গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা আমাদের খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। অনেককে বছরের প্রায় সময়ই এই সমস্যায় ভুগতে হয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে অনেকেই অনেক খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু তারপরেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বাঁচতে পারেন না। গ্যাস্ট্রিকের মূল কারণগুলো হলো এসিডিটি, হজমের সমস্যা, বুক জ্বালা পোড়া করা ইত্যাদি। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথার আরো কিছু কারণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ফুড পয়জনিং, কিডনিতে পাথর, আলসার ইত্যাদি। এই সমস্যা দূর করতে রয়েছে নানান ধরণের ওষুধ। কিন্তু আমরা চাইলেই কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে সহজেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। চলুন দেখে নেই এমনই কিছু উপায়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় করণীয়
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথায় সাথে সাথে আরাম পেতে চাইলে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক চা যেমন সবুজ চা, পুদিনা চা, তুলসী চা এগুলো হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করে।
তেঁতুল পাতা বাটা এক গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ৭ থেক ৮ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
প্রতিবেলা খাবার খাওয়ার পর এক টুকরা আদা মুখে নিয়ে চিবিয়ে রস খান। তাহলে পেটে গ্যাস জমবে না এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার থেকে মুক্তি মিলবে। যারা আদা সরাসরি খেতে পারেন না তাঁরা রান্নায় বেশি করে আদা ব্যবহার করুন।
ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
আলু বেটে কিংবা ব্লেন্ডারে ব্ল্রেন্ড করে চিপে রস বের করে নিন। এবার এই রস প্রতিবার খাওয়ার আগে খেয়ে নিন।
মধু গ্যাস্ট্রিক সারাতে সাহায্য করে। আর হ্যা, তৈলাক্ত খাবার যথাসম্ভব বর্জন করুন।
যখন বুক জ্বালাপোড়া করবে সাথে সাথে একটুকরো গুড় মুখে নিয়ে রাখুন যতক্ষণ না সম্পূর্ণ গলে যায়। তবে ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ।
প্রতিদিন পুদিনা পাতার রস বা পাতা চিবিয়ে খেলে এসিডিটি ও বদহজম থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
দুধ এবং মাখন দিয়ে তৈরি মাঠা এসিডিটি দূর করতে টনিকের মতো কাজ করে যদি এর সাথে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়া যোগ করেন।
ENO কিনে রাখুন ঘরে, বেশ কার্যকর ।
একটি মাঝারী আকৃতির লেবু চিপে রস বের করে নিন। এরবার লেবুর রসের সাথে আধা টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক কাপ পানি মিশিয়ে নিন। বেকিং সোডা ভালো করে মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়ুন। এবার মিশ্রণটি খেয়ে নিন। নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথায় সাথে সাথে আরাম পেতে চাইলে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে।
কার্বোনেটেড পানীয় (যেমন কোকা কোলা, পেপসি ইত্যাদি), চুইং গাম, এবং স্ট্র দিয়ে সিপ করে করে পান করার অভ্যাসত্যাগ করুন। এগুলোর প্রত্যেকটিই আপনার পাকস্থলীতে গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
নিচের আরো কিছু টিপস মেনে চলে দেখতে পারেনঃ
১। অতিহার বা অনাহার পরিহার করুন
২। বাঁশি, পঁচা খাবার খাবেন না
৩। সকালে খালি পেটে কমপক্ষ্য আধালিটার এবং প্রতিবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর কমপক্ষে আধালিটার পানি পান করুন
৪। নিয়মমত সঠিক সময়ে খাবার খাবেন
৫। দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন
৬। মাদক দ্রব্য ও ধুমপান পরিহার করুন
৭। পরিমিত ঘুমাতে হবে।
৮। পায়খানা ঠেকাবেন না
৯। পেট খালি না রাখতে অল্প অল্প খাবার কয়েকবার খান
১০। বেমী আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন
১১। চা পান কম করবেন
১২। খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাটি করবেন
১৩। রিচ ফুড কম খাবেন
১৪। ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন
১৫। খাবার ভালভাবে চিবিয়ে খান
১৬। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হাফ লিটার পানি পান করুন, বা ইসভগুলের সরবত (এসভ্গুল + পানি+ চিনি/মিশরী) খেলে পেট ভালো থাকে।
১৭। তৈলাক্ত ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন
১৮। কাঁচা পেপের তরকারী পেট ভালো রাখতে সাহায্য করে
১৯। বেল বা পাকা পেপের শরবত গ্যাস্ট্রিক এর প্রবলেম দূর করতে সাহায্য করে
২০। বাসী খাবার খেলেও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে, তাই বাসী খাবার খাবেন না
এ নিয়মগুলো মেনে চললে গ্যাস্ট্রিক আপনার বশে আসতে বাধ্য। তারপরও সমস্যা থাকলে আপনার ঔষধ খাবার দরকার হতে পারে তাই এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।