মানুষ এখন ফ্যাশনপ্রেমী। নিজেকে একটু ফুটিয়ে তোলার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে! দুনিয়ার এই মিথ্যা মোহ মানুষকে ভুলিয়ে দেয় ধর্মীয় বিধি-নিষেধগুলোও। তেমনই একটি ট্রেন্ড টাখনুর নিচে কাপড় পরা, যা শরিয়তে কঠিকভাবে নিষিদ্ধ। দুঃখের বিষয় হলো, বেশির ভাগ মানুষই এই কঠিন গুনাহে লিপ্ত। পার্থক্য হলো, কেউ গুনাহ জেনে লজ্জিত, কেউ জেনেও এটিকে পুরনো চিন্তাধারা ভাবছেন, আবার কেউ জানেনই না।
অথচ অতিমাত্রায় ফ্যাশন কখনো কখনো ধ্বংসের কারণও হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, অথবা আবুল কাসেম বলেছেন, এক ব্যক্তি আকর্ষণীয় জোড়া কাপড় পরিধান করে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে পথ চলছিল; হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটির নিচে ধসিয়ে দেন। কিয়ামত পর্যন্ত সে এভাবে ধসে যেতে থাকবে। (বুখারি, হাদিস : ৫৭৮৯)
আমাদের উঠতি বয়সী ছেলেদের মধ্যে এ ধরনের অভ্যাস খুব বেশি দেখা যায়। সাধারণত তারা বিভিন্ন সিনেমার হিরোদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমনটি করে। এ ব্যাপারে তাদের সচেতন করা মা-বাবা, ভাই-বোনসহ সব আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবেরই দায়িত্ব।
অনেকের ধারণা, শুধু নামাজের সময়ই টাখনুর ওপর কাপড় উঠাতে হয়, অন্য সময় টাখনুর নিচেও পরা যায়। এটাও ভুল ধারণা। কারণ রাসুল (সা.) বলেছেন, ইজারের (লুঙ্গি) বা পরিধেয় বস্ত্রের যে অংশ পায়ের গোড়ালির নিচে থাকবে, সেই অংশ জাহান্নামে যাবে। (বুখারি, হাদিস : ৫৭৮৭)
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা টাখনুর নিচে কাপড় পরলে ধর্মের কী অসুবিধা? তার সরল উত্তর হলো, অসুবিধা ধর্মের নয়, অসুবিধা আমাদের নিজেদের। কারণ দুনিয়াতেও টাখনুর নিচে কাপড় পরার অপকারিতা কম নয়। পুরুষের পায়ের টাখনুতে থাকে টেস্টোস্টেরন নামক যৌন হরমোন, যা সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের প্রয়োজন। টাখনুকে ঢেকে রাখলে টেস্টোস্টেরন হরমোন শুকিয়ে যায়। যার প্রভাবে শরীরে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। শুক্রাণু কমে যায়। ফলে সহজে বাচ্চা হয় না। এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে মহামারি আকার ধারণ করছে। তা ছাড়া টেস্টোস্টেরনের অভাব মস্তিষ্ক ‘ঘোলাটে’ করে দেয়। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। স্মৃতিশক্তিও কমে আসে ধীরে ধীরে।
হয়তো এ কারণেই রাসুল (সা.) বিভিন্ন হাদিসে টাখনুর নিচে কাপড় পরাকে নিষিদ্ধ করেছেন।