁচ ভাগের উপরে থাকে, তাহলে তার ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরা হয়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মূল কিছু জিনিস রয়েছে। একে বলা হয়, ডায়েট (খাদ্যাভ্যাস), ড্রাগ (ওষুধ) এবং ডিসিপ্লিন (নিয়মানুবর্তিতা), একসাথে এই তিনটিকে বলা হয় ডিডিডি।

ডায়াবেটিস নির্দিষ্ট মাত্রার বাইরে গেলে তা শরীরের ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো ডায়াবেটিস প্রতিরোধও করে।

যে সকল খাবার ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে থাকেঃ

সবুজ চা: সবুজ চা মানুষের শরীরে ইনসুলিনের মতো কাজ করে; ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে এটি। কিন্তু বাজারে ভাল মানের সবুজ চা পাবেন কোথায়- এটাও একটা চিন্তার বিষয়। তবে নিরাপদ খাবারের অনলাইন শপ – খাসফুড আছে আপনার পাশে। খাসফুড থেকে অনালাইনে অর্ডার করুন সবুজ চা , একদিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে আপনার দোরগোড়ায়।
মাছ: গবেষণায় দেখা যায়, মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ইনসুলিনের সংবেদনশীলতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি গ্লুকোজের ঘনত্ব কমিয়ে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে। এতে চর্বিহীন প্রোটিন রয়েছে।
ডিমের সাদা অংশ: ডিম পেশি গঠনকারী খাদ্য। এতে উচ্চ মানের প্রোটিন রয়েছে। ডিমের সাদা অংশে উচ্চ মানের চর্বিহীন প্রোটিন এবং কম মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা ২ ধরণের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে এখন বাজারে নিন্মমানের ডিম এসেছে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। খাসফুড অনলাইন শপ থেকে অর্ডার করতে পারেন গুণগত মানসম্মত অর্গানিক ডিম ।
লেবু: লেবু ও লেবু জাতীয় ফল ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিন সি এর অভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে। তবে লেবু জাতীয় ফল খেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়। জাম্বুরা, কমলা, লেবু এবং লাইমস ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিনের মতো কাজ করে।
সবুজ শাক সবজি: সবুজ শাক সবজি ২ ধরনের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। পালং শাক, পাতা কপি, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুস পাতা ইত্যাদি খাবারে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। গবেষণায় বলা হয়, সবুজ শাক সবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
শস্য দানা: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শস্য দানা মানুষের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে। আবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে শস্য দানা। এই ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে ব্রাউন রাইস।
বাদাম: গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসের ঝুকি প্রায় ২১ শতাংশ পর্যন্ত কমায় চীনাবাদাম। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১ আউন্স আখরোট বা কাজুবাদাম ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিস্ময়করভাবে কাজ করে। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।

ডায়াবেটিসের সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

 ড্রাগ (ওষুধ) সম্পর্কে বললে এভাবে বলা যায়, একটি ভুল ধারণা যে ইনসুলিন নিলে আর কখনো ট্যাবলেট নেওয়া যাবে না। বেশী দরকারে ইনসুলিন, না হলে ট্যাবলেটে। ডিসিপ্লিন হচ্ছে নিয়মিত হাঁটা। আপনি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় হাঁটবেন। যেই গ্লুকোজগুলো আপনার শরীরে সংরক্ষিত অবস্থায় আছে সেগুলোকে পোড়ানো। যাঁরা ডায়াবেটিস আক্রান্ত তাঁদের দৈনিক কমপে ৪৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যয়াম করতে হবে।
চিনি বেশি খেলে ডায়াবেটিস হয়- এটি সত্য নয়। অনেকে দীর্ঘসূত্রী সর্দি-কাশিতে মধু উপকারী বলে দাবি করে আসছেন। যে কারণেই খাওয়া হোক না কেন ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় মধু খাওয়া কতটা এবং কিভাবে স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মৃদু বিতর্ক চলছে। তবে কোনো ডায়াবেটিস রোগী যদি মধু খান তবে তা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা মধু একেবারেই খেতে পারবেন না তা নয়। তবে যতটুকু মধু খাবেন, তার সমতুল্য পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য তার জন্য নির্ধারিত পরবর্তী বেলার খাদ্য হতে কম খেতে হবে।
বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রতিদিন অনেক অসাধ্য সাধিত হচ্ছে। প্রতিকুলতার সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকা মানুষের ধর্ম। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহন করলে এ রোগকে খুব ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রায় স্বাভাবিক কর্মঠ জীবন যাপন করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!