Sunday, December 22
Shadow

Stories

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন । মুহম্মদ জাফর ইকবাল

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন । মুহম্মদ জাফর ইকবাল

Cover Story, Stories
শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষকতা জীবন শেষ হতে শুরু করেছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি ২৪টি বছর কাটিয়ে দিয়েছি। ২৪ বছর হচ্ছে দুই যুগ অনেক বড় একটি সময়। এত দীর্ঘ একটা সময় এক জায়গায় থাকলে সেখানে শিকড় গজিয়ে যায়, সেই শিকড় টেনে উপড়াতে কষ্ট হয়, সময় নেয়। আমি সেই সময়সাপেক্ষ কষ্টের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। চিন্তা করলে মনে হয় এই তো মাত্র সেদিনের ঘটনা। প্রথম যখন এসেছি যোগাযোগ করার জন্য টেলিফোন পর্যন্ত নেই, ঢাকায় মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য কার্ডফোন ব্যবহার করার চেষ্টা করি, টেলিফোন কার্ডের টাকা খেয়ে হজম করে ফেলে কিন্তু কথা শুনতে পারি না। বাচ্চাদের স্কুল নেই, যেটা আছে সেখানে নেওয়ার যানবাহন নেই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বেতন যৎসামান্য ভাগ্যিস কয়েকটা বই লিখেছিলাম রয়েলটির টাকা দিয়ে সংসারের খরচ চলে যায়। এরকম ছোটখাটো যন্ত্রণার কোনো শেষ ছিল না কিন্তু যখন পেছনে ফিরে তাকাই তখন পুরো স্মৃতিট...
লিফটে আটকা পড়ার একটি ভয়াবহ ঘটনা : ‍শুভ্রা করের স্ট্যাটাস থেকে

লিফটে আটকা পড়ার একটি ভয়াবহ ঘটনা : ‍শুভ্রা করের স্ট্যাটাস থেকে

Cover Story, Stories
রাত সোয়া ৯টার দিকে আমি, Shikta, ধানমন্ডি ১ এর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে কফি খাওয়ার জন্য সায়েন্স ল্যাব মোড় এর আড়ং এর উপরে ফিফথ ফ্লোরের দুয়ারীতে যাই। সেখানে কফি খেয়ে ১০টার একটু পরে বের হই। আমরা ছাড়া তখন আর দুইজন ছিল ওখানে। আমরা ৫জন একসাথেই বের হয়ে লিফটে উঠি। ফিফথ ফ্লোর থেকে লিফটে উঠার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায় এবং লিফটটি ফোর্থ ফ্লোর ও থার্ড ফ্লোরের মাঝামাঝি এসে বন্ধ হয়ে যায়। লিফট বন্ধ হবার সাথে সাথে আমাদের রিয়েকশন ছিল যে এখনি জেনারেটর ছাড়া হবে এবং লিফট চলতে শুরু করবে। কিন্তু জেনারেটর এর আওয়াজ পাবার পরেও যখন দেখা গেলো লিফট চলছে না তখন আমরা লিফটের ভেতরে স্টিকার লাগানো ইমারজেন্সি সার্ভিসম্যান এর নাম্বারে ফোন দেই। প্রথমজনকে ফোন দেয়ার পর তিনি জানান তিনি এখন ডিউটিতে নেই এবং তৃতীয়জনকে ফোন দিতে বলেন। তৃতীয়জনকে ফোন দেয়ার পর তিনি দেখছি বলে ফোন রেখে দেন। এরপর আড়ং এর নাম্বারে ও ওখান...
গোয়েন্দা গল্প : আশ্চর্য ডিস্ক

গোয়েন্দা গল্প : আশ্চর্য ডিস্ক

Stories
ঘাড় ফিরিয়ে তাকাতে দেখি, নীল যুদ্ধপোশাক পরা কাঠামোটি মঞ্চ থেকে নেমে পড়েছে। এখন হেঁটে আসছে আমাদের দিকে! আবার ঘুরে দৌড় দিতে যাব, দেখলাম আমাদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছে লাল যুদ্ধপোশাক পরা মূর্তি। তারপর কালো আর হলুদ মূর্তিও মঞ্চ থেকে নেমে এসে ঘিরে ফেলল আমাদের। শুধু কি তা-ই, চারপাশ থেকে এগিয়ে আসছে ইঁদুরবাহিনী। একটা ইঁদুর আমার জুতোর ওপর ওঠার চেষ্টা করছে কম্পিউটারে সাপ-লুডু খেলছি আর মাঝেমধ্যে ঘড়ির ওপর চোখ বুলাচ্ছি। অতুল বোধ হয় ভুলে গেছে আনকোরা নতুন একটা গেইম নিয়ে এখানে তার আসার কথা। কিংবা বরাবরের মতো, খামাখা দেরি করছে সে। ভাবছি ফোন করব, এই সময় মায়ের গলা শুনতে পেলাম, ‘শোভন, অতুল এসেছে।’ এক সেকেন্ড পর ঝড়ের বেগে আমার শোয়ার ঘরে ঢুকে পড়ল সে, শরীরে মোচড় খাওয়ার মতো ঢেউ তুলে পিঠ থেকে ব্যাকপ্যাকটা নামাল। ‘এটা এখুনি একবার চালিয়ে দেখ’, বলে প্যাক থেকে একটা প্যাকেজ বের করল। ‘অন্ধকার জগতের প্রভু’, প্রচ্ছদের লেখাট...
চার্লস ডিকেন্স কাজ করতেন জুতা পলিশ করার রঙের কারখানায়

চার্লস ডিকেন্স কাজ করতেন জুতা পলিশ করার রঙের কারখানায়

Stories
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কাজ করতেন রুটির দোকানে। আর চার্লস ডিকেন্স কাজ করতেন জুতা পলিশ করার রঙের কারখানায়। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১২ বছর। ১৮১২ সালের ৭ ফেব্র“য়ারি। ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ শহরের পোর্টসির ল্যান্ডপোর্টে জš§ তাঁর। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। মা এলিজাবেথ ডিকেন্স আর বাবা জন ডিকেন্স। চার্লসের জšে§র কিছুদিন পরই ব্ল–মসবারির নরফোক স্ট্রিটে চলে আসে পরিবারটি। অল্প কিছুদিন পর কেন্টের চাতামে আস্তানা গাড়ে ডিকেন্স পরিবার। চার্লসের শৈশব কাটে এখানেই। এখানকার উইলিয়াম গিলস স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়াও করেন। ১৮২২ সালে হঠাৎ করেই কেন্টের ক্যামডেন শহরে চলে যায় পরিবারটি। বাবা ছিলেন নৌ বিভাগের কেরানি। অভাব-অনটন লেগেই থাকত। অভাবের কারণে প্রচুর দেনা হয়ে যায় বাবা জনের। দেনার দায়ে ১৮২৪ সালে যেতে হয় জেলে। বন্দি হন মার্শালসি জেলখানায়। স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় চার্লসকে। কাজ নিতে হয় হাঙ্গার...
চীনের হারবিন শহরে স্ফটিক ভাস্কর্য উৎসব

চীনের হারবিন শহরে স্ফটিক ভাস্কর্য উৎসব

Stories, Travel Destinations
শীতের দেশগুলো প্রকৃতির অনেক সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত। ওখানে আমাদের দেশের মতো দিগন্তজোড়া সবুজ নেই। বছরজুড়ে ছয় ঋতুতে তেরো পার্বণের বান ডাকে না সেসব দেশে। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানের এই সীমাবদ্ধতা তারা কাজে লাগায় অন্যভাবে। তুষারঝরা মৌসুমে যখন পথঘাট সব সাদা হয়ে যায়, তখন তারা বাইরে বের হয়ে মেতে ওঠে উৎসবে। খেলাধুলার পাশাপাশি বরফ দিয়েই তৈরি করে নানা রকম ভাস্কর্য। কোথাও কোথাও বরফের মূর্তি বানানোর প্রতিযোগিতাও হয়। তেমনই বড় চারটি প্রতিযোগিতার কথা জানাচ্ছেন জুবায়ের হোসেন বিশাল রাজপ্রাসাদটার সামনের চত্বরে দাঁড়িয়ে আছে একটি এক্কাগাড়ি। সামনে দুটি তেজি সাদা ঘোড়া জুড়ে দেওয়া। মনে হচ্ছে শপাৎ করে চাবুক পড়ামাত্র চিহি ডেকে ঘোড়া দুটি দৌড়াতে আরম্ভ করবে। ভালো করে তাকালে বোঝা যায়, ওগুলো আসল নয়। কোনো শিল্পী পরম যতেœ তৈরি করেছেন অপূর্ব এক ভাস্কর্য। তবে এই ভাস্কর্যের গায়ে হাত রাখলে জমে যাওয়ার ভয় আছে। কারণ সেগুলো যে বরফে ত...
প্রোফেসর শঙ্কু যুগ যুগ জিও

প্রোফেসর শঙ্কু যুগ যুগ জিও

Stories
৫০ বছর ধরে দেখতে একই রকম আছে লোকটা। সত্যজিৎ রায় ১৯৬১ সালে তৈরি করেছিলেন চরিত্রটি। ছাপা হয়েছিল সন্দেশ পত্রিকায়। টাক মাথার গোলচোখের লোকটির নাম প্রোপেসর শঙ্কু। চীনা জাদুকর চী-চিং প্রোফেসর শঙ্কুর ল্যাবরেটরিতে ঘুরে যাওয়ার পরই ঘটতে শুরু করল আজব সব ঘটনা। এক সকালে শঙ্কু অবাক হয়ে দেখলেন, তাঁর এসিডের একটি বোতল অর্ধেক খালি। অথচ গত রাতেও গোটা বোতলটাই এসিডে ভরপুর ছিল। এদিকে, গবেষণাগারে দীর্ঘদিন ধরে বসতি গাড়া টিকটিকিটার আকার যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করেই, সেই সঙ্গে বদলেছে চেহারাও। চোখের মণি হলদে হয়ে গেছে ওটার। সারা গায়ে লাল লাল চাকা। তারপর শঙ্কুর চোখের সামনেই টিকটিকিটা লাফ দিয়ে নেমে এসে এসিডের বোতল থেকে এসিড খেতে লাগল। এভাবে দেখতে দেখতে দুটো বোতল খালি করে ফেলল ওটা। আর পরিণত হলো তিন হাত লম্বা চীনা উপকথার এক ড্রাগনে। শঙ্কু তাঁর ভয়ঙ্কর অস্ত্র ইলেক্ট্রিক পিস্তলের শকেও কিছু করতে পারলেন না ড্রাগনটার। উল্টো ওটার ...
কেন সুন্দরী প্রতিযোগিতার পক্ষে, কেনই বা বিপক্ষে : তসলিমা নাসরিন

কেন সুন্দরী প্রতিযোগিতার পক্ষে, কেনই বা বিপক্ষে : তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
বাংলাদেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতা চলছে। এই সুন্দরী প্রতিযোগিতার ব্যাপারটি আমাকে বরাবরই খুব বিচলিত করে। একবার আমি মেয়েদের পণ্য করার বিরুদ্ধে ভীষণ রাগ করি, আরেকবার মেয়েদের বোরখা আর হিজাবের মধ্যে বন্দি করার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতার পক্ষে দাঁড়াই। সুন্দরী প্রতিযোগিতা নিয়ে আমার পুরোনো মন্তব্যকে যদি খ-ন করি নিজেই, কী ভাবে করবো এ নিয়ে ভাবছি। আবার এও ভাবছি, আজ যে যুক্তি দিচ্ছি, সেই যুক্তির বিরুদ্ধেও যদি দাঁড়াই, কীভাবে দাঁড়াবো। বেশ অনেক বছর আগে আমি বলেছি : ‘সহস্র প্রসাধন সামগ্রী আজ বাজারে কেন? কাদের ব্যবহারের জন্য? এর উত্তর আমরা সবাই জানি। মেয়েদের। আমার প্রশ্ন, কেন মেয়েদের এসব ব্যবহার করতে হবে? কেন মেয়েদের আসল চেহারাকে আড়াল করতে হবে নানান রঙ দিয়ে? কেন বানাতে হবে নকল একটি মুখ? নকল চোখ, নকল ঠোঁট, নকল গাল? এই প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করে মেয়েরা, কারণ নিজেদের সত্যিকার চেহারা নিয়ে তারা হীনমন্যতায় ভোগে।...
কেন সবকিছু ভূ্লে প্রবাসে পড়ে থাকি?

কেন সবকিছু ভূ্লে প্রবাসে পড়ে থাকি?

Stories
প্রবাসী জীবনের সুখ দুঃখের কথা লিখতে গেলেই মনটা কষ্টে ভরে উঠে, কলম যেন থেমে যেতে চায়।বুকের মধ্যখানে অজানা এক শুন্যতা আসন করে বসে, পুরনো স্মৃতির খাতার প্রতিটি পাতা নতুন করে চোখের সামনে ভেসে উঠে নিজের অজান্তে চোখ থেকে অনাখাংখিত কিছু জল ঝরে পড়ে। নিজেকে বড় একা মনে হয়, পাওয়া আর না পাওয়ার হিসেব মিলাতে পারি না।অবহেলা আর অনাদরের এই প্রবাসী জ়ীবনের ইতিবৃত্ত জানি না কোথা থেকে শুরু করবো। চেষ্টা করবো আমাদের যন্ত্রনা গুলো সবার সাথে ভাগাভাগী করে নিতে, জানি সম্ভব নয় তবুও চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কি। স্ব্প্নে্র প্রবাস বাস্তবে বিশাল আকারের এক দানব বললে ভূ্ল বলা হবে না। প্রবাস নামক দানবের কাহিনী লিখতে বসেছি তাই কিছু ভয় কিছু কস্ট আমাকে পিছনে আকড়ে ধরেছে। আজ আমি সব কিছু উপেক্ষা করে পাঠকের সামনে প্রবাস জীবনের যন্ত্রনা তুলে ধরার আপ্রান চেষ্টা করবো, যা অনেকের কাছে নতুন এবং অবিশ্বাস্য বলে মনে হতে পারে। আমি যা ল...
সুন্দরী হওয়ার জন্য মেয়েদেরকে লেলিয়ে দেয়া সবচেয়ে বড় নির্যাতন : তসলিমা নাসরিন

সুন্দরী হওয়ার জন্য মেয়েদেরকে লেলিয়ে দেয়া সবচেয়ে বড় নির্যাতন : তসলিমা নাসরিন

Stories
ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, জগতে যত নির্যাতন আছে মেয়েদের বিরুদ্ধে, সবচেয়ে বড় নির্যাতন হল- মেয়েদের সুন্দরী হওয়ার জন্য লেলিয়ে দেয়া। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন। পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল- ‘মেয়েদের শরীরের জন্য বিশ্ব ব্যতিব্যস্ত। তাদের পোশাক ও অলঙ্কারের অন্ত নেই। চারদিকে সাজ সাজ রব। শরীর সাজাও। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি সাজাও। এটা পরো, ওটা মাখো। ফুটফুটে ঝলমলে চকচকে রাখো সর্বাঙ্গ। কিন্তু কেন? কার জন্য? মেয়েরা কি একবারও ভাবে- কার জন্য? কাকে তৃপ্ত ও তুষ্ট করার জন্য? অনেক মেয়েই জোর দিয়ে বলতে চেষ্টা করবে যে, নিজেদের জন্যই তারা সাজে, নিজের ভালো লাগাই মূল কথা। বটে। ও রকম মনে হয়। কিন্তু ভালো লাগা ও না লাগার উদ্রেক হওয়ার পেছনে দীর্ঘকালের শিক্ষা থাকে, তা কে অস্বীকার করবে? কে অস্বীকার...
কেন বেশির ভাগ মেয়েই পরমানন্দে মেনে নেয় নারী পুরুষের বিকট বৈষম্য! : তসলিমা নাসরিন

কেন বেশির ভাগ মেয়েই পরমানন্দে মেনে নেয় নারী পুরুষের বিকট বৈষম্য! : তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
মেয়েদের শরীরের জন্য বিশ্ব ব্যতিব্যস্ত। তাদের পোশাক এবং অলঙ্কারের অন্ত নেই। চারদিকে সাজ সাজ রব। শরীর সাজাও। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি সাজাও। এটা পরো। ওটা মাখো। ফুটফুটে ঝলমলে চকচকে রাখো সর্বাঙ্গ। কিন্তু, কেন? কার জন্য? মেয়েরা কি একবারও ভাবে, কার জন্য? কাকে তৃপ্ত এবং তুষ্ট করার জন্য? অনেক মেয়েই জোর দিয়ে বলতে চেষ্টা করবে যে, নিজেদের জন্যই তারা সাজে, নিজের ভালো লাগাই মূল কথা। বটে। ওরকম মনে হয়। কিন্তু, ভালো লাগা এবং না লাগার উদ্রেক হওয়ার পিছনে দীর্ঘকালের শিক্ষা থাকে, তা কে অস্বীকার করবে? কে অস্বীকার করবে নারীকে সাজসজ্জা করানোর ইতিহাস? আগে বলেছিঃ পটলচেরা চোখ, ফুলের মতো হাসি, কালো মেঘের মতো চুল, পীনোন্নত বুক, সুডোল বাহু—মেয়েদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে এরকম লক্ষ উপমা এবং চিত্রকল্পের ব্যবহারই প্রমাণ করে যে মেয়েদের শরীরই শেষ পর্যন্ত সব। ছেলেটি ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার অথবা ব্যবসায়ী অথবা লেখক অথবা শি...
জানাজার নামাজে মেয়েরা কেন যায় না?  তসলিমা নাসরিন

জানাজার নামাজে মেয়েরা কেন যায় না? তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
আমার মা’র অসুখের সময় সারাক্ষণ পাশে ছিলাম আমি আর আমার নানি। আমরা দু’জনই দিন রাত  মা’র যত্ন করেছি। পাশে অন্য কেউ আসেনি তেমন। বাড়ির পুরুষেরা ব্যস্ত ছিল নিজেদের নিয়ে। কিন্তু মা মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা’র মৃতদেহটি নিয়ে কী কী করতে হবে, তার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল পুরুষেরা। মা’কে খাটিয়ায় শুইয়ে নিয়ে গেলো জানাজায়, কবরস্থানে। আমি যেতে চাইলাম সঙ্গে, আমাকে বলা হলো, না জানাজায়- না কবরস্থানে— কোথাও মেয়েদের যাওয়ার অনুমতি নেই। পুরুষেরা মোটামুটি যা বললো, তা হলো, আমি আমার মা’র সন্তান হতে পারি, কিন্তু জানাজায় আমার মায়ের লাশের সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার কোনও অধিকার নেই, জানাজা পড়ার কোনও অধিকার আমার নেই, মায়ের কবরে মাটি দেওয়ার অধিকার নেই, কবরস্থানে ঢোকার অধিকারই নেই। কেন নেই? নেই, কারণ আমি মেয়ে। ইসলাম ধর্ম মেয়েদের বারণ করেছে জানাজায় বা কবরস্থানে যেতে। বাংলাদেশে কোনও জানাজার নামাজে কোনও মেয়ের উপস্থিতি নেই। কিন্তু পাকিস্ত...
ধর্ষণ কি সংক্রামক? : তসলিমা নাসরিন

ধর্ষণ কি সংক্রামক? : তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
মানুষ শেখে। জন্ম থেকে শিখতে শুরু করে, মৃত্যু অবধি শেখে। কোথাও কেউ আত্মহত্যা করলে আশেপাশে অনেকেই আত্মহত্যা করে বসে। পরীক্ষার খারাপ ফলের কারণে একজন ছাত্র আত্মহত্যা করলে দেখা যায় আরও কয়েকজন একই কারণে আত্মহত্যা করে। জাপানের ফুজি পাহাড়ের তলায় ওকিগাহারা অরণ্যে কবে কে আত্মহত্যা করেছিল, তারপর থেকে আজও ওই অরণ্যে মানুষ যায় আত্মহত্যা করতে। প্রতিবছর বারো হাজার ভারতের কৃষক আত্মহত্যা করছে। সেই ১৯৯৫ থেকে শুরু। এখনও চলছে। শুধু আত্মহত্যা নয়, সন্ত্রাসী সব কাণ্ডও সংক্রামক। মানুষের ভিড়ের মধ্যে এক সন্ত্রাসী ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল ফ্রান্সের নিস শহরে, এরপর একই পদ্ধতিতে শুরু হয়ে গেলো অন্য শহরেও সন্ত্রাসী আক্রমণ। বার্লিনে, লন্ডনে, স্টকহোমে, বারসেলোনা, ভার্জিনিয়ায়। ধর্ষণও কি শেখে? প্রায় প্রতিদিন ধর্ষণ করছে পুরুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধা কাউকে বাদ দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে জাকিয়া সুলতানা রূপাকে চলন্ত বাসের মধ্যে গণধর্ষণ করার...
‘‌নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি গান্ধী’ তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস থেকে

‘‌নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি গান্ধী’ তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস থেকে

Cover Story, Stories
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে মহাত্মা কেন বলা হয় আমি জানি না। মহাত্মা মানে মহান আত্মা। প্রথমত আত্মা বলে কিছু নেই। দ্বিতীয়ত আত্মা বলতে যা-ই বোঝানো হয়ে থাকুক, সেটি গান্ধীর বেলায় মহান নয়। তাঁর গুণের কথা আমরা আশি নব্বই বছর ধরে শুনছি। কিন্তু তাঁর দোষের কথা অতটা শুনিনা অথবা মোটেও শুনিনা। তিনি যে বউ পেটাতেন, বেশ্যালয়ে যেতেন, সতেরো -আঠারো বছর বয়সী মেয়েদের ন্যাংটো করিয়ে , নিজেও ন্যাংটো হয়ে এক বিছানায় ঘুমোতেন-- একদিন দুদিন নয়, বছরের পর বছর -- তাঁর এসব দোষ জেনেবুঝেই আড়াল করা হয়। মনুবেন তাঁর ডায়রিতে লিখেছেন কীভাবে তাঁকে ন্যাংটো করানো হতো যখন তিনি ন্যাংটো গান্ধীকে বাথটাবে স্নান করাতেন। কচি কচি উলঙ্গ মেয়ের সঙ্গে রাত কাটিয়ে কী নাকি ব্রহ্মচর্য পরীক্ষা করতেন গান্ধী। নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি। গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেস নেতারা নিরুদ্দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মনুবেন আর আভাবেনকে, জীবনের শেষ দিনেও ক্রাচ হিসেবে গান্ধী যাঁদ...
প্রাপ্তবয়স্কদের মনোদৈহিক গল্প : আলাপ

প্রাপ্তবয়স্কদের মনোদৈহিক গল্প : আলাপ

Cover Story, Stories
‘তোমরা বান্ধবীরা মিলে কোথাও ঘুরতেও তো যেতে পারো। চাকরি থেকে ছুটি নাও কদিনের।’ জানালার কপাট খুলে গোলগাল চাঁদটাকে দেখতে দেখতে বলল সুজন। রেনু চোখ বুঁজে আছে। ‘তোমার কারণেই তো যেতে পারি না।’ মৃদু অনুযোগ। তবে ভিত্তিহীন। ‘তোমার বান্ধবীরা তো বেশ ঘুরছে। একজন আছে না, কী যেন নাম তার।’ ‘মিথিলার কথা বলছো?’ ‘হুম।’ ‘ও তো দুর্ধর্ষ। পাহাড়পর্বতে চড়ে বেড়ায়। টাকার অভাব নেই।’ চাঁদের আলো মুখে মেখে নিচ্ছে সুজন। নড়ে উঠল রেনু। কাটিয়ে নিল আড়ষ্টতা। ‘হুমম। এ জন্যই এমন ফিগার ধরে রাখতে পেরেছে। তুমিও ওর সঙ্গে পাহাড়ে চড়তে শুরু করে দাও না কেন।’ ‘কেন? শায়লার ফিগার কি খারাপ নাকি! ও তো পাহাড়ের ধারে কাছেও যায় না।’ ‘খোঁজ নিয়ে দেখো, ঠিকই ইয়োগা করছে।’ বলতে বলতেই রেনুর আঙুলের ফাঁকে নিজের আঙুলগুলোর জায়গা করে নিল সুজন। আজকের চাঁদটা বেশ বড়। আকাশটাও বারবার ফুলেফেঁপে উঠছে, চাঁদের খাতিরে। ‘হুম। করতে পারে, তোমার ওই বন্ধুটার...
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : নব্বই মিনিট

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : নব্বই মিনিট

Stories
চলমান বর্ষা ও ফুটবলের মৌসুমে সারা দিনে একবার করে হলেও যে কথাটা সোহাগ দেওয়ান মনে মনে আওড়ায় সেটা হলো- আমাদের জীবনে ফুটবল খেলাটা একটা চক্রের মতো, চক্র গোল, বলও গোল, আর বল খেলাটাও শুরু হয় মধ্য রাতে, মানুষে মানুষে খেলা, আরে খেলাই তো! এরপর চিন্তাটা খেই হারিয়ে ফেলতে শুরু করলে সোহাগ দেওয়ান মনস্থির করে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে তার ২০ বছর আগের গল্পটা আবার নতুন করে বলার সময় হয়েছে, কারণ গত বিশ্বকাপের সময় গল্পটার বলার মতো ফুরসৎ তার হাতে ছিল না, আর এবারের মৌসুমে যে সকল নতুন বন্ধু যোগ হয়েছে, তারা আসলে বেশিরভাগই কলিগ এবং তাদের হাতে এ ধরনের গল্প শোনার মতো যথেষ্ট অবসর থাকে, ‘চুরানব্বইর বিশ্বকাপের পর আমার কাছে ফুটবল জিনিসটাই একেবারে অন্যরকম লাগে। ফুটবল আসলে একটা খেলা না, এইটার একটা হিসাব আছে, লেজার ব্যালেন্সের মতো দুই সাইডে মিল থাকতে হয়, নইলে নব্বই মিনিট কাটবে কেমনে?' সোহাগ দেওয়ান চেষ্টা করে গল্পে সাসপেন্স তৈরি ক...

Please disable your adblocker or whitelist this site!