class="post-template-default single single-post postid-19724 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

শিশুর মানসিক বিকাশে যৌথ পরিবার

শিশুর মানসিক বিকাশে যৌথ পরিবার

শিশুর মানসিক বিকাশে যৌথ পরিবার

 

দিন বদলেছে, যুগ বদলেছে, সেই সঙ্গে বদলেছে পরিবারের কাঠামো। একটা সময় ছিল যৌথ পরিবারের বিশাল সংসারে শিশুরা বেড়ে উঠত। প্রয়োজনে পরিবারের একে অপরকে পাশে পেত সহজেই। বর্তমানে আর্থ-সামাজিক কারণে যৌথ পরিবার ভেঙে ছোট হয়ে যাচ্ছে। সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই চাকরি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এদিকে বাড়িতে একা ছোট শিশুর লালন-পালনের ভার পড়ে গৃহপরিচারিকার ওপর। এতে শিশুর অযত্ন আর অবহেলার সুযোগ থাকে। আবার মা চাকরি ছেড়ে বাড়িতে থাকলেও সমাধান হয় না। আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ভালো স্কুল বা অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় শিশু।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু গৃহপরিচারিকার পরিচর্যায় বড় হলে নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাদকাসক্ত হতে পারে। এ ছাড়া শিশুর খাওয়াদাওয়া ও স্বাস্থ্যের বিষয়টিও প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে থাকে। অভিভাবক ছাড়া শিশু একাকিত্বর মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে, যা তার মানসিক বিকাশে ক্ষতি করে। সত্যি বলতে এই একাকী নিঃসঙ্গ শিশুরা তাদের শিশুসুলভ সারল্য হারিয়ে ফেলে। কৃত্রিম ও অসামাজিক হয়ে ওঠে।

 

শিশুর মানসিক বিকাশে যৌথ পরিবার

এ ক্ষেত্রে যৌথ পরিবার শিশুর বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যৌথ পরিবারের বড় অবদান হলো, এসব পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুরা অনেকের আদর-ভালোবাসা পেতে অভ্যস্ত হয়। পরিবারের সবার কাছ থেকে স্নেহ-ভালোবাসা, মায়া-মমতা, শিক্ষাদীক্ষা পায়। এতে শিশুর মনে সহমর্মিতা, আদব-কায়দা, গুরুজনদের মান্য করা এবং শিষ্টাচার বোধ গড়ে ওঠে। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত দাদি-দাদা, নানি-নানা তাদের নানা কাজে সাহায্য করে। যেমন—স্কুল থেকে আনা-নেওয়া, হোমওয়ার্ক করানো, বেড়াতে নেওয়া, রূপকথার গল্প শোনানো। এসব তার মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। আরেকটি দিক হলো, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন পেশার মানুষ থাকে। সকালে নাশতার টেবিলে কিংবা রাতে খাবার টেবিলে সবাই নিজ নিজ গল্প করে। এতে শিশুর জ্ঞানজগত্ শিশুকালেই সমৃদ্ধ হয়। যৌথ পরিবার সমবায়ের জায়গা থেকে আর্থিক সুবিধা পায়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আর্থিক জীবনযাত্রার মান তারতম্য হলে অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ব্যক্তি সহজেই সমতা আনেন বা আনতে পারেন।

এটি ঠিক যে পুরনো প্রথাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কিছু নেই। সেটি ভাবাও ঠিক না। তবে নতুন এক সহায়ক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলে কিন্তু মন্দ হয় না। বর্তমান যৌথ পরিবার আগের মতো বিশাল নয়। এটা ছোট পরিবারের বর্ধিত রূপমাত্র। স্বামী-স্ত্রী, দুই বা এক সন্তান, শ্বশুর-শাশুড়ি, এক বা দুই দেবর-ননদ—সব মিলিয়ে সাত-আটজন। এই অল্পসংখ্যক সদস্য নিয়ে যৌথ পরিবার গড়া যেতে পারে। যেখানে এক ছাদের নিচে থাকবে তিন পুরুষ। সেখানে প্রবীণদের প্রয়োজন ফুরাবে না। শিশুরা পাবে সহায়ক শৈশব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!