class="post-template-default single single-post postid-50525 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ছোটদের সায়েন্স ফিকশন গল্প : বোতল মামা সিরিজ : আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

ধ্রুব নীলের লেখা ছোটদের সায়েন্স ফিকশন গল্প : বোতল মামা সিরিজ : আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

 

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

ধ্রুব নীল

ছোটদের সায়েন্স ফিকশন বোতল মামা সিরিজ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

লাল সোয়েটারের সঙ্গে কালো প্যান্ট। মাথায় ক্যাপ। কোমরে একটা বেল্টও আছে, যদিও ওটা বেশ ঢিলে হয়ে আছে। জুতো জোড়াও একদম চকচকে। সবমিলিয়ে বেশ গোলমেলে লাগছে পায়েলের। বোতল মামার এমন পোশাকের সঙ্গে সে মোটেই পরিচিত নয়। তবে দেখতে খারাপও লাগছে না। চুলগুলো অবশ্য আগের মতোই। আমাজনের গহীন জঙ্গল। পাখি ছেড়ে দিলে ওটা নির্ঘাৎ ওড়ার কথা ভুলে যাবে।
সোফায় বেশ আমুদে ভঙ্গিতে বসে আছেন বোতল মামা। পায়েলের দিকে তাকিয়ে বিজয়ীর মতো হাসছেন।
– বিশ্বজয় করে এসেছ মনে হচ্ছে।
– বিশ্ব! বল মহাবিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। হাহাহা।
– ঘটনা খুলে বল। আবার কী বানালে?
পায়েল খুব একটা কৌতুহল দেখাচ্ছে না। মামা প্রতিবারই কিছু না কিছু বানায় এবং প্রতিবারই সেটা হয় তার সেরা আবিস্কার।
– বুঝলি! আমার জীবনের সেরা আবিস্কারটা করে ফেললাম! একেবারে ইউনিক আবিস্কার।
– ও। কোথায় সেটা?
– আসবে আসবে। একটু পরেই বাসায় ঢুকবে। রিকশা ভাড়া দিচ্ছে। ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে ঢুকবে।
পায়েল হাই তুলল। বোতল মামা আবিস্কারের ব্যাপারটা কখনই ঠিকমতো খুলে বলতে পারে না। শুরুটা হয় এমন হযবরল।
– কী ঢুকবে বললে?
– একটা রোবট বুঝলি। একদম ক্লোন। কেউ বুঝতে পারবে না। আমার এসিসট্যান্ট।
‘একটা রোবট হলো তোমার সেরা আবিস্কার?’ পায়েল কিছুটা অবাক হলো। ‘আমি তো ভেবেছিলাম বুঝি ইন্টার-গ্যালাক্টিক টিভি সেন্টার বানিয়েছ।’
‘আরে ধুর। কী যে বলিস। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানে ঐ যে, বাংলায় যাকে বলে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, হ্যাঁ! ওটার একেবারে চুড়ান্ত দেখে ছেড়েছি। আবিস্কারটা দেখলে তোর টাশকি লেগে যাবে। এখুনি আসবে দাঁড়া।’
পায়েল সবে ঘাড় ঘুরিয়ে টিভির দিকে চোখ ফেরাতে যাবে, ঠিক তখুনি দরজাটা খুলল কেউ। সত্যিকার অর্থে টাশকি লাগা কাকে বলে তা এতোদিন জানা ছিল না পায়েলের। এবার তা সত্যিই টের পেল। বোতল মামা আসলেই একটা জিনিয়াস। আবিস্কারের নমুনা দেখে রীতিমতো গা শিউরে উঠলো পায়েলের।
– একি! মামা! এ দেখি তুমি! এ্যাঁ! তুমিই তো!
দরজা খুলে দুহাতে দুটো ব্যাগ হাতে যিনি ঢুকলেন, তিনি অবিকল বোতল মামার মতো দেখতে। পার্থক্যটা শুধু, ব্যাগ হাতে থাকা বোতল মামার গায়ে একটা হাফ হাতার টিশার্ট ও পরনে জিন্সের প্যান্ট।
সোফায় বসে থাকা মামা বললেন, ‘দেখলি তো! এর কথাই বলছিলাম তোকে। আমার এসিসট্যান্ট রোবট। নাম অ্যালেক্স।’
দরজা দিয়ে যিনি ঢুকলেন তাকে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত দেখাচ্ছে। পায়েলের দিকে তাকিয়ে অবিকল সেই বোকা বোকা হাসিটাই দিলেন তিনি। তারপর একেবারে বোতল মামার কণ্ঠেই বললেন, ‘কিরে! হা করে দেখছিস কী? অ্যালেক্সকে দেখে ঘাবড়ে গেছিস? ও হচ্ছে আমার এসিসট্যান্ট রোবট। অবশ্য একটু অলস টাইপের। কাজকম্ম করতে চায় না।’
পায়েল নিখুঁতভাবে একটা ঢোক গিলল। ঘাবড়ে যাওয়ার বিষয়টি আপাতত গোপন রাখতে চায়। গোলমেলে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করলো কিছুক্ষণ। তার আগেই লাল সোয়েটারওয়ালা বোতল মামা তড়াক করে লাফিয়ে উঠলেন। তাকেও খানিকটা হতভম্ব দেখাল। পায়েলের দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলেন। ঠোঁট খানিকটা বেঁকে গেল শুধু। বললেন, ‘বুঝলি, একেই বলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। একদম মানুষের মতো চিন্তাভাবনা। তবে ও কিন্তু ভাল করেই জানে যে, ও একটা রোবট। আমি চাইলেই তাকে বন্ধ করে দিতে পারি।’ এই বলেই প্যান্টের পকেটে হাত ঢোকালেন প্রথম বোতল মামা।
পায়েলের বিষ্ময় ক্রমে বেড়েই চলেছে। এদিকে টি-শার্ট গায়ে দেয়া বোতল মামা বিরক্ত মুখে হাতের ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। আড়চোখে একবার সোয়েটারওয়ালা বোতল মামার দিকে তাকালেন। একটু হাসলেনও।
সোয়েটারওয়ালা বোতল মামার মুখ শুকিয়ে কাঠ। পায়েলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওকে বন্ধ করার রিমোট কন্ট্রোলারটা হারিয়ে ফেলেছিরে!’
পায়েল এবার টি-শার্টওয়ালা মামার দিকে তাকালো। চোখে একগাদা ভয় আর প্রশ্ন। ভীষণ দ্বিধার মধ্যে পড়ে গেছে।
দ্বিতীয় বোতল মামা হাসিমুখে বললেন, ‘রিমোটটা সে খুঁজে পাবে না, কারণ ওটা আমার কাছে।’ এই বলে প্যান্টের ডান পকেটে হাত ঢোকালেন তিনি। ঝটপট বাম পকেটেও হাত ঢোকালেন। চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ। ‘একি কাণ্ড! আমার কাছেও তো নেই! গেল কোথায়!’ প্রথম বোতল মামার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালেন টি-শার্ট ওয়ালা বোতল মামা। ‘নিশ্চয়ই তুমি চুরি করেছ অ্যালেক্স!’
-অ্যালেক্স! আমি অ্যালেক্স? তুমি অ্যালেক্স! আমি মানুষ। আমি পায়েলের বোতল মামা!
– না, তুমি নও। কারণ তুমি একটা রোবট। ইউ আর আ রোবট! আর ও বি ও টি রোবট! বুঝলে!
ধপ করে আবার সোফায় বসে পড়লেন সোয়েটারওয়ালা বোতল মামা। পায়েল এতোক্ষণে বুঝতে পেরেছে ব্যাপারটা। আসল ও নকল বোতল মামায় প্যাঁচ লেগে গেছে। দারুণ প্যাঁচ! তবে তার আগে ঝগড়া থামানোটা জরুরি। তাই পায়েল বলল, ‘কে আসল কে নকল সেটা পরে দেখা যাবে। আগে দুজনকেই চা দিই।’
একথা শুনে দুজনেরই মুখে খুশির ঝিলিক। পায়েল হতাশ। ভেবেছিল চায়ের কথা শুনে আসল বোতল মামাই লাফিয়ে উঠবে। ব্যাপারটা বুঝতে পারলো দুজনই। সোয়েটার বোতল মামা বললেন, ‘বুঝেছি, তোর ধারণা চায়ের কথা শুনে শুধু আমিই খুশি হবো, তাই না! আসলে অ্যালেক্সকে আমি এমনভাবে তৈরি করেছি, যেন ও মানুষের তৈরি সব খাবারই খেতে পারে। খাবার থেকে বিদ্যুতও তৈরি করতে পারবে।’
‘স্টপ ইট অ্যালেক্স!’ চেঁচিয়ে বললেন টি-শার্ট বোতল মামা। ‘পায়েল যা চা নিয়ে আয়, হতচ্ছাড়া রোবটের কথা শুনিস না।’ পায়েল বোকার মতো দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো। বাবা-মা বাসায় নেই। শপিংয়ে গেছে। ফিরতে সন্ধ্যে হবে। তার আগেই নকল বোতল মামাকে চিনতে হবে। তা না হলে বিশাল হইচই শুরু হয়ে যাবে।
কিচেনে ঢুকে চায়ের পানি বসিয়ে ভাবতে লাগলো পায়েল। দুজনের মধ্যে একজন অবশ্যই রোবট। কিন্তু কিভাবে প্রমাণ করবে? চিমটি কেটে দেখবে? নাহ, ব্যাথা না পেলেও দেখা যাবে আসল রোবট চেঁচিয়ে উঠছে। চা নিয়ে ড্রয়িং রুমে গেল পায়েল। দেখলো দুজনই সোফায় বসে মাথা নিচু করে আছে। দুজনই ক্লান্ত। তবে একজনের ক্লান্তিটা নকল। কিন্তু কে সে?
চা রাখতে রাখতে পায়েল নিচু স্বরে বলল, ‘মামা চা।’ দুজনই হাত বাড়িয়ে দুটো কাপ নিলো। চিন্তিত মুখে দুজনই চুমুক দিল কাপে। পায়েল খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে দুজনকে। অবিকল একই রকম নাক মুখ। টি-শার্টওয়ালা বোতল মামা কাপ রেখেই লাফিয়ে উঠলেন। ‘ইউরেকা! পেয়েছি!’ পায়েলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘শোন, একবার আমরা স্পেসশিপে চড়ে মঙ্গলে গিয়েছিলাম মনে আছে?’ পায়েল উপর-নিচ মাথা নাড়লো। ‘হুম, সেখানে আমরা এলিয়েনদের কী করে কাবু করেছিলাম মনে আছে তো?’ পায়েল বলল, ‘হ্যাঁ মনে আছে।’ টি-শার্ট বোতল মামা বিজয়ীর আমুদে কণ্ঠে বললেন, ‘কিন্তু অ্যালেক্স তো সেটা জানে না।’ সোয়েটার বোতল মামা চোখ কুঁচকে টি-শার্ট বোতল মামার দিকে তাকালেন। বললেন, ‘পায়েল, শোন, তোকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। আমার মস্তিষ্কের একটা বড় অংশের কপি করে ওর ভেতর দিয়ে দিয়েছি। আমার অনেক স্মৃতিই ও জানে। আর হ্যাঁ, মঙ্গলে আমরা ছড়ায় ছড়ায় এলিয়েনদের কাবু করেছিলাম।’
প্রচণ্ড হতাশ হলেন টি-শার্ট মামা। আবার সোফায় বসে পড়লেন। পায়েলের দিকে কাতর দৃষ্টিতে তাকালেন। ভাবখানা এমন, এবার তুই একটা কিছু কর।
পায়েল ভয়ংকর গতিতে ভাবছে। বুঝতে পারছে তাড়াতাড়ি আসল বোতল মামাকে বের করতে না পারলে বিপদ বাড়বে। ‘আচ্ছা, তোমাদের মধ্যে যে রোবট, তার পেটের ভেতর নিশ্চয়ই নাড়ি-ভুড়ি থাকবে না, থাকবে একগাদা তার আর সার্কিট।’
একথা শুনে দুজনেরই মুখে ভয়ের ছাপ ফুটে উঠলো। সোয়েটারওয়ালা মামা বললেন, ‘ওরে বাবা! তারমানে তুই এখন আমাদের অপারেশন করে দেখবি! তাহলে বাবা আমিই রোবট!’
‘উঁহু! পায়েল, ও কিন্তু তোকে কনফিউজড করে দিচ্ছে। তোকে বাধ্য করছে বিশ্বাস করতে যে ওই আসল বোতল মামা।’
পায়েল আসলেই মহাদ্বিধায় পড়ে গেছে। রোবট আর মানুষ পরীক্ষা করতে গিয়ে আবার যদি আসল মামার অপারেশন করে ফেলে তাহলে তো মুশকিল।
সোয়েটার বোতল মামা বললেন, ‘আচ্ছা, তুই প্রশ্ন কর। আমরা উত্তর দিই।’ একথা শুনে টি-শার্ট মামা নড়েচড়ে বসলেন। আরেকজনের প্রস্তাবে বোধহয় তিনিও রাজি। পায়েলও উত্তেজিত। চেয়ার টেনে বসে হাল্কা কাশি দিয়ে শুরু করে দিল প্রশ্নোত্তর পর্ব।
– একসঙ্গেই উত্তর দেবে কিন্তু। হুমম, বলতো দেখি কুসুমপুরে তোমার যে বন্ধু থাকে তার নাম কী?’
দুজনই একসঙ্গে উত্তর দিল, ‘বল্টু।’
– আচ্ছা দ্বিতীয় প্রশ্ন, বোতল মামার তৈরি প্রথম রোবটটার নাম কী?
– মন্টু!
এবারও দুজন একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলো। সোয়েটারওয়ালা মামা বললেন, ‘পায়েল এভাবে হবে না। আমার স্মৃতির কপি করা আছে অ্যালেক্সের ভেতর। ও প্রায় সবই জানে।’ সঙ্গে সঙ্গে চোখ রাঙিয়ে তার দিকে তাকালো টি-শার্ট মামা। তবে কিছু বললেন না।
পায়েলের মনের মধ্যে হুট করে কী যেন এসে আবার চলে গেল। দুই মামার ঝগড়া তার কানে ঢুকছে না। সে ভাবছে বোতল মামার আবিস্কৃত প্রথম রোবট মন্টুর কথা। মন্টুর একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। হুম…। মনে হচ্ছে একটা উপায় খুঁজে পেল পায়েল।
– আচ্ছা, তোমাদের মধ্যে একজন তো নিশ্চয়ই আমার আসল মামা।
দুজনই চোখ কুঁচকে পায়েলের দিকে তাকালো। পায়েল ইচ্ছে করে তার চোখ-মুখ বেশ শক্ত করে রেখেছে। কেননা, ভাবসাব দেখে যদি আবার রোবট বোতল মামা তার প্ল্যান বুঝে ফেলে! তাহলে সর্বনাশ। আসল মামাকে খোঁজার আর কোনো উপায় থাকবে না।
পায়েল দুজনকেই বেশ সূক্ষ¥ভাবে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলো। দুই মামাই হা করে তাকিয়ে আছে তার দিকে। না জানি কী ভাবছে পায়েল!
‘আচ্ছা!’ নীরবতা ভাঙলো পায়েল। ‘একটা ধাঁধার সমাধান করে দাও তাহলে।’
টি-শার্ট মামা বললেন, ‘যে করতে পারবে, তাকেই আসল মামা বলবি? এ কেমন কথা!’ সোয়েটার মামাও চিন্তিত। তিনি বললেন, ‘আচ্ছা আগে ধাঁধাটা বল শুনি।’
পায়েল বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল, ‘গভীর সমুদ্রে একটি জাহাজ পড়েছে জলদস্যুর খপ্পরে। জাহাজের চারদিকেই ঘিরে আছে দস্যু। জাহাজের ক্যাপ্টেন ওয়্যারলেসে সাহায্য চাইছে।’ পায়েল একটু দম নিল। এদিকে দুজনই টানটান উত্তেজনা নিয়ে শুনছে। পায়েল বলল, ‘তো ঐ জাহাজের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল এক অপারেটরের। ক্যাপ্টেন বলল, আমরা বিপদে পড়েছি। আমাদের দক্ষিণে জলদস্যুর জাহাজ। একথা শুনে অপারেটর বলল, ঠিকাছে জাহাজকে পুরোপুরি পূর্বদিকে ঘুরিয়ে নিন। ক্যাপ্টেন তার কথামতো জাহাজটিকে পুরোপুরি বাঁ দিকে ঘুরিয়ে নিল। কিন্তু সেদিকেও শত্র“। ক্যাপ্টেন বলল, এখন? অপরপ্রান্ত থেকে জবাব এলো, এবার পুরোপুরি উত্তরে ঘুরিয়ে নিন। ক্যাপ্টেন তাই করলো। কিন্তু তারপরও শত্র“। অপারেটরের কথামতো ক্যাপ্টেন জাহাজটিকে এবার পুরোপুরি পশ্চিমে ঘুরিয়ে নিল। কিন্তু একি! সেদিকেও জলদস্যু! অপারেটরের কথামতো ক্যাপ্টেন আবার পুরোপুরি বামে অর্থাৎ দক্ষিণে ঘুরিয়ে নিল জাহাজ। এরপরও যখন শত্র“ আসতে থাকলো, তখন ক্যাপ্টেনকে ধমক দিয়ে অপারেটর বলল, কী মশাই! আপনাকে না প্রথমেই বললাম পূর্বদিকে ঘোরাতে! এখনো একদিকেই আছেন দেখছি! এখন তোমরা বল, ক্যাপ্টেন কী করবে?’
হো হো হো করে হেসে উঠলো টি-শার্ট গায়ে দেয়া বোতল মামা। হাসির চোটে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। আর লাল সোয়েটার গায়ে দেয়া মামা চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘ক্যাপ্টেন এরই মধ্যে তিনশ ষাট ডিগ্রি ঘুরে এসেছেন। তার মানে তিনি চাইলেও বাঁচতে পারবেন না। একেকবার দিক পাল্টানো মানে নব্বই ডিগ্রি করে ঘোরা হয়েছে।’
পায়েল তার আসল বোতল মামা পেয়ে গেছে। তার মুখে স্বস্তির ছাপ। গভীর মনযোগ থাকা সত্ত্বেও যে কিনা কৌতুক শুনে হেসে উঠতে পারে সে আসল মানুষ না হয়ে পারে না। যতোই বুদ্ধি থাকুক, কৌতুকের মজা বুঝে হেসে উঠতে রোবটের কিছুটা সময় লাগবেই। কারণ পায়েল কোনো ধাঁধা বলেনি। সে একটা কৌতুক শুনিয়েছে মাত্র। আর তাতেই টি-শার্ট গায়ে দেয়া আসল বোতল মামা হো হো করে হেসে উঠেছে।
সোয়েটার গায়ে দেয়া রোবটটা ভালই বেকায়দায় পড়েছে। তার দিকে তাকিয়ে এখন পায়েল ও বোতল মামা মিটিমিটি হাসছে। রোবটটাও বুঝতে পারছে না কী হয়েছে। পায়েল বলল, ‘তুমি ধরা পড়েছ অ্যালেক্স। এখন যদি অস্বীকার কর, তাহলে ধরে বেঁধে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবো।’ লাল সোয়েটার গায়ে বোতল মামারূপী অ্যালেক্স মিন মিন করে বলল, ‘স্যরি স্যার। ভুল হয়ে গেছে।’
এবার আসল বোতল মামা পায়েলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এটাই হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স! কখনই অরিজিনাল হতে পারবে না! বুঝলি!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!