class="post-template-default single single-post postid-47528 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ছোটদের গল্প : মিষ্টি পরী ও রিশা

ছোটদের গল্প : মিষ্টি পরী ও রিশাছোটদের গল্প : মিষ্টি পরী ও রিশা লিখেছেন গাজী খায়রুল আলম

রিশা ও তিশা বান্ধবী। একই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে দুজন। রিশা খুব ভালো ছাত্রী, কিন্তু রিশার তুলনায় তিশা  কম মেধাবী। মাঝে মাঝে স্কুলে পড়া না পারলে ম্যাডাম তিশাকে বকা দেয়। যেটা দেখলে রিশার খুব মন খারাপ হয়। আজও তাই হয়েছে। ইংরেজি ম্যাডাম তিশাকে অনেক বকেছে। অনেকক্ষণ কেঁদেছে তিশা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো এই ছোট বয়েসে কোনো ভাষা খুঁজে পায়নি রিশা। স্কুল ছুটির পড়ে মন খারাপ করে বাসায় ফিরে।

বাসায় আসার সময় দেখতে পায় পাশের বাড়িতে খুব ঝগড়া চলছে। এই দৃশ্যটাও প্রতিদিন দেখতে হয় তাকে। চিৎকার, চেচামেচী করে আবার তারা নিরব হয়ে যায়। এসব কিছুই ভালো লাগেনা রিশার। মনে মনে ভাবে, এমন কোনো পৃথিবী কী নেই, যেখানে পড়া না পারলে ম্যাডাম কাউকে বকবে না। ছোট বেলা ‘মা’ যেভাবে আদর করে পড়ায় স্কুলের শিক্ষকরাও সেভাবে আদর করে পড়াবে। মানুষের মধ্যে থাকবে না হিংসা, বিদ্বেষ। একজনের বিপদে অন্যজন পাশে দাঁড়াবে। এমনটি চিন্তা করতে করতে দুচোখে নিদ্রা চলে আসে। তার স্বপ্নে ভেসে আসে এক মিষ্টি পরী। রিশার দিকে হাত বাড়িয়ে ডাকে সে। রিশা ভয় পায়। ভয়ে ভয়ে বলে,‘কে তুমি? তোমাকে তো আগে দেখিনি। তোমার পেছনে পাখা লাগানো কেন?’

‘পরী’ ছোট রিশার কথা শোনে হেসে হেসে বলে, ‘আমি মিষ্টি পরী। আমাকে ভয় পেওনা। আমিও তোমার মতো ছোট। তোমার মতো স্কুলে পড়ি। চলো আজ তোমার স্বপ্নের পৃথিবীতে নিয়ে যাব।’

‘কি বল তুমি, তুমি তো অনেক বড়। তুমি আমার মতো স্কুলে পড়বে কেন?’

‘আমি তোমাদের তুলনায় বড় হতে পারি। কারণ আমার বয়স প্রায় দুইশত বছর। কিন্তু আমি পরীদের মধ্যে ছোট। আমাদের যারা বড় তাদের বয়স দেড়হাজার বছর। চলো আমার স্কুলটা দেখবে। ভয়ের কিছু নেই। তুমি অনেক মজা পাবে।’

রিশা ভয়ে ভয়ে তার কাছে যায়। মিষ্টি পরী রিশাকে চোখ বন্ধ করতে বলে। রিশা চোখ বন্ধ করে। কিছুক্ষণ পড়ে চোখ খোলতে বলে। রিশা চোখ খোলে অবাক হয়। এতো সুন্দর স্কুল! রিশা কখনো এমন সুন্দর স্কুল দেখেনি। স্কুলের সামনে সুন্দর সুন্দর অনেক গুলো ফুল বাগান। তারপর অনেক বড় খেলার মাঠ। মাঠে ছোট ছোট পরীরা দলবেঁধে খেলা করছে। কেউ কেউ বসে বসে গল্প করছে। মিষ্টি পরীকে দেখে তার সহপাঠিরা এগিয়ে আসে। রিশাকে দেখে অনেকে হা করে তাকিয়ে থাকে। একজন রিশাকে বলে, ওমা, তুমিতো দেখতে অনেক মিষ্টি।

রিশা তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বলে, ‘তুমিও দেখতে অনেক মিষ্টি। ’

বইমেলায় শিশুদের জন্য বই

চলো আমাদের সাথে খেলবে।

রিশা বলে, ‘এখন নয়, তোমরা খেল। আমি তোমাদের স্কুলটা ঘুরে দেখি।’ মিষ্টি পরী রিশাকে তার ক্লাস রুমে নিয়ে যায়। রিশা ক্লাস রুমটি দেখে আরও অবাক হয়। কি সুন্দর ক্লাস রুম। দেয়ালে ফুল পাখিদের ছবি আঁকা। মজার মজার ছড়া লেখা। রুমের এক কোণায় অনেক গুলো খেলনা রাখা। আরও অনেক কিছু। রুমটাও অনেক পরিচ্ছন্ন। রিশা মিষ্টি পরীকে প্রশ্ন করে, ‘আচ্ছা তোমাদের স্কুলে পড়া না পারলে কী শিক্ষকরা মারে?’

‘না, মারবে কেন? তারা তো আমাদের অনেক আদর করে। পড়া না পারলে বুঝিয়ে দেয়।’

‘তোমাদের এখানে কি ঝগড়া, মারামারি হয়?’

‘না, এটাও হয় না। আমাদের পৃথিবীতে সবাই ভালো। কারও সাথে কারও কোনো দন্দ নেই। হিংসা বিদ্বেষ নেই। লোভী নেই। শুনেছি এগুলো তোমাদের পৃথিবীতে হয়। আমাদের বড়রা আমাদের ¯েœহ করে। ছোটরাও বড়দের সম্মান করে।’

‘তোমাদের পৃথিবীটা আসলেই সুন্দর। এমন একটা পৃথিবী যদি আমাদের মানুষের জন্য হতো। ’

আসলে পৃথিবীটাকে নিজেরাই সুন্দর করতে হয়। এটা তোমরাও পারবে। তোমাদের মধ্যে যে হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, ঝগড়া  আছে, এগুলো না থাকলে দেখবে তোমাদের পুথিবীটাও অনেক সুন্দর। মানুষে প্রতি মানুষের ভালোবাসা , সম্মান, মায়া, ¯েœহ বোধ থাকলে তোমরাও অনেক সুখী হবে।

হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলেছ।

চলো তোমাকে আমাদের শহরটা ঘুরে দেখাই।

রিশা চলো বলে দুজনে হাটছে , এমন সময় মায়ের ডাকে রিশার ঘুম ভেঙে যায়। রিশা তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,‘ মা আমাদের পৃথিবীটা কী এমনই থাকবে। মানুষে মানুষে দন্দ, রেষারেষি। মানুষের প্রতি মানুষের মায়া কি কখনো জন্মাবে না?’

‘হবে মা। তুমি সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হও। মানুষকে ভালোবাসতে শিখ। তোমার মতো করে অন্যদেরকে বুঝাও। দেখবে আমাদের পৃথিবীটা একদিন অনেক সুন্দর পৃথিবী হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!