বাড়ির কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে প্রচুর গান, ভিডিও, ছবি রাখা? অনেক দিনের স্মৃতি রয়েছে ওই একটা হার্ড ডিস্কে? তবে এখন থেকে সাবধান হন। আপনার অজান্তেই হয়তো আপনি হারাতে চলেছেন সেই সমস্ত দরকারি ফাইল থেকে ছবি, ভিডিও— সব।
হার্ড ডিস্ক ক্র্যাশ করা নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রত্যেক কম্পিউটার ব্যবহারকারীকেই কমবেশি এই সমস্যায় পড়তে হয়। আর এক বার ক্র্যাশ করে যাওয়া মানেই আবার ডেটা রিকভারি সেন্টার, আবার হাজার হাজার টাকা খরচ। হার্ড ডিস্ক যদি ওয়ার্যান্টির মধ্যেও থাকে, কোম্পানি আপনাকে পুরনো খারাপ হার্ড ডিস্কের বদলে নতুন হার্ড ডিস্ক দেবে, কিন্তু পুরনো হার্ড ডিস্কের তথ্য দেবে না। তা হলে উপায়?
আগে দেখে নেওয়া যাক হার্ড ডিস্ক খারাপ হওয়ার কারণ। সাধারণত আমরা দু’রকমের হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করে থাকি। ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল। এ বার এই ইন্টারনাল হার্ড ডিস্ক খারাপ হয় সাধারণত ব্যবহার হতে হতে। আপনি কম্পিউটার চালানো থেকে বন্ধ করা অবধি টানা ঘুরতে থাকে ভেতরের ডিস্কগুলি। স্বাভবিক ভাবেই ২-৩ বছর পর থেকে খারাপ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। অনেক সময় যদি কম্পিউটার কেসের ভেতর ভাল ভাবে হাওয়া না খেলে, ভেতর খুব গরম হয়ে থাকে, তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্যও হার্ড ডিস্ক খারাপ হতে পারে। এ ছাড়া সস্তার এসএমপিএস ব্যবহার করলে তাতে যদি কারেন্ট সাপ্লাই নিয়মিত ও যথাযথ না হয়, তবে তার জন্যও মুহূর্তের মধ্যে হার্ড ডিস্ক খারাপ হয়। এক্সটারনাল হার্ড ডিস্ক খারাপ হওয়ার সব থেকে বড় ও প্রধাণ কারণ অসাবধানতা। হাত থেকে পড়ে যাওয়া, ঠোক্কর খাওয়া, খুলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া, খারাপ তার লাগিয়ে কাজ করা, সঠিক ভাবে ‘ইজেক্ট’ না করেও টান দিয়ে খুলে ফেলা— এই সব কারণের জন্য এক্সটারনাল হার্ড ডিস্ক খারাপ হয়।
এ বার আসা যাক সমাধানে। সাবধানতার মার নেই, তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বা ছবি পারলে অনলাইন স্টোরেজে আপলোড করে দিন। আর হার্ড ডিস্কের স্বাস্থ্য দেখুন নিয়মিত। একাধিক সফটওয়্যারের দ্বারা দেখে নেওয়া যায় কত দিন ব্যবহার হয়েছে হার্ড ডিস্কটি, কত তাপমাত্র রয়েছে, কোনও ‘ব্যাড সেক্টর’ আছে কি না। কম্পিউটার চালানোর সময় খেয়াল করুন নিয়মিত কোনও ‘ক্লিক’ শুনতে পাচ্ছেন কি না হার্ড ডিস্ক থেকে। পেলে বুঝবেন, ভেতরে ডিস্ক অথবা আর্ম-এ কোনও সমস্যা হচ্ছে, দ্রুত পাল্টে ফেলুন অথবা সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান। এক্সটারনাল হার্ড ডিস্কের জন্য সবার আগে একটা বহনযোগ্য কেস কিনুন। মাত্র ৩০০ টাকা দাম, কিন্তু যে কোনও ঠোক্কর জাতীয় আঘাতের থেকে সুরক্ষিত। সঙ্গে রাখুন লম্বা তার, যাতে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ করতে গেলে হার্ড ডিস্ক ঝুলতে না থাকে। সবার আগে ইউএসবি ড্রাইভ ইজেক্ট করবেন, তার পর তার খুলবেন। আর সব শেষে, যত কম সঙ্গে নিয়ে ঘুরবেন, তত ভাল, ঝাঁকুনি থেকেও খারাপ হওয়ার ভুরি ভুরি নমুনা আছে।