বই পড়ায় চীনের জেন-জির নতুন ধারা - Mati News
Friday, December 5

বই পড়ায় চীনের জেন-জির নতুন ধারা

বেইজিংয়ের ভিড়ভাট্টার মেট্রোতে দাঁড়িয়ে ইয়ারফোন কানে দিয়ে লি চিনিং শুনছেন জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন ‘থ্রি-বডি প্রবলেম’–এর অডিওবুক। দরজা বন্ধের শব্দ আর যাত্রীদের কথোপকথন মিলিয়ে গিয়ে তিনি হারিয়ে যান এক ভিন্ন জগতে।

চীনের ১৯৯৫ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া ডিজিটাল প্রজন্ম—ওরফে জেন-জি এখন কাগজের বদলে স্ক্রিন আর অডিওতে গল্প পড়ছে। প্রায় এক-পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা গঠিত এই প্রজন্ম ই-বুক ও অডিওবুককে প্রাধান্য দিচ্ছে, শেয়ার করছে বইয়ের রিভিউ, অনুসরণ করছে ‘বুক ব্লগার’, এমনকি খুঁজে নিচ্ছে ‘রিডিং বাডি’।

কিছু তরুণ পাঠক একই রকমের ‘পড়ার বন্ধু’ খোঁজেন। কলেজ ছাত্র চিয়াও চিয়াওর মতে, এমন বন্ধুর সঙ্গে পড়া কেবল সময়সূচি ঠিক রাখতেই সাহায্য করে না এবং সময়মতো বই শেষ করতে উৎসাহিত করে। নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং জ্ঞানও দেয়। এতে করে চিন্তাভাবনার সীমারেখা পার হওয়া যায়। উইচ্যাট রিডিং প্ল্যাটফর্মে, ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট বাক্য হাইলাইট করে এবং মন্তব্য করে অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

‘আপনি একটি বই বা একটি নির্দিষ্ট বাক্য পড়ার সময় আপনার চিন্তাভাবনা রেকর্ড করতে পারেন। যখন আপনি বইয়ের কিছু বুঝতে পারেন না, তখন আপনি অন্যরা কী ভাবছেন তা দেখতে পারেন।’ বললেন আরেক পাঠক চেন ওয়েনথিং।

উইচ্যাট রিডিং–এর তথ্য অনুযায়ী, মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর ৪৬ শতাংশই জেন-জি, আর তারা প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টা ব্যয় করছে আইরিডার-এর মতো প্ল্যাটফর্মে। চায়নিজ একাডেমি অফ প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন জানাচ্ছে, গত বছর সাড়ে ৩৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কও অডিওবুক শুনেছেন।

ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলোও বই পড়ার ধরন বদলে দিচ্ছে। বিখ্যাত উপন্যাস ‘হোয়াইট ডিয়ার প্লেইন’–এর ব্যাখ্যামূলক ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ২ কোটি ভিউ ছাড়িয়েছে। ২০২৪ সালে তৌইনে পাঁচ মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের রিডিং ভিডিও ৩৩৬ শতাংশ বেড়েছে, ভিউ বেড়েছে ১৩৭ শতাংশ।

কলেজপড়ুয়া চেং নান বলেন, ‘কিছু ক্লাসিক বই পড়ার সাহস পাই না, কিন্তু ব্যাখ্যামূলক ভিডিওগুলো এত সুন্দরভাবে বানানো যে পড়তে মন চায়।’

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোও ডিজিটাল প্রবণতায় মানিয়ে নিচ্ছে—বিগ ডেটা দিয়ে পাঠক টার্গেট করছে, লাইভস্ট্রিমিংয়ে বই প্রকাশ করছে। চায়না পাবলিশিং গ্রুপ–এর চেয়ারম্যান হুয়াং চিচিয়ান বলেন, ‘প্রকাশনার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া, যা শুধু মুদ্রিত বইয়ে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।’

সূত্র: সিএমজি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *