জোবায়ের ফারুকের স্ট্যাটাস : ১০/১৫ হাজার টাকা দিয়ে যাদের সংসার চলে তাদের কেউ একজনকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, লাস্ট কবে গরুর মাংস খাইছেন? সে উত্তর দিবে গত কোরবানির ঈদে।
এরপর জিজ্ঞাসা করেন, আপনার এলাকায় ফলের দোকান কোন দিকে? সে আমতা আমতা করবে। কারণ ফলের দোকানে যাওয়ার রাস্তাটা সে ভুলে গেছে অনেক আগেই।
সারা বছরে কিছু আম- কাঁঠাল ছাড়া আর কোন ফল তাদের কপালে জোটে না। লিচুর দোকানের পাশ দিয়ে তারা মাথা নিচু করে হেঁটে যায়। আপেল- কমলা- আঙুরের ঘ্রাণ তারা অনেক আগেই ভুলে গেছে।
মাছে- ভাতে বাঙালী ইলিশ মাছ এখন স্বপ্নেও দেখে না। রুই- কাতলাও এখন দিবাস্বপ্নের মত। ৭০০ শত টাকা কেজি শিং মাছ এখন সারাজীবনে একবার কেনা হয়। সেটাও বাড়ির নারী সদস্যের সিজারের পর। ডাক্তার বলে দেয় রক্ত বাড়াইতে একটু শিং মাছ টাছ খাওয়ান। হ্যা, তারাও মাছ খায়। ঘাস টাইপের সস্তা তেলাপিয়া আর পাঙ্গাস মাছ।
দাম এত কেন? এইটা জিজ্ঞাসা করবেন? সেই উপায় নাই। দোকানদারদের রেডিমেড উত্তর আছে। তারা বলবে, বেতন বাড়ছে, বেতন ডাবল হইছে। অথচ বেতন বাড়ছে মাত্র ৪% মানুষের। সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন যেদিন ডাবল করা হল তার আগের সপ্তাহে গরুর মাংস ছিল ৩৫০ টাকা। বেতন ডাবলের ঘোষণার পর হল ৫০০। আর এখন কিনতে গেলে লাগে ৬০০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি, তেলাপিয়া- পাঙ্গাসের ছোট ছোট পিসও একদিন হয়ত সাধ্যের বাইরে চলে যাবে।
তারা বলে দেশ দুই দিন পর মালায়েশিয়া হবে, তারপর সিংগাপুর- দুবাই হবে। অথচ এভাবে চলতে থাকলে, আমাদের চোখের সামনেই দেশটা একদিন সোমালিয়া হয়ে যাবে।
মাননীয় সরকার,
অনেক তো হেফাজত- গণজাগরণ, আস্তিক- নাস্তিক, জামাতি- বামাতি খেলা হোল। এবার অন্তত কিছু সাধারণ মানুষের জন্য খেলেন। আমাদের জন্য ব্যাটিং করেন। আমাদের খেয়ে পরে বাঁচতে দেন।
চালের দাম সাধ্যের মধ্যে এনে দেন। সপ্তাহে একদিন অন্তত ভাল- মন্দ খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, ফলের দোকানে রাস্তাটায় যাওয়ার সুযোগ করে দেন।
ভরসা অটোমেটিক চলে আসবে।