Monday, May 20
Shadow

খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন

হাঁস-মুরগী

হাঁস পালন-এ নিঃশব্দ বিপ্লব নিয়ে এসেছে খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস। কেউ আগে কল্পনা ও করেনি হাঁস মুরগির চেয়ে বেশি ডিম দেয় বা দিতে পারে। হাঁস থেকে রীতীমত ব্যবসা করা যায়। খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন এই বিপ্লব নিয়ে এসেছে। গ্রামের মানুষরা যদি সুযোগ পায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পুষবার- তাহলে আমাদের গ্রামীন অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক উন্নতি ঘটতো। ঘরে ঘরে এতো অভাব আর থাকতো না।

খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ডিমের একটা পচন্ড সুবিধা হল- এই ডিম খাওয়ার ব্যাপারে ভোক্তার কোন বায়নাক্কা নেই- এ ডিম খাব না, দেশী হাঁসের ডিম খাব। যে অসুবিধা মুরগি ডিমের বেলায় আছে। অনেক মানুষকে হাটে বাজারে ডিম বিক্রেতাকে বলতে শুনা যায়, ”না বাপু আমাকে পোল্ট্রির ডিম দিও না। দেশী মুরগির ডিম দাও!”

‘পোল্ট্রির ডিম’ মানে উন্নতজাতের ফার্মে পোষা মুরগির ডিম। অথচ হাঁসের ডিমের বেলায় এই কথা কখনও শোনা যায় নি। বরং যে কোন প্রকার হাঁসের ডিমই সকলেই জন্যে সমানভাবে প্রিয়।

খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ব্যবসা তথা পালনে সুবিধার জন্যে আমাদের বর্তমানে সরাকার ও বেশ আগ্রহী। এই কারণে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে যে কেউ ঘরোয়া বা বৃহৎ আকারে হাঁস-মুরগি পালনের জন্য সরকার থেকে অর্থ ঋণ নিয়ে খামারকে আরও বৃহৎ আকারে সাজতে পারে। এতে তেমনই দেশের প্রোটিন যুক্ত খাবারের অভাব ও মিটবে।

শুধু সরকারই নয়। বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক দারিদ্র্য সীমার নিচের মানুষদের ওপরে তোলার জন্য খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস চাষের জন্য অনুদান এবং ঋণ প্রদান করছে।

খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস বনাম অন্য পাঁচটা মুরগি

আগেই বলেছি, মুরগির থেকে হাঁস পালনে সুবিধা অনেক বেশি। খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস বছরে ২৮০-৩০০ ডিম দেয়। মুরগি দেয় এর কিছু কম। হাঁস ব্যবসায়ের উপযোগী একনাগাড়ে ২/৩ বছর ডিম দিয়ে যাবে কিন্তু উন্নত জাতের দো-আঁশলা মুরগি লাভের খাতিরে ডিম দেবে মোটে দেড় বছর। খাঁকি ক্যাম্পবের বাচ্চা মাদি ১৭ থেকে ১৮ সপ্তাহে ডিম দেয়। কিন্তু উন্নত জাতের মুরগি ২১ সপ্তাহের আগে লাভজনক ভাবে ডিম দেয় না। আরো সুবিধা হলো- মুরগি সারাদিনে যে কোন সময় ডিম দিতে পারে। হাঁস সন্ধ্যা রাত থেকে সকাল নয়টার মধ্যে যা ডিম দেবার দিয়ে দেবে। এই কারণে খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পোষায় পরিশ্রম কম।

খাঁকি ক্যাম্পবেল বাচ্চার প্রতিপালন

বাচ্চা তোলার আগে আপনার প্রথম কাজ হবে বাচ্চা যেখানে থাকবে সেটা ঠিক-ঠাক করা। বাচ্চা হাঁস রাখতে হবে তারের জালের ওপর। এতে বাচ্চারা কম রোগ-ব্যাধিতে ভোগে। তারের জাল মেঝে থেকে দেড়ফুট মতো উঁচুতে থাকবে। ফলে মল মুত্র সহজে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া যাবে।

বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় উত্তাপ

প্রথম অবস্থার জন্য ক্যাম্পবেল হাঁস বাচ্চার জন্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়। জীবনের প্রথম কয়েক দিন ওদের তাপ দিতে হবে ৩০০ সেঃ (৮৫০ ফাঃ) থেকে ৩২০ সেঃ (৯০০ ফাঃ) তারপর প্রতিদিন ২.৮০ সেঃ। (৫০ ফাঃ) করে তাপ কমিয়ে আনতে হবে যতদিন না ২৪০ সেঃ (৭৫০ ফাঃ) তাপমাত্রা হাচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে হাঁসকে মেঝেতে ছাড়া যেতে পারে। মেঝেতে ছাড়ার আগে হাঁসের জন্য পুরু স্তরের বিছানা পেতে দিতে হবে (Deep litter) বিছানা তৈরি করা যাবে ৫” গভীর তুষ আর কাঠের গুঁড়ো ছড়িয়ে।

ঘেরার মধ্যে হাঁস পালতে হলে খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পিছু তিন বর্গফুট জায়গা দিতে হবে। যদি ওদের চরে বেড়াবার জন্য ফাঁকা জায়গায় ব্যবস্থা থাকে তবে হাঁস পিছু রাতের আস্তানা হবে দুই বঃ ফুঃ। চরে বেড়াবার জন্যে ফাঁকা জায়গাটির আয়তন হবে হাঁস পিছু ১০ বর্গফুট। হাঁস পিছু জায়গা নিচের মতো হবে।

বয়স (সপ্তাহ) মেঝেতে জায়গার পরিমাণ

০-১ ৪ ভাগের ১ বর্গফুট

১-২ ৩ ভাগের ১ বর্গফুট

২-৩ ২ ভাগের ১ বর্গফুট

৩-৭ দেড় বর্গফুট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!