চেহারায় একটু ভারিক্কি ভাব। আর তার জন্য চারপাশ থেকে কম কুকথা শুনতে হয়নি তামিলনাড়ুর রুবি বিউটিকে। মোটা হয়ে যাচ্ছেন বলে স্বামীর কাছেও কথা শুনতে হত তাঁকে। সেই কথাগুলোকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে, দেশের হয়ে এখন বডি বিল্ডিংয়ে পদক জিতছেন রুবি। তাঁর ফ্যাট থেকে ফিট হয়ে ওঠার কাহিনিই আজ জেনে নেওয়া যাক।
শরীরের গঠন নিয়ে যদি আক্রমণটা আসে বাড়ির ভিতর থেকেই? আর যে মানুষটার সঙ্গে ঘর করছেন, সেই মানুষটার কাছ থেকেই যদি আসে আক্রমণ? শুধু তো আক্রমণই নয়, মিস চেন্নাই রুবিকে ছেড়ে চলেও যান তাঁর স্বামী।
রুবির কথায়, ‘‘আমার স্বামী আমাকে এক বার বলেছিল যে, ও আমার প্রতি সমস্ত আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছে। কারণ, আমি মোটা। তার পরেই আর এক মুহূর্তও দেরি না করে প্রচুর হাঁটাহাঁটি শুরু করে দিই।’
৬ বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে রুবির। মিস চেন্নাই রুবি বলছিলেন, ‘‘সন্তান হওয়ার পর নিজের শরীরের যত্ন নেওয়াটা ছিল খুব দুষ্কর। কিন্তু আমি আমার লক্ষ্যটা ঠিক করে নিয়েছিলাম। তাই শরীরচর্চা করে যাচ্ছিলাম লাগাতার।’’
তবে এক সময়ে সাপ্লিমেন্ট কেনার জন্য খরচা জোগাড় করতে গিয়েই হিমশিম খেতে হত রুবিকে। অসমে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সেরার শিরোপাও ঘরে নিয়ে এসেছিলেন রুবি। মিস চেন্নাইও হয়েছিলেন এই মহিলা।
তবে এই মুহূর্তে সরকারের কাছে সাহায্য চাইছেন মিস চেন্নাই রুবি। তাঁর কথায়, ‘‘মহিলারাও যে বডি বিল্ডিংয়ে সফল হতে পারেন সেটাও প্রমাণ করে দিয়েছি। আমাদের রাজ্য থেকে তো এই ফিল্ডে খুব কম লোকজনই আসেন। সরকারের কাছে আমার আবেদন, মহিলাদের বডিবিল্ডিংকে আরও প্রচারে আনা হোক। করা হোক অর্থ সাহায্যও।’’
রুবিকে নিয়ে বেশ আশাবাদী তাঁর কোচ কার্তিক। তাঁর কথায়, “খুব সহজেই রুবি আরও খেতাব জিতে নিতে পারে। ১০০ জনেরও বেশি মহিলাকে আমি ট্রেনিং দিয়েছি। কিন্তু বেশির ভাগ মহিলাই খুব তাড়াতাড়ি অধৈর্য হয়ে যান। রুবির অদম্য ইচ্ছাশক্তি। যে কাজটার জন্য ওকে আমি এক বছর সময় দিয়েছিলাম, সেটা ও ৬ মাসেই করে ফেলেছিল।’’