class="post-template-default single single-post postid-49509 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

নিয়মের ধজা ওড়াতে একশ বছর আগে এসেছিল দাদাইজম

কোনও কিছু গোছালো নয়। ভীষণ আগোছালো, যেন একটা কিছু বলতে চায়, আবার চায় না। চিৎকারের কারণে কান পাতা দায়। দর্শক, শ্রোতা কিংবা পাঠককে সেটা থেকে কিছু একটা বুঝে নিতে হয়। না বুঝলেও ক্ষতি নেই। কী হতে কী হয়ে যাবে তা কেউ জানে না। একটা কিছু হলেই হয়, না হলেও মন্দ নয়। আর এই গোলমেলে হওয়া না হওয়ার মাঝেও যে একটা নীরব-সরব বার্তা থাকে সেটাই ছিল দাদাইজম নামের এক শৈল্পিক বিপ্লবের অংশ। যার জন্ম আজ থেকে ঠিক একশ বছর আগে। 

dadaism painting

দাদাইজম কী? এর পরিশীলিত গোছালো কোনও সংজ্ঞা নেই। কারণ দাদা-বাদ মানেই হলো যাবতীয় গোছালো নিয়মকানুন ভেঙে দাও। কারও কোনও সংজ্ঞার তোয়াক্কা করো না। কিন্তু শিল্পের নামে কোনও বেলেল্লেপনা চলবে না এ ধারায়। মানে নিয়মের বাইরে যে জগত, সে জগতেও শিল্পের ধ্রুবকগুলোকে থাকতে হবে প্রায় অপরিবর্তিত। তাই কেউ যদি দাদাইজমকে ধারণ করে একটা কিছু ঘটাতে চান- হোক না সেটা ছবি আঁকা, কবিতা কিংবা নাটক সিনেমা, তাকে শিল্পের কিছু গণ্ডিকে সালাম জানিয়েই এগোতে হবে।

দাদাইজমের জন্ম জুরিখে। তারিখটাও নির্দিষ্ট। ১৯১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। হুগো বল, ট্রিস্টান জারা ও মার্সেল জানকো একত্রিত হয়েছিলেন শহরের এক পানশালায়। শুরুর আইডিয়া ছিল এক ছাদের তলায় একটি পানশালা, থিয়েটার, গ্যালারি ও ক্লাব তৈরি। প্ল্যানমতো হয়েও গেল। পারফরমেন্সের কোনও আগামাথা ছিল না সেখানে। কেউ কবিতা আবৃত্তি করছে তো কেউ পারফরমেন্স আর্ট নিয়ে মত্ত। তবে সুরের গোড়া ছিল এক- বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ। যুদ্ধ থামাও! প্রেম করো, গান গাও, কবিতা লেখো, কাপড় খুলে ধেই ধেই করে নাচো।

সমাজের চোখে এমন বিপ্লবের সারথীরা মুহূর্তে হয়ে গেলেন বিশৃঙ্খল দল। নামটাও লুফে নিলেন দাদাইজমের অনুসারীরা। শিল্পের খাতায় তাদের পরিচয় হয়ে গেল অ্যানার্কিস্ট। ক্রমে এই অ্যানার্কিস্টরা হয়ে উঠলেন মানবতার ভ্যানগার্ড। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরই ওই অ্যানার্কিস্টদের দল একত্রিত হয় জুরিখে। বিশ্বের নানা প্রান্তের শিল্পীরাও আসে সেখানে। বিশৃঙ্খলার শিল্প দিয়ে একযোগে যুদ্ধের প্রতিবাদ জানালেন সবাই।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হতেই শিল্পীরা ছড়িয়ে দিতে লাগলেন দাদাইজম। প্যারিসে এ ধারার প্রচারে অন্যতম ভূমিকা রাখলেন ট্রিস্টান জারা ও অদ্রেঁ ব্রেটন। হ্যানোভারে নিজের মতো করে আরেকটা দাদাইজমের সূত্রপাত ঘটালেন কুর্ট শিটার্স।

তিনি তার নিজের এলোমেলো ধারার নাম দিলেন মার্জ। বার্লিনের দাদাইস্টদের শৈল্পিক আক্রমণের শিকার হলো সেখানকার গির্জা ও সরকার। পরে প্যারিসের দাদাইজমের একটা ধারা চলে গেল সুররিয়েলিজমের দিকে। আর এতে করে মূল আন্দোলনটা ক্রমে ফিকে হয়ে গেল। যারা তাদের নিজেদের মতো করে নিজেদের ভেতর স্বাধীন খেপাটে অ্যানার্কিটাকে জিইয়ে রেখেছেন তারা আর সেভাবে একতাবদ্ধ হওয়ারও প্রয়োজন বোধ করলেন না্। তবে একশ বছরেও হারিয়ে যায় দাদাইজমের দাদাগিরি। এ মাস ব্যাপী জুরিখসহ বিশ্বের বিভিন্ন জাদুঘরে চলবে যুগে যুগে দাদাইজমের নানান শিল্পকলার প্রদর্শনী ও কবিতা চক্র।

সূত্র: ডিডাব্লিউ ডট কম

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!