কবুতরের এয়স্পারজিলসিস ও আফ্লাটকসিকসিসঃ দুটো ছত্রাক জনিত রোগ হলেও রোগ দুটো পরিপূরক । একটি বিষাক্ত খাবার থেকে ও দ্বিতীয়টি খাবারে ছত্রাক আক্রমন থেকে।এই রোগে কবুতরের মৃত্যুর হার অনেক বেশি।তবে সেটা নির্ভর করে কী পরিমান টক্সিন শরীরে প্রবেশ করেছে তার উপর।শুধু তাই নয়, এই রোগ থেকে নানা প্রকার রোগের সৃষ্টি হয়। তাই এই রোগকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই।এছাড়াও আবহাওয়ার ৮০% আর্দ্রতা থাকলে এই রোগ দেখা দিতে পারে।সাধারনত(ভুট্টা, বাদাম, বয়লার গ্রয়ার ইত্যাদি।)খাবার থেকে আই রোগের টক্সিন শরীরে প্রবেশ করে।
লক্ষণঃ
১) দুর্বল,ঝিমুনি,নিদ্রালুভাব, ক্ষুধাহ্রাস, খাদ্য খেতে অসুবিধা বা গিলতে কষ্ট,শরীর শুকিয়ে হালকা হয়ে যাবে।২) মাথা ঝুলে পড়ে ও স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারে না।৩) পালক আলগা হয়ে যায় তাই একটু নড়াচড়া করলেই পালক খসে পড়ে।৪) বুকের পালক উঠে যাবে।৫) শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হবে,মুখ হা করে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিবে।৬) মাদি কবুতরের ডিম পাড়ার ক্ষমতা কমে যাবে আর নরের ব্রিডিং ক্ষমতা কমে যাবে।৭) ডিম পাড়ার পর এই টক্সিন ডিমের ভিতরে ঢুকে ডিমের উর্বরতা নষ্ট করে দিবে।৮) জল পিপাসা বেড়ে যাবে ও নাক দিয়ে পানি পড়বে ও পিছুটি কাটতে পারে।৭)নানা রঙের পাতলা পায়খানা করতে পারে।৮)লিভার, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।৯)এই অবস্থা হবার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবার ফলে রানিখেত,ককসিডিয়সিস,পুলরাম ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে।১০) গায়ে ফুস্কুরি হতে পারে।১১)বুকের বা পাকস্থলীর লোম উঠে গিয়ে খালি হয়ে যেতে পারে।১২)পাখা বা লোমের গোড়ায় ঘা হতে পারে।১৩)পাতলা পায়খানা,অভুক্ত খাবার সহ পায়খানা বা বমি হতে পারে।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধঃ
১)ভাঙ্গা ভুট্টা, রেজা, বাদাম ইত্যাদি ভাল করে ধুয়ে রধে শুকিয়ে তারপর দিতে হবে। ভাঙ্গা ভুট্টা সিদ্ধ করে রোদে সুকিয়ে দিতে হবে।২)দলা পাকান বা সাদা ফাঙ্গাস যুক্ত খাবার রোদে সুকিয়ে বা হালকা গরম করে দিতে হবে।আর অতিরিক্ত সতর্কতা স্বরূপ ১৫ ৩)১৫ দিন পর পর খাদ্য সুকাতে হবে বা হালকা গরম করতে হবে।৪)নাক্স ভুম ৩০ হোমিও ২-৩ ফোটা করে দিনে ৩ বার দিতে হবে।যদি অভুক্ত খাবার সহ পায়খানা বা বমি হয় তাহলে হোমিও চাইনা ৩০ ১-২ ফোটা করে দিনে ২-৩ বার দিলে ভাল উপকার হয়।৫)যদি খাবার বা ফাঙ্গুস পাকস্থলীর ভিতরে থাকে আর টক বা দুর্গন্ধ বের হয়। তাহলে পাকস্থলি ২-৩ বার ওয়াশ করতে হবে ৩০ সিসি পানির সাথে ১ গ্রাম বরিক পাওডার দিয়ে।৬)স্যালাইন পানি বা চালের স্যালিইন দিতে হবে যাতে পানিশূন্যতা না হয়।৭) লোমের গোরায় ঘা বা গোটা হলে হেক্সিসল বা পভিসেপ দিয়ে নিয়মিত ওয়াশ করতে হবে।৮) আখের গুড় ৫-১০ গ্রাম ১ লিটার পানিতে ২-৩ দিন মিক্স করে দিতে হবে।৯) ভিটামিন AD3E ও K দিতে হবে।১০) লিভার টনিক দিতে হবে নিয়মিত।১১) এই অবস্থায় তরল খাবার দেওয়াই ভাল।
১২)ভিজে বা স্যাঁতসেঁতে জাইগাই খাবার রাখা উচিত নয় বা খাবার দলা বা ভিজা হলে না খাওানই ভাল।১৩) এই সময় প্রটিন জাতীয় খাবার কম খাওয়াাতে হবে।
এই রোগ হবার পেছনে একজন খামারিকেই দায়ী করা হয়। কারন একজন খামারি অসচেতনতার ফলেই এই রোগ আয়। আর একটু সতর্ক হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়াা সম্ভব।