Thursday, April 25
Shadow

হাঁস পালন | জেনে রাখুন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো

হাঁস পালন
হাঁস পালন

বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালন করে সফলতার মুখ দেখছেন অনেকেই। দূর হচ্ছে বেকারত্ব। কিন্তু কিভাবে আসবে এই সফলতা? হাঁস পালনের নিয়ম জানতে হবে, চাই  সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। তার আগে জেনে নিতে হবে হাঁস পালনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

সঠিক জাতের হাঁস বাছাই করা

হাঁস পালনের ক্ষেত্রে সবার উদ্দেশ্য এক নয়। কেউ হাঁস পালন করেন শুধু মাংস উৎপাদনের জন্য, কেউ বা শুধু ডিম উৎপাদনের জন্য। আবার কারো উদ্দেশ্য ডিম মাংস দুটোই উৎপাদন করা। সেই অনুযায়ী হাঁসের জাত বাছাই করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

মাংস উৎপাদনের জন্য হাঁসের জাতগুলো হলোঃ পিকিং, রুয়েল ক্যায়ুগা, আয়লেশবারি,  মাসকোভি এবং সুইডেন হাঁস। ডিম উৎপাদনের জন্য জিনডিং জাতের হাঁস ও ইন্ডিয়ান রানার হাঁস বেশ ভালো। মাংস ও ডিম উভয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস সবচেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

 

হাঁসের ঘর

বাড়িতে হাঁস পালন করার জন্য আপনাকে প্রথমে বাঁশ, বেত, টিন, ছন, খড় ইত্যাদি ব্যবহার করে উপযুক্ত ঘর তৈরি করতে হবে । এছাড়া ইট দিয়ে তৈরি ঘর অনেক মজবুত হয়।

 

হাঁস পালন করতে বাচ্চা সংগ্রহ

জাত বাছাই করার পর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভালো কোন হাঁস-মুরগির খামার বা হাঁস প্রজনন কেন্দ্র থেকে দেখে শুনে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করা। বাচ্চা কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে প্রতিটি বাচ্চা যেন নীরোগ হয়।

 

হাঁসের খাঁচার যত্ন ও পরিচর্যা

হাঁসের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য ঘর সবসময় পরিষ্কার ঘরে রাখতে হবে।  ঘরের মেঝে, দেয়াল, ছাদ, ডিমের বাক্স ও ট্রে, পানি ও খাবারের পাত্র ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে । ঘরে আলো ও বাতাস চলাচল থাকতে হবে। জীবাণু ও পোকামাকড় রোধে উন্নতমানের জীবাণুনাশক ঔষধ ছিটিয়ে দিতে হবে ।

 

হাঁসের প্রজনন

হাঁসের সঠিক প্রজননের জন্য হাঁসকে পানিতে স্থানান্তর করতে হবে। পানিতে স্থানান্তর না করলে হাঁস ডিম পারে ঠিকই কিন্তু সেই ডিমে নতুন বাচ্চা জন্মায় না।

 

বাচ্চার ব্রুডিং

বাচ্চার ব্রুডিং করা,অর্থাৎ বাচ্চাকে তাপ দেওয়া হাঁস পালনের প্রথম ধাপ। বাচ্চা অবস্থায় হাঁস নিজের তাপ নিজে দিতে পারে না। কিন্তু তাপ দেওয়া ব্যতীত বাচ্চার বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তাপ দেওয়ার এই পদ্ধতিকে বলা হয় ব্রুডিং। প্রথম অবস্থায় গোলাকার গার্ড তৈরী করে বাচ্চাকে তাপের কাছাকাছি রাখতে হবে। পাশাপাশি বাচ্চাকে সুষম খাবার সরবরাহ করতে হবে। বিভিন্ন জাতের জন্য ব্রুডারের আকার ও তাপমাত্রা বিভিন্ন হয়। সেই অনুযায়ী তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আরও পড়ুন: গোলাপ গাছের রোগ ও সেগুলোর সমাধান

হাঁসের খাবার

ডিম ও মাংসের প্রকৃত যোগান পেতে হলে হাঁসের খাদ্য তালিকা হতে হবে সুষম। সাধারণত হাঁস প্রচুর খাদ্য গ্রহন করে। আর পানি গ্রহণ করে তার দ্বিগুন। হাঁস কখন শুকনো খাবার খায় না। তাই খাবার দেয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন পানির পরিমান ঠিক থাকে।

 

হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ও টিকা

রোগমুক্ত খামার হাঁস পালনে সফলতার পূর্বশর্ত। অসুস্থ হাঁস কখনই আপনাকে লাভবান করতে পারবে না। খামারি যদি  একটু সচেতন থাকেন তবে হাঁসের খুব একটা রোগ-ব্যাধি হয় না। তবে হাসের মারাত্নক দুটি রোগ ডাক-প্লেগ ও ডাক কলেরা- এ দুটির টিকা নেয়া আবশ্যক।সেক্ষেত্রে নিকটতম পশু টিকিৎসা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।

 

হাঁস পালন করতে হাঁসকে রোগমুক্ত রাখতে হবে। খামারে অবাধ প্রবেশ বন্ধ করতে হবে, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিমাণ মত সুষম খাবার সরবরাহ করতে হবে, সর্বোপরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!