হাঁস মুরগির রোগ ও তার প্রতিকার
বাংলাদেশে প্রতি বৎসর বিভিন্ন রোগে বহু মোরগ-মুরগি মারা যায়। এ সকল রোগের মধ্যে প্রধান হচ্ছে রানীক্ষেত, মুরগির বসন্ত, মুরগির কলেরা, গামবোরো, ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস, রক্ত আমাশয় বা ককসিডিওসিস ইত্যাদি।
রানীক্ষেত: রানীক্ষেত রোগের জীবানু একপ্রকার ভাইরাস। সাধারণতঃ সকল বয়সের ও সকল জাতের মোরগ-মুরগিই রানীক্ষেত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। মোরগ-মুরগি ছাড়াও কবুতর, দোয়েল, কোয়েল, কাক, পেঁচা, ঘুঘু, চড়ুই, শালিক, ময়ূর, কাকাতুয়া, টিয়া, ময়না ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার পাখি এই রোগ জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। হাঁস (পাতি হাঁস) বা রাজহাঁসের সচরাচর এই রোগ দেখা যায় না।
রানীক্ষেত রোগের লক্ষণগুলোর মাঝে চুনা বা সবুজ রংয়ের রক্তাক্ত কিংবা তরল পায়খানাই প্রধান। রোগাক্রান্ত পাখির শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুততর হয়, বাচ্চা মোরগ-মুরগি হা করে শ্বাস নেয় মাঝে মাঝে আক্রান্ত মোরগ-মুরগি ঘাড় বাঁকা হয়ে যায়। তাছাড়া আক্রান্ত পাখির পাখা ছেড়ে দিয়ে ঝিমাতে থাকে, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে খাওয়া-দাওয়া ও ডিমপাড়া ব্ন্ধ করে দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগাক্রান্ত হবার এক সপ্তাহের মাঝেই মৃত্যু ঘটে থাকে। আবার কোন কোন সময় রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই হঠাৎ মৃত্যু ঘটে।
হাঁস মুরগির রোগ
মুরগির বসন্ত: মুরগির বসন্ত রোগের জীবানু একপ্রকার ভাইরাস। অনেক সময় রোগের লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে মুরগির বসন্ত রোগকে কন্টাজিয়াস ইপিথেলিওমা ও এভিয়ান ডিপথেরিয়া বলা হয়।
সাধারণত: মোরগ-মুরগি, কবুতর এই রোগজীবানু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এ ছাড়াও চড়ুই, ময়ূর, টিয়া ও অন্যান্য পোষা পাখি মাঝে মাঝে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। যেকোনো বয়সের মোরগ-মুরগিই বসন্ত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।
বসন্ত রোগে মোরগ-মুরগির একমাত্র পালকবিহীন স্থানে লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিশেষতঃ এই রোগের মাথায় বিভিন্ন জায়গায় যেমন-ঝুটি, লতি, মুখের কোনায়, চোখের পাতায় এবং মাঝে মাঝে পায়ে ছোট ছোট আঁচিলের মতো গুটি দেখা যায়। গুটি হওয়ার আগে প্রথমে লাল হয় এবং রস জমা হয়। পরে কালোকালো গুটি তৈরি হয়। মাথার বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের গুটিই মুরগির বসন্ত রোগ নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট। এই রোগে মোরগ-মুরগি খাওয়া থেকে বিরত হয়ে যায়। ডিম পাড়া কমে যায়। এই রোগে বয়স্ক মোরগ-মুরগির মৃত্যুর হার কম। বাচ্চা মোরগ-মুরগির মৃত্যুর হার সাধারণত কিছুটা বেশি দেখা যায়। ৩-৪ সপ্তাহ অসুখে ভোগার
পর আপনা থেকেই বড় মোরগ-মুরগি ভাল হয়ে উঠে।
মুরগির কলেরা: এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা মুরগির কলেরা হয়ে থাকে এই ব্যাকটেরিয়া মুরগির দেহে প্রবেশ করে রক্তের সাথে মিশে এক প্রকার বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং রক্ত চলাচলের সাথে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সকল বয়সের মোরগ-মুরগির এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
আক্রান্ত মুরগির মল দ্বারা মুরগির খাদ্য ও পানি দূষিত হয় এবং রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বন্য পাখী, কুকুর,বিড়াল, ইত্যাদি প্রাাণীর দ্বারাও এ রোগ এক জায়গা থেকে অন্য যায়গায় বিস্তার লাভ করে। বাজার থেকে রোগাক্রান্ত মোরগ-মুরগি কিনে আনলেও এ রোগ হয়ে থাকে।
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর মোরগ-মুরগি খেতে চায় না, পালকগুলো খসখসে হয়ে যায়, চেহারায় অবসন্ন নেমে আসে ও রক্তশূন্য মনে হয়ে। মোরগ-মুরগির পিপাসাও বেড়ে যায়। পায়খানার রং সবুজ এবং সাদা ও ফেনাযুক্ত মনে হয়। চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ঝিমাতে থাকে এবং অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়।
রক্ত আমাশয় বা ককসিডিওসিস: এ রোগ ইমেরিয়া নামক এক প্রকার পরজীবী দ্বারা হয়ে থাকে। মোরগ- মুরগির অন্ত্রের মধ্যে এই রোগ বিস্তার লাভ করে এবং হজম করার শক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। এই রোগ মোরগ-মুরগির মলের সাহায্যে বিস্তার লাভ করে। এই রোগের পরজীবী মুরগির অন্ত্রে প্রচুর ডিম দিয়ে থাকে। এক চা চামচ মলে প্রায় ৭০ লাখ ডিম থাকতে পারে। রোগাক্রান্ত মুরগির মল ভিজা মাটিতে পড়লে এ রোগের ডিম দীর্ঘ সময় জীবন্ত থাকে ও কোন রকমে অন্য কোন সুস্থ মুরগির পেটে খাবারের সাথে প্রবেশ করতে পারলে পুনঃ রোগ বিস্তার শুরু করতে পারে।
এ রোগে আক্রান্ত হলে মোরগ-মুরগি ঝিমাতে থাকে। চোখ বন্ধ করে রাখে ও গায়ের পালক ঝুলে পড়ে। পায়খানার সাথে রক্ত মিশানো আম পড়তে থাকে। খাবার খেতে চায় না কারণ খাদ্য হজম না হওয়ায় খাদ্যথলি পূর্ণ থাকে।
ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস: এই রোগের জীবানু একপ্রকার ভাইরাস। এই রোগ সংক্রামক ও মারাত্মক ছোঁয়াছে প্রকৃতির। সাধারণত শ্বাসযন্ত্রই এই রোগে আক্রান্ত হয়।
একটু বয়স্ক মোরগ-মুরগির এই রোগ দেখা দেয়। তবে সকল জাতের মোরগ মুরগিরই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। বছরের সব সময়ই এই রোগ হয়ে থাকে। এই রোগের জীবানু দ্বারা শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার ফলে নানা ধরণের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন-ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, কফ, হাঁচি, নাক দিয়ে রক্ত মিশ্রিত শ্লেষ্মা পড়ে, হা করে নিশ্বাস নেয় এবং ঠোঁট দিয়ে পানি পড়ে। রক্ত মিশ্রিত কফ ট্রাকিয়া ও ল্যরিংসের পথ বন্ধ করায় শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। সেই কারণে মাঝে মাঝে আক্রান্ত পাখিকে প্রচণ্ড জোরে মাথা ঝাঁকানোর সাথে সাথে গড় গড় বা ফিস ফিস শব্দ করতে দেখা যায়।
গামবোরো রোগের টীকা: গামবোরো রোগকে ইনফেকস্স বার্সাল ডিজিজ ও বলা হয়। সাধারণত ৩-৮ সপ্তাহ বয়সের মোরগ-মুরগি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আক্রান্ত মোরগ-মুরগির কুচকানো পালক, অবসাবধানতা, ময়লাযুক্ত পায়ুস্থান, উচ্চ তাপমাত্রা, কাপুনি ও পানির মতো ডায়রিয়া এ রোগের প্রধান লক্ষণ। এ রোগেরভ্যাকক্সিন এন্টিনিউয়েটেড ও লাইভ আকারে পাওয়া যায়। প্যারেন্ট মুরগির টীকা প্রদান করতে হয়। বয়স্ক প্যারেন্ট মুরগির কিল্ড ভ্যাকক্সিন প্রদান করতে হয়।
মোরগ-মুরগির রোগসমূহ, রোগের কারণসমূহ ও রোগ বিস্তারের মাধ্যমসমূহ:
রোগের কারণসমূহ: হাঁস মুরগির রোগ
* সুষম খাদ্যের অভাব।
* সীমাবদ্ধ স্থানে নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত হাঁস-মুরগির অবস্থান।
* অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান বা পরিবেশ।
* রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীবাণু, জীবাণু,পরজীবী ছত্রাক ইত্যাদির আবির্ভাব।
* রোগজীবাণু বিষয়ে অসতর্কতা, অজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতা।
* দুষিত ও ভেজাল খাদ্য।
রোগ বিস্তার প্রক্রিয়া:
অসুস্থ হাঁস-মুরগির মল, কফ, সর্দির, ক্ষত হতে বের হতে হওয়া রক্ত ও পুঁজ ইত্যাদির মাধ্যমে সুস্থদেহে রোগ বিস্তার লাভ করে।
(ক) পানি: কৃমির ডিম অসুস্থ হাঁস-মুরগির শরীর থেকে ছড়িয়ে পড়া পালক, ময়লা বিভিন্ন প্রকার জীবানু অনুজীবাণু ইত্যাদি দ্বারা দুষিত পানির মাধ্যমে রোগ বিস্তার লাভ করে।
(খ) বাতাস: দূষিত বাতাসের মাধ্যমে অণুজীবাণু ও শ্বাসযন্ত্র রোগ জীবাণু বিস্তার লাভ করে।
(গ) মাটি: অনেক রোগ অনুজীবী ও কৃমির ডিম ভেজা মাটির মধ্যে অনেককাল পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। পরিচর্যাকারী দূষিত মাটি মাড়িয়ে ঘরে ঢুকলে পায়ে পায়ে ওই জীবাণু মুরগির ঘরে বিস্তার লাভ করতে পারে।
( ঘ) সংস্পর্শ : রোগাক্রান্ত হাঁস-মুরগি বা মুরগি পালকের সংস্পর্শে থেকে সংক্রামক রোগের জীবাণু সংক্রমিত হয়। হ্যাচারিতে অসুস্থ মুরগির ডিম থেকেও এ সমস্ত রোগ বিস্তার লাভ করতে পারে।
(ঙ) বাহক: অনেক সময় সূস্থ হাঁস-মুরগি নিজে অসুস্থ না হয়ে রোগের বাহক হিসাবে কাজ করে। মানুষ বা অন্য কোন প্রাণী, খামারের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি রোগের বাহক হিসাবে কাজ করতে পারে। এজন্য খামারে হাঁস-মুরগির চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উত্তম। মনে রাখা উচিত অসুস্থ হাঁস-মুরগি চিকিৎসার পর পূর্বের মতো উৎপাদনশীল থাকে না।
খামরের জীব-নিরাপত্তা:
নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো বিবেচনা করলে খামারে সঠিকভাবে রোগ জীবানু প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন সুনিশ্চিত করা যাবে।
* প্রতিপালন পদ্ধতি ও উপযোগিতানুসারে মুরগির ঘর/শেড নির্মিত হতে হবে।
* বয়স ও উপযোগিতা অনুসারে নির্ধারিত নিয়মে খাদ্যের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
* বয়স, উপযোগিতা এবং সংখ্যানুপাতে ঘরে থাকার স্থান দিতে হবে।
* বয়স উপযোগিতা ও হাঁস-মুরগির সংখ্যানুপাতে খাদ্যের পাত্র, পানির পাত্র, ডিমপাড়ার স্থান দিতে হবে।
* ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* সপ্তাহে নির্ধারিত দিনে হাঁস-মুরগির বয়স লিঙ্গ ও উপযোগিতা অনুসারে নমুনা ওজন গ্রহণ করতে হবে।
* বয়স, লিঙ্গ ও উপযোগিতা অনুসারে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
* পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
* ঘরে বা মুরগির দেহে উকুনের উপদ্রব বন্ধ করতে হবে।
* লিটার প্রায় হাঁস-মুরগি পালন করলে লিটারের পরিচর্যা করতে হবে।
* খাদ্য ও পানি দেওয়ার সময় হাঁস-মুরগি আচরণ কিছুক্ষণ লক্ষ রাখতে হবে।
* পরিচর্যাকারী স্বাস্থ্যপ্রদ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায় ঘরে প্রবেশ করতে হবে।
* মুরগির ধকল বা পীড়ন সৃষ্টি হয় এমন ব্যবস্থা বা পরিবেশ কখনও তৈরি করা যাবে না।
* খামারে পরস্পর শেডের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত বজায় রেখে শেড নির্মাণ করতে হবে।
* বৎসরে অন্ততঃ ১ বার এবং নতুন পালের হাঁস-মুরগি পরিবর্তনের সময় সমস্ত ঘর, ঘরের সরঞ্জাম যন্ত্রপাতি ইত্যাদি পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করা আবশ্যক।
* ঘরে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রাখা আবশ্যক।
* খামারের অঙ্গিনার মধ্যে পোষা বা বন্য প্রাণিপাখি এবং বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে হবে।
* বিভিন্ন জাত, বয়স ও উপযোগিতা অনুসারে হাঁস-মুরগি সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবস্থায় প্রতিপালন করা উচিত।
* মৃত হাঁস-মুরগি যথাযথ ব্যবস্থায় সৎকার ব্যবস্থা করা দরকার।
* নিয়মিতভাবে প্রতিষেধক টীকা ব্যবহার করা দরকার।
* টীকা প্রদানের নিয়মাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করা প্রয়োজন।
* বাচ্চা এবং বাড়ন্ত বাচ্চা খামারে জন্য ক্রয়ে পরিচিত, বিশ্বস্ত এবং রোগমুক্ত হ্যাচার বা খামার থেকে ক্রয় করা।
* কোন প্রকৃতি জীবানুনাশক ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার পদ্ধতি অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
* হ্যাচারি উপজাতসমূহ অপসারণ করার প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যসম্মতভাবে করতে হবে।
* হাঁস-মুরগির পায়খানা এবং লিটার অপসারণ করার প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যসম্মতভাবে করতে হবে।
* খামারের কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা অবলোকন, পরিদর্শন, অনুসরণ, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করার পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
* খাদ্যের পুষ্টিমান যথাযথ থাকতে হবে।
* খাদ্যের উৎস ও প্রস্তুত পদ্ধতি স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া প্রয়োজন।
* পানির উৎস স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া প্রয়োজন।
টীকা বীজ ব্যবহারের সতর্কতা, টীকা প্রদান কর্মসূচি, টীকা প্রদানের মধ্যমে
আত্মকর্মসংস্থান:
* টীকা ব্যবহারের পর অতিরিক্ত টীকা পুড়িয়ে ফেলতে হবে অথবা জীবানুনাশক দ্বারা নষ্ট করে ফেলতে হবে।
* কেবলমাত্র সুস্থ ও সবল বাচ্চা /মুরগিকে টীকা দিতে হবে।
* টীকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- সিরিঞ্জ, সুঁচ, বিকার ইত্যাদি পানিতে ফুটিয়ে জীবানুমুক্ত করতে হয়। কোন ক্রমেই জীবানুমুক্ত করার জন্য জীবানুনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
* লাইভ ভাইরাস ভ্যাকসিন চোখে ড্রপ দেওয়ার সময় নীচে কাগজ বিছিয়ে নেয়া ভালো। অসাবধানতাবসত টীকা বীজের ফোঁটা কাগজে পড়তে পারে। পরবর্তীতে কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে হয়।
* বাচ্চা সংগ্রহের সময় প্যারেন্ট মুরগির কি কি টীকা প্রদান করতে হয় তা জানতে হবে।
টীকা প্রদান কর্মসূচি:
বয়স রোগের নাম-ভ্যাক্সিনের নাম- টীকার পদ্ধতি
১ দিন মারেক্স রোগ মারেক্স ভ্যাকসিন চামড়ার নীচে ইনজেকশন
২ দিন গামবোরো রোগ গামবোরো ভ্যাকসিন (লাইভ) চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টীকা প্রদান করা না থাকলে )
৩-৫ দিন রানীক্ষেত রোগ বি.সি.আর ডি.ভি. দুই চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টীকা প্রদান করা থাকলে ৭-১০ দিন বয়সে )
৭ দিন ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস আই. বি. চোখে ফোঁটা ১০-১৪ দিন গামবোরো রোগ গামবোরো ভ্যাকসিন এক চোখে ফোঁটা।
২১-২৪ দিন রানীক্ষেত রোগ বি.সি.আর ডি.ভি. দুই চোখে ফোঁটা
২৪-২৮ দিন গামবোরো রোগ গামবোরো ভ্যাকসিন এক চোখে ফোঁটা
৩৫ দিন মুরগির বসন্ত ফাউল পক্স ভ্যাকসিন চামড়ার নীচে সুচ ফুঁটিয়ে
৬০ দিন রানীক্ষেত রোগ বি.সি.আর ডি.ভি. চামড়ার নীচে /মাংসে ইনজেকশন
৮০-৮৫ দিনে কলেরা ফাউলকলেরা ভ্যাকসিন চামড়ার নীচে /মাংসে ইনজেকশন
১১০-১১৫দিন কলেরা ফাউলকলেরা ভ্যাকসিন চামড়ার নীচে /মাংসে ইনজেকশন
১৩০ -১৩৫ দিন ইনফেকসাস ব্রং কাইটিস সমন্বিত টীকা চামড়ার নীচে /মাংসে ইনজেকশন
১৩০-১৩৫দিন কৃমি কৃমিঔষধ খাদ্য /পানির সাথে।
ব্রয়লার মুরগির জন্য মারেক্স, গামবোরো ও রানীক্ষেত রোগের ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হয়। এলাকায়
অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব না থাকলে ভ্যাকসিন ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ
অফিসে যোগাযোগ করা বাঞ্ছনীয়। হাঁস মুরগির রোগ