একটি নির্দিষ্ট বয়সকালের পূর্বে যেমন মেয়েদের মাসিক শুরু হয়না তেমনি একটি নির্দিষ্ট বয়সকালের পর মেয়েদের মাসিক বন্ধও হয়ে যায়, আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিভিন্ন কারণেও মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তাই এই ঘটনাকে এড়িয়ে না গিয়ে মাসিক বন্ধ হবার সাথে সাথে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।
প্রজননক্ষম নারীদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়াকে অ্যামেনোরিয়া বলা হয়ে থাকে। সাধারণত মেয়েদের ৮ থেকে ১৮ বছরের মধ্যবর্তী সময়ে প্রথম মাসিক দেখা দেয়। গড় হিসেবে ১২ বছর বয়সের মধ্যে অধিকাংশ মেয়েদের মাসিক শুরু হয়ে থাকে। কিন্তু ১৬ বছর হবার পরও মেয়েদের প্রথম মাসিক শুরু না হওয়াকে প্রাইমারি অ্যামেনোরিয়া বলে। অন্যদিকে নিয়মিত মাসিক থাকা অবস্থায় কোন মেয়ের পরপর তিন অথবা ততোধিক বার মাসিক না হলে সেটাকে সেকেন্ডারি অ্যামেনোরিয়া বলে। সাধারণত গর্ভাবস্থা ও দুগ্ধপানের সময় এই লক্ষণ দেখা দেয়। মেনোপজের পরেও মহিলাদের মাসিক হওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
মাসিকবন্ধ হবার কী কী কারণ থাকতে পারে?
- মুত্রথলিতে ইনফেকশন হলে।
- অনিয়মিত মাসিক হলে।
- গর্ভে সন্তান আসলে।
- শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমলে বা অতিরিক্ত মোটা হলে।
- হরমোন জনিত সমস্যা থাকলে।
- পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে।
- প্রজনন অঙ্গে কোন ধরণের শারীরিক সমস্যা থাকলে।
- শরীরে প্রয়োজনের থেকে কম ফ্যাট বা চর্বি থাকলে।
- হঠাৎ করে এবং দ্রুততার সাথে ওজন কমতে থাকলে মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কোন কোন বিষয়গুলো মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে?
বংশ অথবা পরিবার: বংশের অন্যান্য মহিলা সদস্যদের মাসিক বন্ধ হওয়ার সমস্যা থাকলে আপনারও এটি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
খাদ্য গ্রহণে সমস্যা: যে সকল মহিলাদের অ্যানোরেক্সিয়া (anorexia) বা বুলিমিয়ার (bulimia) মতো ইটিং ডিজঅর্ডার (Eating Disorder) আছে তাদের মাসিক বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ক্রীড়া অনুশীলন: কঠোর অনুশীলন করার ফলে মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সাধারণত কত শতাংশ মহিলার অ্যামেনোরিয়া হয়ে থাকে?
সাধারণত প্রজননক্ষম মহিলাদের ৫%-এরও কম এই সমস্যায় ভুগে থাকে। এছাড়া ১%-এর কম মহিলা প্রাইমারি অ্যামেনোরিয়ায় আক্রান্ত হয়। তবে শারীরিক-মানসিক চাপ, অপুষ্টি, অতিরিক্ত ব্যায়াম ও অসুস্থতার কারণেও ঋতুচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
মাসিক বন্ধ হয়ে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ?
যেহেতু অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও স্বল্প পরিমাণে খাদ্য গ্রহণের কারণে অ্যামেনোরিয়া হতে পারে, তাই কাজ করা ও বিশ্রাম গ্রহণের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে চলুন।
মানসিক চাপ ও দ্বন্দ্ব থাকলে সেগুলি কমানোর চেষ্টা করুন। যদি নিজে থেকে কমাতে না পারেন, তাহলে এ ব্যাপারে পরিবার, বন্ধু ও চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
ঋতুচক্রের পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখুন। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তা মেনে চলুন।
মাসিক শুরুর সময় মাসিকের স্থায়ীত্ব বা যেকোন সমস্যাপূর্ণ লক্ষণ দেখা দিলে তা লিখে রাখুন।