Tuesday, April 16
Shadow

কবুতর পালন : দেশের জনপ্রিয় কবুতরের হাট

কবুতর পালন

কবুতর পালন করে তার বেচাকেনার সম্পর্কে অনেকের ধারনা নেই। তাই তাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য হাজির করা হলো।

(১)কাপ্তান বাজার কবুতরের হাটঃ

ক্রেতা, বিক্রেতা ও স্থানীয়রা জানায়, কাপ্তান বাজার হলো রাজধানীর সবচেয়ে বড় কবুতর কেনাবেচার বাজার। এখানে সর্বনিন্ম ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা দামের কবুতর পাওয়া যায়।

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান ২ নম্বর গেইট এলাকায় এই বাজারের অবস্থান। প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে এই বাজার জমতে শুরু করে। রাজধানী ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন কবুতর নিয়ে এই হাটে আসেন। আর এই কেনাবেচা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

সকাল থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা জমায়েত হতে থাকলেও মূলত দুপুরের পর থেকে এই হাটে বেচাকেনা বাড়তে থাকে। একদিকে যেমন বাজারে বিভিন্ন ব্যক্তি আসেন তাদের পোষা কবুতর বিক্রি করতে, একইভাবে পাইকার বিক্রেতারাও কবুতর বিক্রি করে থাকেন এই হাটে। কেউ কবুতর বিক্রি করলে তাদের কাছ থেকে বিক্রির অর্থের ১০ শতাংশ হাটের ইজারাদারকে দিতে হয়।

এছাড়া শুক্রবার সকালে নমিতলী এলাকায় রাস্তার দুই ধারে বসে নমিতলী কবুতররে হাট। মৌলভীবাজারে মাছরে আড়তরে পছেনে প্রতি মঙ্গল ও শনবিার সকালে বসে কবুতররে হাট। সোয়ারীঘাট থকেে নদী পার হয়ে জঞ্জিরিা বাজাররে র্পূবদকিে প্রতি শুক্রবারে বসে জঞ্জিরিা কবুতররে হাট। কামরাঙ্গীর চররে রনি র্মাকটে প্রাঙ্গণে মঙ্গল ও শনবিার সকালে বসে কবুতররে হাট। আমনিবাজারওে প্রতি শুক্রবার বসে কবুতররে হাট।

রামপুরার কবুতরের হাটঃ

ঢাকার কয়েকটি বড় বড় কবুতরের হাটের মধ্যে মেরাদিয়ার হাট একটি। এই হাটে সব ধরণের কবুতর পাওয়া যায়। এছাড়া যারা কবুতর বিক্রি করেন তারাও এই হাটে চলে আসেন কবুতুর বিক্রির জন্য। কবুতরের হাটটি মুলত বসে বাংলাদেশের ক্রিকেটার মোহাম্মাদ আশরাফুলের বাসার সামনে এবং ফয়জুর রহমান স্কুলের সামনে। এখানে কবুতর ছাড়াও রাজা হাঁস, দেশী মুরগী, দেশী হাঁস বিক্রি হয়।

(২) পাবনায় কবুতরের হাটঃ 

আমরা হাট বা বাজার শুনলেই মনে করি সেখানে বসেছে বিভিন্ন পণ্যের দোকান। কিন্তু পাবনায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী কবুতরের হাট। সেখানে আছে-ব্লু হেনা, লাক্ষ্যা, হলুদ পোর্টার, সিলাভার সিরাজীসহ রং-বেরং এর দেশি-বিদেশি দুর্লভ প্রজাতির কবুতর। হাটের আয়োজকরা জানান, পাবনায় ছোট-বড় মিলিয়ে তিন শতাধিক কবুতরের খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে অনেক বেকার যুবক জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ী ও সৌখিন পায়রা পালকরা পাবনার এসব খামার থেকে বিভিন্ন দুর্লভ জাতের কবুতর ক্রয় করে নিয়ে যায়। এতো দিন ব্যবসায়ী ও সৌখিন পায়রা পালকরা পাবনার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা পায়রা খামার ঘুরে ঘুরে পায়রা ক্রয় করতেন। ক্রেতা ও বিক্রেতার সুবিধার্থে খামারিরা শহরের বাইপাস মোড়ে বসিয়েছে এই পায়রার হাট। এ হাটে সর্বনিম্ন দুইশ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত এক জোড়া কবুতর বিক্রি হচ্ছে। আয়োজকরা আরো জানান, হাট সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

(৩) চট্টগ্রামের কবুতরের হাটঃ

চট্টগ্রাম শহররে সবচেয়ে বড় কবুতররে হাট। দওেয়ানহাট ফ্লাইওভাররে নীচে প্রতি সোম এবং বৃহস্পতবিার দুপুর  থেকে  সন্ধ্যা র্পযন্ত এখানে হাট বস। যেখানে একেকটি কবুতর মিলছে এক থেকে ৫ হাজার টাকায়। কেউ কেউ একে নিয়েছেন শৌখিন ব্যবসা হিসেবেও। প্রায় ষাট বছরের পুরোনো হাটে প্রতিদিন বেচাকেনা হয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার কবুতর

 

(৪) নওগাঁয় কবুতরের হাটঃ

নওগাঁর সান্তাহারে প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবারে বসে কবুতরের হাট। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ জড়ো হয় বিভিন্ন জাতের কবুতর নিয়ে। প্রতি হাটেই প্রায় ১০০/১৫০টা কবুতরের দোকান বসে। গ্রিবাজ, সিরাজী, নবাবী, মিহিরবাজ, বার্মিজ, বোম্বেসহ পাওয়া যায় দেশি-বিদেশি নানা জাতের কবুতর। দামে সস্তা হওয়ায় দেশি জাতের কবুতরের চাহিদা এখানে বেশি।

প্রতি শুক্রবার ও সোমবারে রাজশাহীর কাটাখালীতে সকাল থেকে কবুতরের হাট বসে।

নাটরে প্রতি রবিবার সৌখিন কবুতরের হাট বসে। এটি নাটরের বটতলা নামক জায়গাই বসে।

বগুড়ার সান্তাহারে প্রতি সপ্তাহরে শনি ও মঙ্গলবারে বসে কবুতররে হাট

(৫) যশোরের তেতুঁলতলায় কবুতরের হাটঃ

যশোরের রেলগেট তেঁতুলতলা। সপ্তাহের ছয় দিন এক রকম, কিন্তু শুক্রবারটা থাকে অন্য রকম। কবুতর নিয়ে দিনভর চলে আরাধনা। বয়সে ওরা যুবক, সবাই শিক্ষিত। ওরা দেশি-বিদেশি নানা জাতের কবুতর নিয়ে চলে আসে এই হাটে। হাজার হাজার টাকার হাঁকডাক। বাহারি সব কবুতর বিক্রি হচ্ছে দেদার।

(৬) মুন্সিগঞ্জে কবুতরের হাটঃ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মিরাপাড়া বউ বাজারে প্রতি বৃহস্পতি বার কবুতরের হাট বসার আয়োজন করা হয়েছে। এ হাটে দেশের উন্নত মানের এং দামী কবুতর পাওয়া যায়। জেলার বিভিন্ন স্থান হতে কবুতর বিক্রেতারা এসে তাদের বিভিন্ন দামের কবুতর নিয়ে হাটে বসেছেন বিক্রি করার উদ্দেশ্যে।

এখানে যে সকল কবুতর পাওয়া যায় তাহলো-বল কবুতর এর দাম ২০ হাজার টাকা। সাটি এর দাম ১৮ হাজার টাকা। শর্টপিছ পাওয়া যায় ১০ হাজার টাকায়, কিং কবুতর-২০ হাজার টাকা, মেক পই-১৫ হাজার টাকা, সিলভার সিরাজী-১২ হাজার টাকা, হুমা-৮ হাজার টাকা, লক্ষèা-৭ হাজার টাকা, কালদুম-১২ হাজার টাকা, চুনা-৭ হাজার টাকা, সবুজ গলা-৩ হাজার টাকা, বোম্বাই-৪ হাজার টাকা, জিরাগলা-৬ হাজার টাকা, মশাল-৫ হাজার টাকা, দোপাছ-১০ হাজার টাকা এবং বাংলা কবুতর ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

(৭) বরিশালে কবুতরের হাটঃ

বরিশালে সহস্রাধিক পরিবার এখন পায়রা পোষে। কেউ শখের বসে, কেউবা ব্যবসায়িক। কেউ পোষেন ৬/৮ জোড়া কেউবা শতাধিক। আর তাদের প্রায় সবারই আনাগোনা পায়রা হাটে। নগরীর হাটখোলায় সপ্তাহে দুই দিন বসে জমজমাট পায়রার হাট। নগরীর মৃতপ্রায় হাট এখন প্রাণবন্ত এ পায়রার হাটকে কেন্দ্র করে। এখানে চারশ’ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকায় এক জোড়া কবুতর মেলে। বরিশালের একমাত্র হাট চকবাজার সংলগ্ন হাটখোলায়।এ হাটে বাংলা, গিরোবাজ বাদেও পাওয়া যায়, সিরাজি, শর্টপিস, নান, ময়ুরী, হোমার, কিং, রাংগস, স্টেচার, ঘিয়াচুন্নি, ম্যাগপাইসহ দামি কবুতরও। হাটের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যবসায়ী আলমও প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জোড়া কবুতর বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। হাট ইজারাদার বাবুল জানান, দূর-দূরান্ত থেকে বেপারিরা আসেন এ হাটে। অন্য যেকোন হাটের চেয়ে এ হাটে কবুতরের মূল্য অত্যন্ত কম বলেই এ হাট থেকে কবুতর কিনে অন্য হটে বিক্রি হয়।  তিনি অত্যন্ত কম কমিশন রাখেন বলে জানান। তার পিতা এবং তিনি কবুতরের হাট অত্যন্ত ভালবাসেন বলে দাবি করেন।  এদিকে শুধু হাটখোলায়ই নয়, কাশিপুর নবগ্রামেও বসছে পায়রা হাট। সেখানেও বেশ ভাল বেচাকিনি হয় বলে জানা গেছে।

(৮) ফরিদপুরে কবুতরের হাটঃ

ফরিদপুর শহরের স্টেশন বাজারের একটি অংশে সাপ্তাহিক কবুতরের হাট বসতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সাপ্তাহিক এই কবুতর হাটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তরুণ সমাজ সেবক ও পৌর কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল জলিল শেখ। পায়রা পালক সমিতি ফরিদপুরের উদ্যোগে কবুতর হাটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্টেশন বাজারের ইজারাদার ও ব্যবসায়ী মো: বিল্লাল হোসেন, ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান, নঈম জাহান লিপন, আজিমুল, পান্না, বাচ্চু, পায়রা পালক সমিতি সাবেক সভাপতি মো: শাহিনুর রহমান ডাবু, নিসার ইবনে বাহার নিসু, মো: আনোয়ার, মো: হাসানুজ্জামান মিঠু, মো: সবুজ, মো: হাসান প্রমুখ। প্রথম দিনে ফরিদপুরের শতাধিক কবুতর ব্যবসায়ী তাদের বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর নিয়ে হাটে আসেন। কবুতরের হাটে দুইশত টাকা জোড়া কবুতর থেকে শুরু করে একজোড়া কবুতরের দাম ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। উদ্বোধনী হাটে ব্যাপক সংখ্যক ক্রেতার ভিড় লক্ষ করা গেছে। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার স্টেশন বাজারে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত হাটে কবুতর বেচাকেনা হবে বলে কতৃপক্ষ জানিয়েছেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!