class="post-template-default single single-post postid-11623 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

শান্তির বাণী সালামের প্রচলন শুরু হয়েছিল জান্নাতে

আল্লাহ তায়ালা প্রথম মানুষ আদম আঃ কে সৃষ্টি করে নির্দেশ দিলেন, ঐ যে বিরাট একদল ফেরেস্তা বসে আছে তাদের নিকট যাও এবং তাদেরকে সালাম কর। ফেরেস্তারা যে জবাব দেবে তা তুমি শুনে রাখ। কেননা এটি তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম (অভিবাদন) হবে। আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ মোতাবেক আদম আঃ ফেরেস্তাদের নিকট গেলেন এবং আসসালামু আলাইকুম বলে সালাম দিলেন। জবাবে ফেরেশতারা বললেন, ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। ফেরেস্তারা ওয়া রাহমাতুল্লাহ বৃদ্ধি করে জবাব দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)

মানব জাতির সূচনা কাল থেকেই একে অপরের সাক্ষাতে সালামের প্রচলন হয়েছে। কালক্রমে বিভিন্ন জাতি ধর্মে বিভক্ত হওয়ার কারণে তাদের অভিবাদনও ভিন্ন ভিন্ন শব্দে যার যার ইচ্ছামত পরিবর্তন হয়েছে। প্রত্যেক জাতির দেখা সাক্ষাতে কেউ বলে হ্যালো, কেউ বলে গুড মর্ণিং, গুড নাইট, কেউ বলে আদাব, কুর্নিশ, নমস্কার ইত্যাদি। এক জন অপর জনের প্রতি এই সম্ভাষণে তার ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালবাসা প্রকাশ পায়। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা আদম আঃ কে সম্ভোধনের যে বাক্যমালা শিক্ষা দিয়েছেন অন্যান্য জাতির সকল সম্ভাষণের চেয়ে তা শ্রেষ্ঠ, স্বতন্ত্র ও অতুলনীয়। তার মধ্যে সর্বোত্তম ভালবাসা, শ্রদ্ধা প্রকাশ পায় এবং সাথে সাথে অপর ভাইয়ের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা, রহমত ও বরকতের জন্য দোয়া করা হয়।

সালাম একটি উত্তম দোয়া। কারো জন্য এই দোয়া কবুল হয়ে গেলে সে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম হয়ে যাবে। তার দুনিয়ায় কোন পেরেশানী এবং আখেরাতে জাহান্নামের ভয় থাকবে না।

আল্লাহ তায়ালা আরোও বলেন, যখন তোমরা নিজ গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এটা হবে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র অভিবাদন। (সুরা নূর ৬১)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে দেখা করবে তখন সে যেন তাকে সালাম দেয়। অতঃপর তাদের দুজনের মাঝে গাছ, দেয়াল কিংবা পাথরও যদি আড়াল হয়, তারপর যদি আবারো তাদের সাক্ষাৎ হয় তাহলে যেন আবার সালাম দেয়। (রিয়াদুস সালেহীন)

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী সেই, যে প্রথমে সালাম করে। (আবু দাউদ)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তোমরা পরস্পরকে মহব্বত না করা পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন একটি বিষয় জ্ঞাত করব না, যাতে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা সৃষ্টি হয়? সাহাবাগণ বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল (সা.)। তিনি বললেন তোমাদের মধ্যে সালামের বহুল প্রসার ঘটাও। (আদাবুল মুফরাদ)

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামে সর্বোত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, (ক্ষুধার্তকে) খাদ্য দান করবে এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম দিবে। (বুখারী-মুসলিম)

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা দয়াময় আল্লাহর ইবাদত কর, মানুষদের আহার করাও, সালামের ব্যাপক প্রচলন কর তাহলে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করতে পারবে। (আদাবুল মুফরাদ)

আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইয়াহুদীরা তোমাদের কোন ব্যাপারে এতো বেশী ঈর্ষান্বিত নয় যতোটা তারা সালাম ও আমিনের ব্যাপারে ঈর্ষান্বিত। (ইবনে মাজা)

আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সালাম হল আল্লাহ তায়ালার নামসমূহের মধ্যে একটি নাম। তিনি দুনিয়াবাসীদের জন্য তা দান করেছেন। অতএব তোমরা নিজেদের মধ্যে ব্যাপকহারে সালামের প্রচলন কর। (মু’জামুল কবীর)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!