ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও যৌনশক্তির মহৌষধ মেথি !
এক গ্লাস মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে শরীরের জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়। এমনকি এই মেথি সরাসরি চিবিয়ে খেলেও শরীরের উপরকারে লাগে।
মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো এসিড। এই অ্যামিনো এসিড দেহের ইনসুলিনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া নিয়মিত মেথি খেলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমে এবং লিভার ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা পায়।
এক গ্লাস বা বাসনে সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে উপকার মেলে। সরাসরি চিবিয়ে খেলেও কাজ হয়।
মেথিকে সাধারণত মশলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু মেথি শুধুমাত্র মশলা নয়, এটি খাবার ও পথ্য। রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মেথি বেশ কার্যকরি ভূমিকা রাখে। রক্তে চিনির মাত্রা কমানোরও বিস্ময়কর শক্তি রয়েছে মেথিতে। আর পুরুষদের যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে মেথির রস এক মহৌষধ!
আনুমানিক ৩০টি দেশের ২৫ হাজার পুরুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়। যেসব পুরুষ তাদের যৌনশক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের মেথির রস দিনে দু’বার পরিমাণ মতো সেবন করতে দেওয়া হয় ওই পরীক্ষায়। এতে আশ্চর্য রকম সুফল পাওয়া যায়। প্রতিদিন পরিমিত মেথির রস সেবনে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখময় হয়ে উঠে।
হতাশা বা অবসাদ, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন ও অ্যালকোহল পানে অসুস্থতা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি বহু অসুখ ও শারীরিক সমস্যার জন্যও মেথির রস বেশ উপকারি।
মেথির রসে ‘সাপোনিস’ বা ‘ডাইওসজেনিন’ নামে এক ধরনের যৌগ পদার্থ আছে, যা মানবদেহের হরমোন স্তর বা এর পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ জীবাণু দূর হয়। বিশেষত কৃমি মরে যায় এবং রক্তে চিনির মাত্রা কমে, রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। বার্ধক্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মেথি।
গবেষণায় দেখা গেছে, যে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত মেথি খান, তাদের ডায়াবেটিসজনিত অসুখগুলো কম হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম। এক কথায় ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি শ্রেষ্ঠ পথ্য।
যাদের ডায়াবেটিস নেই মেথি তাদের জন্যও জরুরি। মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য কালো জিরার মতো মেথি পিষে খাওয়াটাও যথেষ্ট উপকার।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, মেথি ভেজে পিষলে পুষ্টি সব নষ্ট হয়ে যাবে। রৌদ্রে শুকিয়ে নিয়ে খেতে মচমচে লাগবে। তবে মেথির স্বাদ তিতা ধরনের।
মেথি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে রাখে সতেজ। রক্তের উপাদানগুলোকে করে কর্মক্ষম। ফলে মানুষের কর্মোদ্দীপনাও বৃদ্ধি পায়।
তবে ছয় সপ্তাহে অন্তত দিনে দু’বার করে এর রস নিয়মিত পান না করলে তেমন উপকারিতা পাওয়া যাবে না। আপনি যদি মেথি সরাসরি খেয়ে ফেলেন তবে এটি আপনার ডায়েটে সহায়তা করবে।
এছাড়া প্রতিদিনের ফেসপ্যাকে মেথি গাছের নির্যাস ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ, কালো দাগ এবং ফুসকুড়ি নিরাময় হয়।