অনেক সময় দুইটা মাদি ঠিক নর মাদির মতই বৈশিষ্ট্য স্বভাব দেখা গেলেও অনেক পরে বুঝা যাই যে আসলে দুটাই মাদি, কিন্তু এর মাঝে অনেক মূল্যবান সময় পার হয়ে যায়। আসুন আজ আমরা জেনে নেই কিভাবে কবুতরের নর ও মাদি চিনবেন –
কিভাবে নর ও মাদি কবুতর চিনবেন ?
পুরুষ ও মেয়ে কবুতরের কিছু শারীরিক ও স্বভাবগত কিছু বৈশিষ্ট্য ও পার্থক্য আছে। এগুলো দেখলেই পরিষ্কার বুঝতে পারবেন কিভাবে কবুতরের নর ও মাদি চিনবেন
ক) শারীরিক বৈশিষ্ট্যঃ
১) অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরুষ কবুতর আকারে বড় হয় বিশেষ করে তার মাথা ও চ্যাপ্টা হয়।
মেয়ে কবুতরের শরীর তুলনামূলক ছোট, বিশেষ করে তার মাথা ছোট ও লম্বা হয়।
২) চোখ একটি মুরগি এর হিসাবে বৃত্তাকার হয় না কিন্তু মেয়ে কবুতরের বৃত্তাকার হয়।
৩) পুরুষ কবুতরের পা ও এর আঙ্গুল সমান ও মসৃণ হয় না, কিন্তু মেয়ে কবুতরের পা অর এর আঙ্গুল প্রায় সমান ও মসৃণ হয়।
৪) উভয় হাতে কবুতর ধরুন (মধ্য লাইন থেকে বুক বরারর নিচে হাত চালায় তাহলে হাড় শেষে একটি স্পেস আছে, তারপর বরাবর একটি আঙ্গুল দিয়ে দেখলে 2 ছোট পাতলা হাড় পাবেন “v” এর মত, তারা একসঙ্গে আসা যেখানে মধ্যে একটি ছোট আঙুল বা তার বেশি ফিট করতে পারে, তাহলে এটি মেয়ে কবুতর যেখানে ডিম পাস হয়। আর যদি ১ বা -২ মিলি ফাক থাকে তাহলে পুরুষ কবুতর। অনেকে পুরুষ বা মাদি পরীক্ষা করার জন্য আঙ্গুল পায়খানার পথে দেন, কিন্তু বিশেষ ভাবে খেয়েল রাখবেন কখনও এটা করবেন না।এতে জরায়ু বা ভিতরে সংক্রমণ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।)
৫) পুরুষ কবুতরের মাথা / ঘার ও দেহ একটু মতা একটু লম্বা ও ঘন ও সবল হয়। আর সাধারণত মাদীর মাথা / ঘার ও দেহ কাছাকাছি আরো মেয়েলি বা সূক্ষ্ম হয়।
৬) হ্যাচিং পরে ১ থেকে ৩ দিন পর যদি আপনি কবুতরের বাচ্চাকে অধিষ্ঠিত করে এর পায়খানা নির্গমনের(vent hole) পথের দিকে খেয়াল করেন তাহলেও কিভাবে কবুতরের নর ও মাদি চিনবেন তা পরিষ্কার হবে। পুরুষ কবুতরের একটু চ্যাপ্টা বা smile এর মত দেখবেন আর মেয়ে কবুতরের সোজা বা গোল দেখবেন।
৭) পুরুষ কবুতরের গলার রগ মোটা হয় আর মেয়ে কবুতরের তুলনা মূলক ভাবে একটু পাতলা।
৮) পুরুষ কবুতরের ঠোঁট ধরে হালকা করে টান দিলে সে ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করে, আর মেয়ে কবুতর সাধারণত চুপ করে থাকে বা কোন চেষ্টা করে না।
কিভাবে কবুতরের নর ও মাদি চিনবেন ?
খ) স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য
৯) পুরুষ কবুতরের লেজ ও শরীর ময়লা থাকে কিন্তু মেয়ে কবুতরের শরীর তুলনামূলক পরিষ্কার থাকে। পুরুষ কবুতরের ডাক খুব ঘন ও জোরে হয়, অপরদিকে মেয়ে কবুতরের ডাক থেমে থেমে ও আস্তে ডাকে।
১০) পুরুষ কবুতর হুমকি দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে একটি প্রয়াস চালানোর চেষ্টা করে বা মাদীকে চার্জ করবে বা সাধারণত তার মনোযোগ পেতে হালকা ঠোকর চেহারা নেয় এবং আঘাত করে যদিও এটি ইচ্ছাকৃত ঠোকর নয়। পুরুষ কবুতর গলা ফুলীয়ে একজাগা থেকে লেজ নামিয়ে মাদিকে আক্রমন করে আর মাদি মাখা নাড়িয়ে মাথা উপর নিচ করে এক জায়গায় থাকে।
১১) পুরুষ কবুতর পুরো ঠোঁট ডুবিয়ে পানি পান করে, যেখানে মাদি কবুতর অল্প বা অর্ধেক ঠোঁট ডুবিয়ে পানি পান করে।
১২) পুরুষ কবুতর মেয়ে কবুতরের থেকে বেশি আক্রমনাত্মক হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর বাতিক্রম দেখা যায়। যদিও ডাকে্রট কম্পন দুই জনের সমান হয় না।
১৩) পুরুষ কবুতর সূর্য ডোবার আগে বেশি অস্থির থাকে, বিশেষ করে, আর মাদি কবুতর শান্ত থাকে।
১৪) পুরুষ কবুতর কবুতর সূর্য ওঠার পর নেস্ট এ থাকে। আর মাদি সারারাত বাসায় বসে থাকে।
১৫) ব্রিডিং এর আগে নর কবুতর মাদির পায়ের কাছে বসে এক ধরনের শব্দ করে, যদিও এ সব গৌণ বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে পড়ে।
১৬) মাদি কবুতর নর কবুতরের মুকে ঘাড়ে ও গলাই ঠোঁট দিয়ে গ্রুমিং করে দেয়। আর মেটিং এর আগে ঠোঁট দিয়ে খওয়ায়ে দেই।