প্রযুক্তির উন্নতি যেমন আধুনিক জীবনযাত্রাকে অনেকটা সহজ করেছে, তেমনই এর হাত ধরে ঝুঁকিও উপরি পাওনা হয়ছে আমাদের। কেনাকাটা, টিকিট কাটা, বিল দেওয়াথেকে কাউকে টাকা পাঠানো— কোনওটার জন্যই আর বাড়ির বাইরে বেরনোর প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির জ্ঞানটুকু থাকলে এ কেবল কয়েকটা ক্লিকের খেলা!
দরকারি সব কিছুই মোবাইল বা কম্পিউটারের ক্লিকে সেরে ফেলা যায় বলেই হয়তো আমরাও এ সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ি। উপকারে আসবে এমন প্রযুক্তির শরণ নেওয়া অন্যায় নয় মোটেও, কিন্তু হাল আমলে দেদার সাইবার ক্রাইমের বাড়বাড়ন্তের কারণে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে শুরু করে অবৈধ ভাবে কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার জালিয়াতি কোনওটাই বাদ পড়ছে না। এর প্রভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
তা বলে কি প্রযুক্তির সাহায্য নেবেন না? তা কেন? বরং কিছু বিষয় মাথায় রাখলেই প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন সহজেই। এমনিতে ইন্টারনেটে বেশ কিছু নিয়ম বা ব্যাঙ্কের তরফ থেকেই বেশ কিছু বিধি-নিষেধের কথা জানানো হয়। কিন্তু অনলাইন শপিং ও নেলদেনের ক্ষেত্রে কখন, কোনটা মেনে চলতে হবে, তা বুঝে ওঠাও কঠিন। আসলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে আটকানোর বেশ কিছু সহজ উপায় আছে। মাথায় রাখুন সে সব।
- অনলাইনে কবে কী কিনছেন, কত টাকা খরচ করে তা লিখে রাখুন এক জায়গায়। সম্ভব হলে এক সপ্তাহ অন্তর পাসবই আপডেট করে রাখুন, নয়তো মোবাইল থেকে স্টেটমেন্ট দেখে ডাউনলোড করে রাখুন।
- চেষ্টা করুন কোনও জনবহুল এলাকা বা সাইবার কাফেতে কার্ড ব্যবহার না করতে। তা করলেও আপনার চার পাশে কেউ আপনাকে লক্ষ করছে কি না দেখে নিন।
- অনলাইন শপিং বা মোবাইলেই বিল পেমেন্ট বেশি করে থাকেন? আজকাল সবচেয়ে ভয়ানক সাইবার অপরাধের নাম ‘ম্যান ইন দ্য ব্রাউজার অ্যাটাক’। এ ক্ষেত্রে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে তারা সব সময়ই মোবাইল বা ল্যাপটপে চলতে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গতিবিধি নজর করতে পারে। আপনার ব্যবহৃত তথ্য জাল করাও তাদের কাজে খুব সহজ। তাই অনলাইন শপিং বা লেনদেন বেশি করলে মোবাইল বা কম্পিউটারে অ্যাডভান্সড ইন্টারনেট সিকিউরিটি ডাউনলোড করে নিন।
- অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও লেনদেন হলে তা এসএমএসের মাধ্যমে জানায় সব ব্যাঙ্ক। অনেক সময় কাজের চাপে সে সব এসএমএস আমরা খেয়াল করি না। এ ভুল আর নয়, খুঁটিয়ে পড়ুন ব্যাঙ্কের সব এসএমএস। যদি এ সব লেনদেন আপনি করেননি এমন হয়, তা হলে দ্রুত যোগাযোগ করুন ব্যাঙ্কের সঙ্গে ও কার্ডটিকে ব্লক করান।
- অনেক সময় ব্যক্তিগত লোন বা ক্রেডিট কার্ডের অফার বোঝাতে নানা ফোন আসে। ব্যাঙ্কের আধিকারিকের নাম করেই ফোন করা হয়। যদি সেখানে কেউ কোনও ভাবে আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য, কার্ডের পিন নম্বর বা সিভিভি কোড জানতে চায়, সে সব কখনও কাউকে দেবেন না। কোনও প্রকার ভয় বা দুশ্চিন্তা থেকেও নয়। ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট নিয়ে কোনও গলদ বা সমস্যা হলে সরাসরি ব্যাঙ্কে গিয়ে যোগাযোগ করবেন। জানবেন, কোনও ব্যাঙ্ক কোনও দিন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের কোনও ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বসে না।
- বিশেষ কোনও নম্বর থেকে বার বার অ্যাকাউন্ট জনিত তথ্য চেয়ে মেসেজ এলে তা ব্লক করুন ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানান।