বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনাম চ্যান্সারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ভিয়েতনামে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচী সূচনা করেন।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল এক অবিস্মরণীয় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি শোষক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে মুক্তিসংগ্রামের যে পথ চলা শুরু হয় তা ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহম্মেদকে প্রধানমন্ত্রী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করে। মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ১৯৭০ এর নির্বাচনে জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকার আত্মপ্রকাশ করে।এই সরকার গঠনের ফলে বিশ্বাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। এ ব্যপারে বাংলাদেশী কূটনীতিকরা এক বিশেষ সাহসী ভূমিকা রাখেন। এমন কি ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ সনে বিদেশের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলিত হয় কলকাতার তৎকালীন পাকিস্তান উপ-হাই কমিশনে বাংলাদেশী ডেপুটি হাই কমিশনার মরহুম হোসেন আলীর নেতৃত্বে ও বাংলাদেশী কূটনীতিকদের সমন্বয়ে।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে ঐতিহাসিক এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ চার জাতীয় নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে । পরিশেষে এ দিনটি সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করার উপর গুরুত্তের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠনে দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং ভিয়েতনামের স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষে এ দিবসটির উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।