class="post-template-default single single-post postid-12758 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

গভীর সমুদ্রে ডাক বাক্সে চিঠি জমা হয় হাজার হাজার!

আজকাল ই-মেইল, মেসেজ, হোয়াট্স্যাপ-এর যুগে চিঠির প্রচলন নেই। লাল রঙের, গোল মাথাওয়ালা ছোট থামের মতো দেখতে সেই ডাক বাক্স যা একটা সময় শহরের অলিতে গলিতে দেখা যেত, তা এখন ‘ভ্যানিস’ হয়ে গেছে।

কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও এমনই একটি লাল, গোল মাথাওয়ালা ডাক বাক্স হয়ে উঠেছে হাজার হাজার পর্যটকদের মূল আকর্ষণ। হাজার হাজার চিঠি নিয়মিত জমা পড়ে এই ডাক বাক্সে। এই বাক্সে চিঠি ফেলতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটকদরা ছুটে আসেন প্রতি বছর। ভাবছেন, ব্যপার কী! কী এমন বিশেষত্ব রয়েছে এই ডাক বাক্সে?

আসলে এই ডাক বাক্সটি রয়েছে সমুদ্রের গভীরে। এই ডাক বাক্স রয়েছে জাপানের সুসামি শহরে। প্রতি বছর কয়েকশো পর্যটক ‘ডিপ সি ডাইভিং’-এ এই ডাক বাক্সের টানেই ছুটে আসেন এখানে। জাপানের এই শহরে মূলত মৎস্যজীবী মানুষের বাস। প্রায় পাঁচ হাজার মৎস্যজীবী এখানে বসবাস করেন। ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে এখানে ‘কুমানোকোদো’ ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে পর্যটন প্রসারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর সেই সময় এক প্রবীণ পোস্টমাস্টারের পরামর্শ অনুযায়ী ‘ডিপ সি ডাইভিং’-এর পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। আর এরই প্রধান অঙ্গ হিসেবে সমুদ্রের গভীরে বসানো হয় এই ‘আন্ডার ওয়াটার পোস্টবক্স’।

সমুদ্র সৈকত থেকে ১০ মিটার দূরে এবং ৩২ ফুট গভীরে বসানো হয় ডাক বাক্সটি। ১৯৯৯ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার চিঠি পড়েছে এই ডাক বাক্সে। কিন্তু ভাবছেন, পানির তলায় চিঠিপত্র টিকবে কী করে? স্থানীয় দোকানে পাওয়া যায় বিশেষ ওয়াটারপ্রুফ কাগজ, খাম আর বিশেষ মার্কার পেন। এই মার্কার পেন দিয়ে ওয়াটারপ্রুফ কাগজে চিঠি লিখে পানির নীচে গিয়ে নিজেদের চিঠি পোস্ট করেন পর্যটকরা। নির্দিষ্ট সময় পর পর পোস্টাল ডাইভাররা সেই চিঠিগুলি তুলে এনে সেগুলিকে পাঠিয়ে দেন স্থানীয় ডাকঘরে। এর মোটামুটি এক সপ্তাহের মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয় চিঠিগুলিকে।

ছ’ মাস পর পর ডাকবাক্সটি তুলে আনা হয় রং আর মেরামতির জন্য। দু’টি ডাকবক্স এ ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রেখে আসা হয় সমুদ্রের তলায়। ২০০২ সালে ‘ডিপেস্ট আন্ডার ওয়াটার পোস্টবক্স’ হিসেবে গিনেস রেকর্ডের বইয়ে জায়গা করে নেয় সুসামির এই ডাক বাক্সটি। তবে সুসামির এই ডাক বাক্সটিই বিশ্বের একমাত্র ‘আন্ডার ওয়াটার পোস্টবক্স’ নয়। প্রশান্ত মহাসাগরের ভানুয়াতো দ্বীপরাষ্ট্রে পর্যটক টানতে প্রথম শুরু হয়েছিল আন্ডারওয়াটার পোস্ট বক্স। তারই অনুকরণে জাপানের সুসামিতে তৈরি হয় এই ‘আন্ডার ওয়াটার পোস্টবক্স’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!